1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:৩৭ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
জামালগঞ্জে নবাগত জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা সিলেটে শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসারকে অপসারণের দাবিতে গণস্বাক্ষর কার্যক্রম ২৫০ শয্যা হাসপাতালে সেবার মান বাড়ানোর দাবিতে মতবিনিময় সুনামগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ বন্যার্তদের সহায়তায় সুনামগঞ্জে শিল্পকলা একাডেমির ব্যতিক্রমী ছবি আঁকার কর্মসূচি জগন্নাথপুরে শিক্ষিকা লাঞ্চিত: দোষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী সকল কালাকানুন বাতিলের দাবি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পান্নার মরদেহ হস্থান্তর করলো মেঘালয় পুলিশ কাদের সিদ্দিকী বললেন: বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এক নয় বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বন্যায় ২০ লাখ শিশু ঝুঁকিতে : ইউনিসেফ

দেশে সাপের বিষে এত মানুষের মৃত্যু কেন

  • আপডেট টাইম :: মঙ্গলবার, ২ জুলাই, ২০২৪, ৯.১৯ এএম
  • ৪০ বার পড়া হয়েছে

হাওর ডেস্ক::

সাপের বিষের পর্যাপ্ত প্রতিষেধক দেশের হাসপাতালগুলোতে থাকার তথ্য দিচ্ছে সরকার; অথচ বন বিভাগের হিসাবে বছরে সাড়ে সাত হাজার মানুষের মৃত্যু হয়ে থাকে সরীসৃপটির কামড়ে।

এর বাইরে আর কত হাজার মানুষের অঙ্গহানি বা স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দেয়; দীর্ঘ সময় ধরে শারীরিক সমস্যায় ভুগতে হয় কতজনকে সেই পরিসংখ্যান নেই।

বিলুপ্ত ঘোষিত চন্দ্রবোড়া বা রাসেলস ভাইপার সাপের আবার ফিরে আসার মধ্যে একের পর এক এলাকায় দংশনের খবর, চিকিৎসায় দুর্বলতা আর মানুষের অসচেতনতার বিষয়টি সামনে এসেছে।

প্রকাশ পেয়েছে, প্রতি বছর সাড়ে চার থেকে পাঁচ লাখের কাছাকাছি মানুষকে সাপে কাটলেও এর বিষ প্রতিরোধক বা অ্যান্টিভেনম উৎপাদন হয় না দেশে। এক বছর আগে সেই উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি।

সাপে কাটার আলোচনায় এখন সবচেয়ে বেশি পরিচিত হয়ে উঠেছে বিলুপ্ত ঘোষিত চন্দ্রবোড়া বা রাসেলস ভাইপার। তবে বাংলাদেশে সাপের দংশনে মৃত্যুতে এ জাতের ভূমিকা কমই; গত এক বছরে একশ মৃত্যুও হয়নি এর কামড়ে।

তবে আতঙ্কে রাসেলস ভাইপার তো বটেই, মেরে ফেলা হচ্ছে অনেক নির্বিষ সাপও। সরকার দেশবাসীকে প্রাণীটি নিধনে নিষেধ করে সাপের ছোবলে আক্রান্ত হলে হাসপাতালে গিয়ে অ্যান্টিভেনম গ্রহণে উৎসাহী করছে।

সারাদেশে আতঙ্ক বিস্তারকারী জাত চন্দ্রবোড়া বা রাসেলস ভাইপার।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী সামন্ত লাল সেন বলেছেন, দেশের সব হাসপাতালে অ্যান্টিভেনম দেওয়া আছে। তবে প্রতিষেধক থাকলেও তা পর্যাপ্ত কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায় স্বাস্থ্য প্রশাসনের জেলা কর্মকর্তাদের বক্তব্যে।

