স্টাফ রিপোর্টার::
সিলেট শহরতলীর কোতোয়ালী মডেল থানার নয়া সড়কের একটি নিরিহ পরিবারের মূল্যবান ভূমি দখলের চেষ্ঠা করছে বিএনপির ক্যাডার হিসেবে পরিচিত একটি চক্র। ওই পরিবারের কাছে চাঁদা না পেয়ে এখন তাদের স্থাপনা তৈরিতে জোর পূর্বক বাঁধাও দিয়েছে। পাশাপাশি ভূমির নীরিহ মালিককে মারধরও করেছে। বর্তমানে নিরাত্তাহীনতায় আছে পরিবারটি। এ ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় চাদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে চাদাবাজির মামলা দায়ের করেছেন আহত আদনান মাহমুদ। মামলা দায়েরের পরও হুমকি ধমকি দিচ্ছে চাঁদাবাজ চক্র।
সিলেট কোতোয়ালী মডেল থানার সাধারণ ডায়রী ও মামলা সুত্রে জানা যায়, গত ২৩/০৪/২১ইং দুপুরে বাদীর নিজস্ব জায়গায় নির্শাণাধীন বিল্ডিং এর কাজ চলা অবস্থায় বিবাদীরা কয়েকজন সংঘবদ্ধ হয়ে বাদীর বাড়িতে প্রবেশ করে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা নির্মাণ কাজে বাঁধা প্রদান এবং বিভিন্ন ধরণের হুমকি ধমকিও প্রদান করে।
এঘটনায় ঐদিন বিকেলে ভুক্তভোগী শহরতলীর নয়াসড়কের আল হেলাল ১৩/এ বাসিন্ধা মৃত শফিক উদ্দিন আহমদের ছেলে আদনান মাহমুদ (২২) বাদী হয়ে একই এলাকার বাসিন্দা আতা মিয়া (৬৫) তার ছেলে সেনাজ (৪৬), লিমন (৪২), শিমূল (৩৪) এর বিরুদ্ধে কতোয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেন। সিলেট কোতোয়ালী থানার সাধারণ ডায়রী নং-১৬৬৭।
পরে থানা পুলিশ সাধারণ ডায়রেটি তদন্ত করে আসামীদের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে। বর্তমানে প্রতিবেদনটি সিলেট অতিরিক্ত মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
এর প্রেক্ষিতে আসামীরা ক্ষিপ্ত হয়ে বাদীকে তার জায়গায় বিল্ডিং তৈরি করতে বিভিন্ন ভাবে বাঁধা প্রদান ও চাঁদা দাবীসহ নানা ভাবে হয়রানী করে আসছিল। তারা শারিরিক ও মাসিকভাবেও পরিবারকে নির্যাতন করে আসছে।
অভিযোগ থেকে ৬ অক্টোবর দুপুরে নয়াসড়ক আল হেলাল ১৪/এ এর বাসিন্দা নাজিম উদ্দিনের ছেলে আফসার উদ্দিন নাহিদ (৪০), আতা মিয়া (৬৫), তার তিন ছেলে সেনাজ, লিমন ও শিমূল অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জন মিলে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাদীর বাড়িতে প্রবেশ করে তার নিকট ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে। এসময় চাঁদা না দেয়ায় আসামীরা বাদীকে এলোপাতারি মারপিট করে গুরুতর আহত করে।
এসময় বাদীর আর্ত্ম চিৎকারে তার স্বজনসহ প্রতিবেশীরা বাড়িতে এসে তাকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করান।
এঘটনায় ঐদিন রাতেই আহত আদনান আহমদ বাদী হয়ে সিলেট কোতোয়ালী মডেল থানায় নয়াসড়ক আল হেলাল ১৪/এ এর বাসিন্দা নাজিম উদ্দিনের ছেলে আফসার উদ্দিন নাহিদ (৪০), আতা মিয়া (৬৫), তার তিন ছেলে সেনাজ, লিমন ও শিমূল অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জনকে আসামী করে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এদিকে হামলাকারীদের সঙ্গে নয়াসড়ক বিএনপির কয়েকজন শীর্ষ ক্যাডার, বিএনপির এক
জন প্রভাবশালী ঠিকাদারেরও ইন্দন রয়েছে।
জানা গেছে অভিযোগ দায়ের করার পর পর চক্রটি ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ভুয়া, বানোয়াট ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে কিছু ভাড়াটিয়া লোক এনে ঐ পরিবারের বিরুদ্ধে একটি মানববন্ধন করে সিলেটের কয়েকটি স্থানীয় দৈনিকে প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করিয়ে ঐ পরিবারটিকে সামাজিক ভাবে হেয় প্রতিপন্ন করারও অপচেষ্টা করে। এখনো ওই চক্রটি নীরিহ পরিবারটির বিরুদ্ধে নানাভাবে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে।
এদিকে নীরিহ পরিবারটির বিরুদ্ধে ভূয়া অভিযোগের প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি প্রকাশিত হওয়ার পরদিন বাদী আদনান আহমদ প্রকাশিত সকল পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিটির তীব্র প্রতিবাদ জানান প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে। যার মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনা জানতে পারে মানুষ।
কোতকোয়ালী মডেল থানা গত ০৯/১০/২১ইং তারিখে বাদীর অভিযোগটি আমলে নিয়ে মামলা রুজু করে। কোতোয়ালী থানার মামলা নং- ২৪/৭৫৯। মামলা দায়েরের পর পরই আসামীরা পলাতক রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মামলার আসামী আতা মিয়ার ছেলে সাবেক ছাত্রদল কর্মী লিমন সরকার বিরোধী জ্বালাও পুড়াও আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকায় পুলিশ কতৃক গ্রেফতার হয়ে ৬ মাস কারা বাস করে।
অপর ছেলে সেনাজের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ কতৃক গ্রেফতার হয়ে হাজতবাসের প্রমাণও পাওয়া গেছে।
আসামী নাহিদ ২০০৩ সালে সিলেটে বিএনপির জামান গ্রুপের সক্রিয় সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত। তখন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করতে গিয়ে গুলিবিদ্ধ ও হওয়ার প্রমাণও পাওয়া গেছে লিমনের বিরুদ্ধে।
বর্তমানে নিরিহ পরিবারটি এই বিএনপি সন্ত্রাসী চক্রের হাতে তাদের জান মালের নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছে।
মামলার বাদী আদনান মাহমুদ এ প্রতিবেদককে জানিছেন, এরা খুবই ভয়ংকর সন্ত্রাসী এরা যে কোন সময় আমাদের জান মালের ক্ষতি করতে পারে। বাসায় আমি ও আমার মা ছাড়া আর কেউ থাকিনা।
এমতাবস্থায় আমি মাননীয় সরাষ্ট্রমন্ত্রী, পুলিশের মহা পরিদর্শক মহোদয়, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মহোদয়, এসএমপি কমিশনার মহোদয় সহ সংশ্লিষ্ট সকল উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের প্রতি আকুল আবেদন জানাচ্ছি অবিলম্বে এ বিএনপি সন্ত্রাসী চক্রেকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।
মামলার আসামিদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে বন্ধ পাওয়া যায়।