মধ্যনগর প্রতিনিধি ::
সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার বাকাতলা গ্রামের একটি সড়কের পাশে বালুর স্তূপের ওপর থেকে এক নবজাতক কন্যা শিশুকে কুড়িয়ে পাওয়া গেছে। গত বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) বিকেল চারটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। শিশুটিকে বর্তমানে তত্ত্বাবধান করছেন বাঙালভিটা গ্রামের বাসিন্দা পল্লী চিকিৎসক মোস্তফা কামালের স্ত্রী হাসিনা বেগম (৩৭)।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, বাকাতলা ও বাঙালভিটা দুটি গ্রাম পাশাপাশি অবস্থিত। ঘটনার সময় পেছনের একটি পাকা সড়কের পাশে বালুর স্তূপের ওপর কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় কান্নার শব্দ শুনে স্থানীয়রা নবজাতকটিকে দেখতে পান। প্রথমে একজন বৃদ্ধা শিশুটিকে কোলে নেন, তবে কিছু সময় পর আবার রেখে যান। পরে মাতৃত্বের টানে হাসিনা বেগম নবজাতকটিকে কোলে তুলে নিয়ে দুধ পান করালে শিশুটির কান্না থেমে যায়। স্থানীয়দের সঙ্গে পরামর্শ করে তিনি শিশুটিকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান এবং বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানানো হয়।
পরদিন শুক্রবার বিকেল তিনটার দিকে পাশের তাহিরপুর উপজেলার ২৫ বছর বয়সী এক নারী এসে শিশুটিকে নিজের সন্তান বলে দাবি করেন। তবে ইউএনও’র অনুমতি ছাড়া শিশুকে হস্তান্তর করা সম্ভব নয় জানিয়ে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
পল্লী চিকিৎসক মোস্তফা কামাল ও তাঁর স্ত্রী হাসিনা বেগম বলেন, “আমরা শিশুটিকে নিজের সন্তানের মতো করে লালন-পালন করছি। সমাজসেবা অফিস ও ইউএনও স্যারের নির্দেশে থানায় জিডি করে শিশুটিকে সিলেটের ছোটমণি নিবাসে পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
মধ্যনগর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা তৌফিক আহমেদ বলেন, “শিশুটির মা-বাবার পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শিশুটিকে সঠিক প্রক্রিয়ায় সিলেটের বাগবাড়িতে অবস্থিত ছোটমণি নিবাসে হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
মধ্যনগরের ইউএনও উজ্জ্বল রায় জানান, নবজাতক কন্যা শিশুর বিষয়ে প্রশাসন ও সমাজসেবা বিভাগ যৌথভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শিশুটির পিতা-মাতার কোনো নির্ভরযোগ্য পরিচয় পাওয়া না যাওয়ায়, শিশুটিকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ছোটমণি নিবাসে পাঠানো হবে।