আধুনিক চিকিৎসায় ঝোঁক কম, হাসপাতালে গেলেও দেরিতে

রাসেলস ভাইপারের প্রাদুর্ভাব সবচেয়ে বেশি যেসব এলাকায় তার মধ্যে একটি ফরিদপুর।

জেলার সিভিল সার্জন সিদ্দিকুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রত্যেক উপজেলায় অন্তত দুজন রোগী সামলানোর মত অ্যান্টিভেনম রয়েছে।”

কেবল দুইজনের জন্য ব্যবস্থাপনা কেন- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “জেলা হাসপাতালের স্টোরে জমা আছে আবার আমরা চাহিদাও দিয়েছি। উপজেলাগুলো বেশি নেয় না, কারণ, বেশিদিন থাকলে ওষুধের মেয়াদ চলে যাবে।”

অর্থাৎ যদি দুইজনের বেশি রোগী আসে, জেলা সদর হাসপাতাল থেকে অ্যান্টিভেনম পাঠাতে বা রোগীকে সদরে আনতে যে দেরি হবে, সেই বিলম্ব হয়ে উঠতে পারে মৃত্যুর কারণ।

ফরিদপুরের সিভিল সার্জন বলেছেন, পদ্মার পাড় ঘেঁষা সদরপুর ও চর ভদ্রাসন উপজেলায় সাপে কাটলে বেশির ভাগ রোগী পদ্মা পাড়ি দিয়ে ঢাকায় চলে যায়।

“চারজন রোগী ঢাকায় গিয়ে মারা গেছে। কারণ, সময় বেশি চলে গেছে। সদরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তারা যায়নি।”

মানুষের অসচেতনতার কথা তুলে ধরে সিদ্দিকুর বলেন, “বেশির ভাগ রোগীই হাসপাতালে না এসে প্রথমে যায় ওঝার কাছে। নানা জটিলতার পর ওঝা যখন ছেড়ে দেয় তখন তারা হাসপাতালে আসে।

“গত শুক্রবার ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটা রোগী মারা গেছে। অ্যান্টিভেনম দিতেই রাজি না তিনি, চলে গেছেন। জটিল অবস্থা শুরু হওয়ার পর আবার এসেছেন, অ্যান্টিভেনম দিতে রাজি হয়েছেন, কিন্তু তখন আর কাজ হয়নি।”

চিকিৎসকরা বলছেন, আধুনিক চিকিৎসা থাকলেও এখনও সাপের দংশনের পর ওঝার কাছে যাওয়ার প্রবণতা বেশি।

গত ২২ জুন যশোরের শার্শায় ১২ বছর বয়সী একটি শিশু সাপের দংশনে মারা যায়।

সেদিন ফোরকানুল ইসলাম নামের ছেলেটিকে বেলা ১১টার দিকে সাপে কামড় দিলেও তাকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় রাত ৮টার দিকে।

গ্রামের কবিরাজ, বদ্যিসহ নানাজনকে দেখানোর পর অবস্থা গুরুতর হলে রাতে নেওয়া হয় হাসপাতালে।

হাসপাতালের চিকিৎসক শাকিরুল ইসলাম বলেন, “হাসপাতালে না এনে বাড়িতে রাখায় শরীরে বিষ ছড়িয়ে পড়ায় তার মৃত্যু হয়েছে।”

রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ইব্রাহিম টিটন বলেন, “রোগীদের বড় হাসপাতালে যাওয়ার ঝোঁক আর সনাতন চিকিৎসা পদ্ধতিতে আস্থা তাদের বিপদে ফেলছে, যার ফলে সময় নষ্ট হচ্ছে ।

“গত সপ্তাহে সদর হাসপাতালে একজন রোগী মারা গেল। তিনি কালুখালীর ছিলেন, কালুখালী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অ্যান্টিভেনম ছিল। কিন্তু তারা সেখানে না গিয়ে সদর হাসপাতালে চলে আসেন। ফরিদপুর, কুষ্টিয়ায় চলে গেছেন অনেকে, এর কারণে মৃত্যু হয়েছে।

“অনেকে ওঝার কাছে যাচ্ছে, যখন অবস্থা খারাপ হচ্ছে; আবার মানুষ বলছে ‘ভুল করতেছ’ তখন চলে আসছে। সময়টা এখানে গুরুত্বপূর্ণ।“

