1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:১১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

অনুপ্রবেশ ও বিতর্কিতদের তালিকা করছে সরকার

  • আপডেট টাইম :: মঙ্গলবার, ১ অক্টোবর, ২০১৯, ৬.৪৪ এএম
  • ১৮০ বার পড়া হয়েছে

হাওর ডেস্ক ::
অনুপ্রবেশ করে নানা অপরাধ বা বিতর্কমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। কেন্দ্র থেকে মাঠপর্যায় পর্যন্ত এ কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একটি সরকারি সংস্থাকে। এজন্য একটি নির্ধারিত ফরম দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থা ঘটনাটি নিশ্চিত করেছে। তবে এর আগে দলীয়ভাবেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে অনুপ্রবেশকারীদের একটি তালিকা বিভিন্ন সময়ে দেওয়া হয়েছে। এখন এটি আরো বিশদভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ বিস্তারিত তথ্যসংবলিত প্রমাণপত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে।
জানা যায়, ২০০৮ সালের পর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ ক্ষমতাসীন দলের নামে যেসব সংগঠন রয়েছে, সেসব দল বা সংগঠনে যোগদানকারী নেতাকর্মীদের নাম, যোগদানের সময়, স্থায়ী-অস্থায়ী ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার আগে কোন দল বা সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল, পূর্ববর্তী দলে পদ-পদবি যদি থাকে, বাবা-ভাই-মা-চাচাসহ পরিবারের সদস্যদের রাজনৈতিক তথ্য, মুক্তিযুদ্ধের সময় তার পরিবারের ভূমিকা, আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পর তার পদ-পদবি, আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে কোনো জাতীয় বা স্থানীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ-সম্পর্কিত তথ্য, মামলা-সম্পর্কিত তথ্য এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাপ্রধানের মন্তব্য চাওয়া হয়েছে ওই নির্ধারিত ফরমে।
রসঙ্গত, টানা তৃতীয়বারের মতো ক্ষমতায় আসার পর আওয়ামী লীগের ঢাকা থেকে শুরু করে মাঠপর্যায় পর্যন্ত নানা বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে পড়েছে সরকারি দলের একশ্রেণির নেতাকর্মী। কোথাও কোথাও সিন্ডিকেট করে টেন্ডার নিয়ন্ত্রণসহ সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির মতো অপরাধে জড়িয়ে তারা সরকারকে বিব্রত করছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, অনুপ্রবেশকারী রয়েছে সেটি পরিষ্কার। তাদের বিষয়ে কী করা হবে, সেটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত দেবেন। অনুপ্রবেশকারীরা কিছু পরীক্ষিত নেতার হাত করে দলের মধ্যে ঢুকে দল ও সরকারকে বিব্রত করছে। চলমান অভিযানে আরো অনেক কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর। কোনোক্রমেই তিনি অপরাধীদের প্রতি নমনীয় হবেন না। তিনি দেশে ফিরেই আরো কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে সূত্র জানায়।সূত্রমতে, দলের দুর্নীতি ও অপরাধগ্রস্ত দাগি নেতাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কঠোর অবস্থাানে খুশি সংগঠনের তৃণমূল নেতাকর্মীরা। ছাত্রলীগ, যুবলীগ দিয়ে শুরু হলেও সারাদেশে জেলা-উপজেলায় দলের মধ্যে অনুপ্রবেশকারি ও বেপরোয়া-দাগি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসা, বালুমহল দখল, অপরাধ ও অসামাজিক কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে দল তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে আওয়ামী লীগ। দলীয় ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি প্রশাসনিকভাবেও অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে আইন-প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে ‘গ্রিন সিগনাল’ দিয়েছে ১৪দলীয় জোটের নেতৃত্বাধীর আওয়ামী লীগ সরকার।
