স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির কার্যক্রম বিগত ১১ মাস ধরে সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর চেম্বারের সভাপতি ও শীর্ষ কর্মকর্তারা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ায় চেম্বার ভবনের দরজায় তালা পড়ে। শহরের উকিলপাড়ায় অবস্থিত চারতলা চেম্বার ভবন থেকে আয়ও বন্ধ হয়ে গেছে।
এই অচলাবস্থায় জেলার প্রায় এক হাজার আমদানিকারক পড়েছেন চরম দুশ্চিন্তায়। তারা আশঙ্কা করছেন, আগামী জুলাই থেকে আইআরসি নবায়ন ও এলসি ইস্যু করতে না পারলে আমদানি কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হবে।
চেম্বারের বিরুদ্ধে ২০১২ সাল থেকেই বিভিন্ন অনিয়ম, দলীয়করণ ও আর্থিক দুর্ব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে। ওই সময় বিএনপি-ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দাখিল করলে হাইকোর্টে মামলা ও পরে সুপ্রিম কোর্টে আপিল পর্যন্ত গড়ায়। এ সময়টায় আওয়ামী লীগ-ঘনিষ্ঠ নেতৃত্ব চেম্বার পরিচালনা করে, যাদের বিরুদ্ধে ‘পারিবারিক সিন্ডিকেট’ চালানোর অভিযোগও আছে।
৫ আগস্টের ঘটনার পর চেম্বার ভবনে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ১৯ নভেম্বর বিএনপি নেতা আবু সাঈদ মো. খালিদ প্রশাসক নিয়োগের দাবি জানিয়ে মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১৩ ফেব্রুয়ারি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সমর কুমার পাল-কে প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দিলেও কার্যক্রম এখনো শুরু হয়নি। প্রশাসক জানান, আদালতের মামলার জটিলতার কারণে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন তিনি।
চেম্বারের বর্তমান ও সাবেক সদস্যদের মধ্যে দোষারোপ চলছে। কেউ কেউ দাবি করছেন, আগের কমিটি বিধি লঙ্ঘন করে কাজ করেছে এবং গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সরিয়ে ফেলেছে। অন্যদিকে বর্তমান পরিচালকেরা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আইন মেনেই চেম্বার পরিচালিত হয়েছে এবং সবকিছু নিয়মমাফিক হয়েছে।
চেম্বারের ভবনে থাকা সুরমা ক্লিনিকের মালিকরা জানান, ভাড়া ও সংস্কার খরচ নিয়ে এখন বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে কারণ কর্তৃপক্ষ অনুপস্থিত। একইসঙ্গে বড়ছড়া, বাগলী ও চারাগাঁও শুল্ক স্টেশনের আমদানিকারকরা বলছেন, জুনের পর কার্যক্রম শুরু না হলে তারা বিপদে পড়বেন।