আমদানি নির্ভর অ্যান্টিভেনম

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ও বাংলাদেশ টক্সিকোলজি সোসাইটির সভাপতি এম এ ফয়েজ সাপের কামড় এবং এর চিকিৎসা নিয়ে গবেষণা করেছেন ও বই লিখেছেন।

বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, একবিংশ শতকের শুরু থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে শুরু হয়ে বাংলাদেশের বড় হাসপাতালগুলোতে সাপের বিষের প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হয়। গত দুই তিন বছর ধরে উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালগুলোতেও দেওয়া হচ্ছে এটি।

বাংলাদেশে মূলত পলিভ্যালেন্ট অ্যান্টিভেনম ব্যবহার হয়। এটি তিন ধরনের বিষধর সাপের বিরুদ্ধে কাজ করে। এগুলো হল: গোখরা (দুই প্রজাতি), ক্রেট বা কেউটে (৪/৫ প্রজাতির), রাসেলস ভাইপার।

সাপের দংশনের চিকিৎসায় দেশের সব সরকারি উপজেলা হাসপাতালেই এখন অ্যান্টিভেনম আছে-বলছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

এর বাইরে অন্যান্য যে বিষধর সবুজ সাপ রয়েছে সেগুলোর এবং বিষাক্ত সামুদ্রিক সাপের অ্যান্টিভেনম দেশে নেই।

এম এ ফয়েজ বলেন, “বাংলাদেশে সাপে কাটার বিষয়টি এখনও জরুরি স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করা হয় না। ফলে বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোতে সাপে কাটার কত রোগী আসে, কত রোগীর অ্যান্টিভেনম লাগতে পারে সেটার অনুমান নির্ভর একটা সংখ্যা নির্ধারণ করে ওই হিসাবে ওষুধ কেনা হয়।”

এ অ্যান্টিভেনম বাংলাদেশে তৈরি হয় না। সরকারের অসংক্রামক ব্যাধি কর্মসূচি ভারত থেকে এগুলো আমদানি করে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও কিছু সংগ্রহ করে দেয়।

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ভেনম রিসার্চ সেন্টার প্রায় দুই বছর আগে রাসেলস ভাইপারের অ্যান্টিভেনম তৈরির কাজ শুরু করলেও এখনও তা সফল হয়নি।

এ উদ্যোগ কেন এখনো আলোর মুখ দেখল না, এই প্রশ্নে রিসার্চ সেন্টারটির প্রিন্সিপাল ইনভেস্টিগেটর অধ্যাপক অনিরুদ্ধ ঘোষ জয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এগুলো লম্বা প্রক্রিয়া। মুরগি, ছাগল নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে, অ্যান্টিবডি সংগ্রহের পর্যায়ে আছে এখন। অ্যান্টিবডি তৈরি করে দেখব সেটা কাজ করে কি না।

“আর অ্যান্টিভেনম তৈরি করাটা হচ্ছে একটা ফার্মাসিউটিক্যাল প্রক্রিয়া। অ্যান্টিবডি যদি কাজ করে তাহলে অ্যান্টিভেনম তৈরি করা হবে এবং সেটা ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানি তৈরি করবে।”

অ্যান্টিভেনম কি আসলে পর্যাপ্ত?

এ প্রশ্নে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবিএম খুরশীদ আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সাপে কাটা রোগীদের সেবা দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম সব হাসপাতালেই আছে।”

তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে কতটি করে অ্যান্টিভেনম আছে সে সুনির্দিষ্ট তথ্য তিনি দিতে পারেননি।

“যেখানে উপদ্রব বেশি সেখানে হয়ত বেশি আছে, যেখানে কম সেখানে কম আছে। বিভিন্ন উপজেলায় বিভিন্ন রকমের আছে। লাগলে আরও নেবে। জেলার স্টোরে রাখা আছে।”

