ডেস্ক রিপোর্ট::
‘আমাদের পরাবাস্তব টাউনের দিনরাত্রি’ উপন্যাসের জন্য ২০২৩ সালের বার ব্র্যাক—সমকাল সাহিত্য পুরস্কার অর্জন করেছেন প্রখ্যাত শিল্পী ও লেখক ধ্রুব এষ। বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট লেখকদের সম্মানিত ও অনুপ্রাণিত করতে ২০১১ সালে এই পুরস্কারের সূচনা করে সমকাল ও ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেড।
বাংলাদেশের প্রচ্ছদশিল্পে ধ্রুব এষ একটি অপ্রতিদ্বন্দ্বী নাম। তবে তিনি কেবল প্রচ্ছদশিল্পী নন, সাহিত্যের জগতেও তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য। বিশেষ করে শিশু-কিশোর সাহিত্যে তাঁর কাজ বিস্ময়কর। ২০২২ সালে এই ধারাবাহিক অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি লাভ করেন বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার।
১৯৬৭ সালের ১৭ জানুয়ারি সুনামগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন ধ্রুব এষ। পিতা ভূপতি রঞ্জন এষ ও মাতা লীলা এষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে তিনি উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। একজন দক্ষ চিত্রশিল্পী হিসেবে খ্যাতি অর্জনের পাশাপাশি তিনি কবিতা ও গল্পও লিখে থাকেন।
১৯৮৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নকালেই তিনি মোস্তাক আহমেদের একটি কাব্যগ্রন্থের প্রচ্ছদ অঙ্কনের মধ্য দিয়ে পেশাগত জীবনে প্রবেশ করেন। প্রথমদিকে ইমদাদুল হক মিলনের বইয়ের প্রচ্ছদ তৈরি করলেও পরে তাঁর সৃজনশীলতা নজর কাড়ে হুমায়ূন আহমেদের। ধ্রুব এষ তাঁর অধিকাংশ গ্রন্থের প্রচ্ছদশিল্পী হয়ে ওঠেন। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ‘দ্য ডেইলি স্টার’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, তিনি প্রায় ২৫ হাজার বইয়ের প্রচ্ছদ করেছেন। তার মতে, হুমায়ূন আহমেদই তাঁকে প্রচ্ছদশিল্পে স্বাধীনতা দিয়েছিলেন, যার ফলে তিনি শিল্পশৈলীতে নতুনত্ব আনতে পেরেছেন।
বর্তমানে তিনি সেবা প্রকাশনীর ‘রহস্য পত্রিকা’-তে শিল্প সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন।
সাহিত্যকর্ম:
ধ্রুব এষের সাহিত্যকর্মের পরিসর বিস্তৃত। তাঁর উল্লেখযোগ্য রচনার মধ্যে রয়েছে:
শিশুসাহিত্য: সুপারি পাতার গাড়ি (২০০০), সূর্য মামার বাচ্চাদের গল্প (২০০১), ঠিক দুক্কুর বেলা (২০০৪), ভূতপুর (২০০৭), রাফখাতা (২০০৯), আরেক নীশিতা (২০১০), মেঘ উড়ে যায়, কেখায়?, ফড়িংবিবি, ভূতুরে, মায়াবতীর রূপকথা, মন খারাপ গল্প ইত্যাদি।
উপন্যাস: বাম হাতে ছয় আঙুল (২০১৩), অসকাল (২০১৩)
বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনি ও সম্পাদনা: কয়েকজন ই.টি., সেরা সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় (সম্পাদনা), সুকুমার রচনাবলী—২, উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী রচনাবলী।
বার ব্র্যাক—সমকাল সাহিত্য পুরস্কার পূর্বে যাঁরা পেয়েছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন ড. আনিসুজ্জামান, সৈয়দ শামসুল হক, নির্মলেন্দু গুণ, সৈয়দ মনজুরুল ইসলামসহ অনেকে। তবে কোভিড-১৯ পরিস্থিতির কারণে ২০১৯ ও ২০২০ সালের পুরস্কার ২০২১ সালের জানুয়ারিতে একসঙ্গে দেওয়া হয়।