স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সীমান্তে ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক দুই নারী ও যুবককে নির্যাতন করেছে বখাটেরা। এ ঘটনায় শনিবার (১১.০৮.২০১৮) তাহিরপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের হলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। ন্তক্ষুদ্র নৃতাত্তিক গোষ্ঠীর দুইজনকে মারধরের ঘটনায় উত্তেজনা বিরাজ করছে পল্লীতে। এদিকে দুটি ঘটনায় নির্যাতনকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করায় তাদের উল্টো হুমকি ধমকি দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাছাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেও এখনো মামলা নেয়নি পুলিশ।
তাহিরপুর থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ থেকে জানা যায়, গত ৮ আগস্ট উত্তর বড়দল ইউনিয়নের সীমান্ত গ্রাম রাজাইয়ের গৃহিনী গৃহলা হাজংয়ের কাছে টাকা পাওনাকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে চানপুর বাজারের রাস্তায় ফেলে মারধর করে একই গ্রামের আব্দুস সত্তারের ছেলে বখাটে জাকির হোসেন। এসময় স্থানীয়রা ওই নারীর চিৎকারে এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন। গত ৯ আগস্ট বিশ্ব আদিবাসী দিবস উপলক্ষে কড়ইগড়া পানি ব্যবস্থাপনা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত আলোচনাসভায় এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। তারা জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানান। গত শুক্রবার রাতে নির্যাতিতা গৃহলা হাজং তাহিরপুর থানায় জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাহিরপুর থানার এসআই মুহিত মিয়া শনিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে এখন পর্যন্ত মামলা নেয়নি পুলিশ।
এদিকে একই দিন রাতে একই গ্রামের রনজয় হাজংয়ের ছেলে ছিটন হাজংকে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে রাস্তায় ফেলে বেধড়ক মারধর করে গ্রামের তিন যুবক। এ ঘটনায় ছিটন হাজংয়ের মা ছন্দা রাণী হাজং শনিবার সকালে গ্রামের সাদ্দাম হোসেন, নজির হোসেন ও সাইদুল হোসেনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাহিরপু থানার বাদাঘাট পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই মো. আমির উদ্দিন ও থানার এএসআই আবু মুসা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। নীরিহ আদিবাসীদের নির্যাতনের ঘটনায় আদিবাসী পল্লীর বাসিন্দারা নিরাপত্তাহীনতায় আছেন। তারা দোষীদের বিচার দাবি করেছেন।
নির্যাতিত নারী গৃহলা হাজং জানান, পাওনা ৫০০ টাকা দিতে না পারায় বাজারের রাস্তায় ফেলে তাকে প্রকাশ্যে পিটিয়েছে জাকির হোসেন। এর আগেও সে এই এলাকার আদিবাসী নারী-পুরুষকে নির্যাতন করেছে। এখন থানায় অভিযোগ করায় উল্টো হুমকি ধমকি দিচ্ছে বলে জানান তিনি।
অপর নির্যাতিত যুবক ছিটন হাজংয়ের মাতা ছন্দা রাণী হাজং বলেন, আমার ছেলেকে রাতে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে তিন বাঙ্গালি যুবক খুব বেশি মারধর করেছে। আমরা তাকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দিয়েছি। আমি শনিবার থানায় অভিযোগ দায়েরের পর আমার পরিবারকে হুমকি ধমকি দিচ্ছে তারা। আমরা আদিবাসীরা এখন নিরাপত্তার অভাবে আছি।
নির্যাতিত পরিবারের লোকজন জানান, তুচ্চ বিষয় নিয়ে পুলিশ যখন তখন মামলা গ্রহণ করে। কিন্তু আমাদের প্রকাশ্যে মারধর ও শ্লীলতাহানী করলেও লিখিত অভিযোগ দায়েরের পরও মামলা গ্রহণ করেনি।
তাহিরপুর থানার ওসি নন্দন কান্তি ধর বলেন, দুটো ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর শনিবার সকালে সরেজমিন তদন্ত করে এসেছেন পুলিশ কর্মকর্তা। তবে স্থানীয়রা আপসের চেষ্টা করায় মামলা নেওয়া হয়নি।