শুধু অ্যান্টিভেনম দিয়েই শুধু রোগীকে ঠিক করা যাবে এমন না মন্তব্য করে তিনি বলেন, “রোগীকে তো সময়মত আসতে হবে। ম্যাক্সিমাম ক্ষেত্রে এলাকায় ঝাড়ফুঁক করে আনে অনেক দেরি করে। আবার অনেকে অ্যান্টিভেনম নিতেও চায় না।”

দুই বছর আগে চট্টগ্রামের ভেনম রিসার্চ সেন্টার রাসেলস ভাইপারের অ্যান্টিভেনম তৈরির উদ্যোগ নিলেও এখনও তা সফল হয়নি।

রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন বলেছেন, তার জেলার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ৩টি করে আর জেলা হাসপাতালে ৫টি করে অ্যান্টিভেনম রয়েছে। জেলায় রয়েছে পর্যাপ্ত অ্যান্টিভেনম।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক সাবেক মহাপরিচালক এম এ ফয়েজ বলেন, এর বাইরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলোতে ১০ থেকে ১৫টি ডোজ সরবরাহ করে সরকার।

এত কম কেন থাকে- এই প্রশ্নে তিনি বলেন, “ওষুধের একটা সময় থাকে, এর মধ্যে ব্যবহার না করলে মেয়াদ চলে যায়।

“না থাকলে সিভিল সার্জনের থেকেও উনারা নিতে পারেন, সিভিল সার্জনের কাছে সব সময় একটা স্টক থাকে। জরুরি সময়ে আশেপাশের উপজেলা থেকেও সংগ্রহ করতে পারেন তারা।”

তিনি বলেন, “কোনো মেডিকেলে অসংখ্য পরিমাণে দিয়ে রাখা যাবে না। সামগ্রিকভাবে যেসব জায়গায় সাপের উপদ্রব বেশি, ওইসব জায়গায় বেশি পরিমাণে, যেখানে কম আছে সেখানে কম অ্যান্টিভেনম দিয়ে রাখে।”

কীভাবে কাজ করে অ্যান্টিভেনম

বিভিন্ন প্রাণীর শরীরে সাপের বিষয়গুলো প্রবেশ করিয়ে তারপর অ্যান্টিবডি যখন তৈরি হয়, তখন বের করে এটাকে সিরাম হিসেবে আলাদা করা হয়। পরে সিরামটাই ব্যবহার করা হয় রোগীর শরীরে।

বর্তমানে দেশে অ্যান্টিভেনম ব্যবহার হচ্ছে সেটা ঘোড়ার সিরাম থেকে প্রস্তুত।

সময়মত অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করা হলে সেরে উঠেন অধিকাংশই রোগীই।

একটি ডোজ তৈরি হয় ১০টি ভায়াল মিলে। প্রতিটি ভায়াল ১০ মিলি করে পানির সঙ্গে মিশিয়ে ১০০ মিলির ইনজেকশন তৈরি করা হয়। এর সঙ্গে আবার অনেক সময় আরও ১০০ মিলি সাধারণ স্যালাইনও দেওয়া হয়।

সাপের কামড় বা দংশনের পরে দ্রুত অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করা গেলে এর অ্যান্টিবডিগুলি সাপের বিষকে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। যার ফলে রোগীর আক্রান্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলো বেঁচে যায়, শঙ্কামুক্ত হয় রোগীও।

অ্যান্টিভেনম সাপের বিষকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়।

অ্যান্টিভেনম দেওয়ার সময় চিকিৎসকরা রোগীকে এক থেকে দুই ঘণ্টা পর্যবেক্ষণ করেন, যাতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া না হয়।

তারা চামড়ার নিচে চার ভাগের একভাগ ওষুধ দিয়ে দেখেন কোনো অসুবিধা হচ্ছে কি না। অসুবিধা না হলে এক ঘণ্টার মধ্যে পুরো অ্যান্টিভেনমটা শেষ করা হয়।

ওষুধটা মূলত ধমনির মধ্যে দেওয়া হয়।

কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়। এরপর দরকার হলে আবার অ্যান্টিভেনম দেওয়া হয়।

কখন অ্যান্টিভেনম নেওয়া প্রয়োজন?