মন্ত্রী-এমপিদের ছত্র-ছায়ায় অপকর্ম হলেও সকল বাধা উপক্ষো করে সরাসরি ব্যবস্থা নিতেও বার্তা দেয়া হয়েছে। দলে অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে বার্তা দেয়া হয়েছে তৃণমূলে। অপরাধ নির্মূল ও দলের শুদ্ধি অভিযানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদক্ষেপ ও জিরো টলারেন্স নীতিতে সন্তোষ প্রকাশ করে স্বাগত জানাচ্ছেন তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর কঠোর অবস্থানে হঠাৎ পেরেশানি তৈরি হয়েছে দলের মধ্যে। কখন কে অপরাধের কারণে আলোচিত হন এবং শাস্তির মুখে পড়েন তা নিয়ে টেনসনে নেতরা। তবে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা এ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করছেন। তাদের মতে ওইসব নেতারা দলের খারাপ ছাড়া ভালো কোন কাজে আসে না। দলের সুন্দর পরিবেশ ও সুস্থ্য রাজনীতির জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আরো কঠোর হতে হবে।
তৃণমূল নেতারা বলছেন, দলের কিছু চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, মাদক ব্যবসায়ী ও বিএনপি-জামায়াতের অনুপ্রবেশকারীদের কারণে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আকাশ সমান অর্জন ম্লান হয়ে যাচ্ছে কিছু কিছু সময়। তাদের মতে, দলে শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করতে হবে। গুটি কয়েক অপরাধী ও দুর্নীতিবাজ নেতাদের কারণে সকল নেতাকর্মীদের ঢালাও ভাবে খারাপ বলে জনগণ। কিন্তু অপরাধের সাথে জড়িত এসব নেতার সংখ্যা খুবই সামান্য। নব্বই শতাংশ নেতাকর্মী সুস্থ্যভাবে রাজনীতি করেন, জনগণের জন্য রাজনীতি করেন। কিন্তু অপরাধী, দুর্নীতিগস্ত’ নেতাদের কারণে ভাল ও সুস্থ্যধারার রাজনৈতিক ব্যক্তিরা কোনঠাসা হয়ে থাকেন।
নেতাকর্মীদের অভিযোগ, দলের সিনিয়র কিছু নেতারা ওইসব দুর্নীতিবাজ, মাদক ব্যবসায়ী ও বিতর্কিতদের দলের বিভিন্ন পদ দিচ্ছেন এবং তাদের ছত্রছায়া দিয়ে বড় অপরাধ করার সাহস যোগাচ্ছেন। তাই সেই সকল প্রশ্রয়দাতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনে সুস্থ্য পরিবেশ ফিরে আসবে। ত্যাগী নেতাদের দলে মূল্যায়ন করতে হবে। দলের প্রতি জনগণের আস্তা অনেক বেশি বাড়বে।
এ বিষয়ে ওয়ারী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি চৌধুরী আশিকুর রহমান লাভলু বলেন, স্বাধীনতা থেকে শুরু করে দেশের সকল অর্জন এসেছে আওয়ামী লীগের হাত ধরে। সুতরাং দলের কতিপয় অপরাধী, অনুপ্রবেশকারী নেতার অপকর্মের কারণে পুরো দলের ভাবমূর্তি ও অর্জন নষ্ট হতে দেয়া যায় না। সারা দেশব্যাপী দলে শুদ্ধি অভিযান জোরদার করা উচিত বলে মনে করেন চৌধুরী আশিকুর রহমান লাভলু। তিনি বলেন, দলের অপরাধী, অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতিটি পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাই। ডেমরা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান মোল্লা সজল বলেন, যারা দলের (অপকর্মকারীরা) নাম ব্যাবহার করে অপরাধে জড়িয়েছে তাদের কঠোর থেকে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। রাজধানীর পাশাপাশি সারাদেশে এই অভিযান অব্যহত রাখলে তৃণমূল এবং দলের ত্যাগী-পরিচ্ছন্ন নেতাকর্মীরা সবচেয়ে বেশি খুশি হবে।
একইসাথে আওয়ামী লীগ ও প্রধানমন্ত্রীর সম্মান আরো হাজার গুণ বেড়ে যাবে। অপকর্মকারীরা এমপি-মন্ত্রীদের নাম ভাঙিয়ে অনেক কিছু করছে, কিছু ক্ষেত্রে এমপি-মন্ত্রীরাও জানে না তার নাম ভাঙিয়ে কত ধরনের অপরাধ করা হচ্ছে। অথচ প্রশাসনের অনেকে ভয়ে তাদের কিছু বলে না যে তারা তো এমপি-মন্ত্রীর লোক। তাই এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা প্রত্যেক জায়গায় পৌঁছে দিতে হবে। মাদকবিরোধী অভিযান ও সম্প্রতি দলের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের কারণে শুধু আওয়াম লীগ নয়, বিএনপিসহ সকল দলের নেতাকর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর পদক্ষেপকে স্বাগত জানাচ্ছেন। একইসুরে কথা বলেছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিন যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করীম রেজা। তিনি বলেন, এই অভিযানের মধ্যদিয়ে বিগত দিনে দলে (বিএনপি-জামায়াত) অনুপ্রবেশকারিরা বিদায় নেবে। একইসাথে দলের দুরদিনে ত্যাগী এবং ইমেজ সম্পন্ন নেতাকর্মীরা মূল্যায়িত হবে, এমন প্রত্যাশার কথা জানান তিনি।
এদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে পোস্ট দিচ্ছেন নেতাকর্মীরা। দলের কারো অপরাধ প্রমাণ হলে বা প্রশাসনের কোন দুর্নীতি ধরা পড়লে নেতাকর্মীরা সরব হয়ে উঠছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স, শুদ্ধি অভিযান, জয়তু শেখ হাসিনা হ্যাশট্যাগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর এসব পদক্ষেপ প্রোমোট করছেন সবাই।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, শুধু যুবলীগ কিংবা ছাত্রলীগের প্রশ্ন নয়, আওয়ামী লীগেরও যারা অনিয়ম-দুর্নীতি করবে-তাদের সবারই একই পরিণতি ভোগ করতে হবে। এসব অপকর্মে প্রশাসন কিংবা রাজনীতির কেউ মদদ দিয়ে থাকলে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে। যত বড় রাঘববোয়াল কিংবা গডফাদারই হোক না কেন, কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। তিনি বলেন, এটাই হচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেত্রী, সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সব অপকর্ম, অন্যায়-অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছেন তিনি। এখানে ঢালাওভাবে ছাত্রলীগ-যুবলীগের প্রশ্ন নয়, আওয়ামী লীগেরও কেউ যদি অপকর্ম করে, প্রধানমন্ত্রী সেটারও খোঁজ-খবর নিচ্ছেন। দুর্নীতি, অপকর্ম ও শৃঙ্খলা ভঙ্গ- এসবের জন্য অনেকেই নজরদারিতে রয়েছেন। সময়মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আওয়ামী লীগ তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরে দলে অনেক অনুপ্রবেশকারী ঢুকেছে। তারাই ক্যাসিনো ব্যবসাসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত হয়েছে। তাদের এখন আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। বাকি যারা রয়েছেন, তাদের সবাইকেই ধরা হবে। যাদের ধরা হয়েছে তারা কেউ ছোট নয়, এরাও একেকজন গডফাদার। কারা পেছন থেকে মদদ দিয়েছেন সে তালিকাও সরকারের কাছে রয়েছে। সবাইকে একে একে আইনের আওতায় আনা হবে। খালিদ মাহমুদ ও জি কে শামিমের কাছ থেকে যারা কমিশন খেয়েছেন তাদের তালিকাও করা হচ্ছে। কেউ রেহাই পাবে না বলেন তথ্যমন্ত্রী। কেঁচো খুঁড়তে সাপ বেরিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ নিয়ে বিএনপির এমন মন্তব্যে হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানই হলেন একজন দুর্নীতির অজগর সাপ, তাই বিএনপির মুখে এসব কথা মানায় না।
আওয়ামী লীগের অন্যতম সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছেন। এরই মধ্যে দুদক কারো কারো বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) পর্যবেক্ষণ করছেন। যারা তার নাম ব্যবহার করে অপকর্ম, চাঁদাবাজি, দুর্নীতি করেছে, দলের শৃঙ্খলা ভেঙেছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার আওয়ামী লীগের কার্যনিবাহি বৈঠকে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির কাছে চাঁদা দাবির ঘটনায় অপসারিত হয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভন ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী। এরপর শোভন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট থেকে পদত্যাগ করে। এদিকে রাব্বানী বলছেন, তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আপাকে (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) ভুল বোঝানো হয়েছে। এরপর ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূইয়াকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। -সূত্র : আমাদেরসময়.কম

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!