চিকিৎসকরা বলছেন, সাপে কাটার পর বিষক্রিয়ার প্রভাব থাকলে চিকিৎসক রোগীর ইতিহাস পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেন অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করা হবে কি না।

তবে রোগীর শরীরে কোনো উপসর্গ থাকলে যত দ্রুত সম্ভব ওষুধ প্রয়োগ করার পরামর্শ গবেষকদের।

সাপে কাটার পর রোগীর যে উপসর্গগুলো পর্যবেক্ষণ করেন চিকিৎসকরা

  • স্নায়ুতন্ত্রের উপর বিষের প্রভাব এর তালিকা- চোখের পাতা পড়ে যাওয়া, এক জিনিসকে দুটো দেখা, নাকি সুরে কথা বলা, জড়তা চলে আসা, খেতে অসুবিধা হওয়া, হাত-পা দুর্বল হয়ে যাওয়া।
  • দংশনের জায়গায় দ্রুত ফুলে যাওয়া, সেখান থেকে রক্তক্ষরণ হতে থাকলে, বিভিন্ন জায়গা থেকে রক্তক্ষরণ হতে থাকলে, রক্তচাপ কমে গেলে, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া, প্রস্রাব লাল হওয়া বা কালচে হওয়া, বমি হওয়া, পেট ব্যথা হওয়া।

চিকিৎসক ফয়েজ বলেন, “কোনো একটা উপসর্গ থাকলে টোয়েন্টি ডব্লিউবিসিটি পরীক্ষা (টোয়েন্টি মিনিট হোল ব্লাড ক্লোটিং টেস্ট) আছে, উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালেও করা যায়। এই পরীক্ষা যদি পজিটিভ হয় তাহলে চিকিৎসকরা উপসর্গ বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেন অ্যান্টিভেনম দেওয়া হবে নাকি হবে না।”

উপসর্গ দেখা দিলেই অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করতে হবে। দেরিতে প্রয়োগ করা হলে এর কার্যক্ষমতা অনেকটাই কমে আসে।

সরকারি তথ্য বলছে, দেশে গোখরা ও কেউটে সাপের কামড়ে সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায়।

এই চিকিৎসক সেজন্য সাপে কাটার সঙ্গে সঙ্গেই রোগীদের হাসপাতালে আসার পরামর্শ দিচ্ছেন।

“রোগীরা যেন বাড়ির কাছের হাসপাতালেই যায়। কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে উপসর্গ আসতে পারে। কেউ কেউ বলে ১০০ মিনিটের মধ্যে অ্যান্টিভেনম দিতে হবে, এটা ভুল। কারণ, উপসর্গ যদি ১০ মিনিটে আসে তাহলে ১০০ মিনিট অপেক্ষা করব? একদিন বা পাঁচদিন পরে উপসর্গ আসলে দেব না? যখন উপসর্গ আসবে তখনই দিতে হবে।”

সাপে কাটার পর রোগীদের অন্তত দুই দিন চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি।

প্রাথমিক চিকিৎসা কী

সাপে কাটার পর প্রাথমিক চিকিৎসা কী জানতে চাইলে রাজবাড়ীর সিভিল সার্জন ইব্রাহিম টিটন বলেন, “যেখানে কামড় দেবে সে জায়গাটা নড়াচড়া করা যাবে না। যত নড়বে, বিষ তত সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে।”

এম এ ফয়েজ বলেন, “মাংসপেশি যেন সংকোচন, প্রসারণ না হয়। পায়ে দংশন করলে হাঁটবে না, হাতে দংশন করলে ভেঙে যাওয়ার পর যেভাবে হাত পেঁচিয়ে রাখা হয় সেভাবে পেঁচিয়ে রাখতে হবে যাতে হাতটা না নড়ে।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!