হাওর ডেস্ক ::
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার মধ্যনগর থানাধীন দুটি ইউনিয়নের ৫০২ জন ভিজিডি কার্ডধারী কয়েক মাস ধরে চাল পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে কার্ডধারীদের মধ্যে চরম হতাশা দেখা দিয়েছে। মাসের পর মাস চাল না পেয়ে উপজেলার চামরদানি ও বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের ওই সব ভিজিডি কার্ডধারী পরিবারের লোকজন মানবেতর জীবন যাপন করছে।
চামরদানি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সঙ্গে ইউপি সদস্যদের সমন্বয়হীনতা এবং বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের উদাসীনতার কারণে চাল বিতরণ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে কার্ডধারী ও এলাকাবাসী।
জানা গেছে, ধর্মপাশা উপজেলা মহিলাবিষয়ক অধিদপ্তরের অধীন ভিজিডির আওতায় চামরদানি ইউনিয়নে ২২৬ জন ও বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নে ২৭৬ জন উপকারভোগী রয়েছেন। প্রতি কার্ডধারীর মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে চামরদানি ইউনিয়নে গত জুন, জুলাই ও আগস্ট মাসের এবং বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কোনো কারণ ছাড়াই জুলাই ও আগস্ট মাসের চাল বিতরণ করেননি। ফলে ওই দুটি ইউনিয়নের ভিজিডি কার্ডধারীদের জন্য বরাদ্দের প্রায় ৩৭ টন চাল মধ্যনগর খাদ্যগুদামে মজুদ রয়েছে বলে জানিয়েছেন খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অবিনাশ দাস। তিনি জানিয়েছেন, নির্ধারিত সময়ে বরাদ্দের ওই সব চাল না নেওয়ায় কৃষকের ধান সংগ্রহ কার্যক্রম কিছুটা ব্যাহত হয়।
চামরদানি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বলরামপুর গ্রামের ভিজিডি কার্ডধারী শেফালী বেগম, হাছনা হেনাসহ আরো অনেকেই জানান, নির্ধারিত সময়ে ভিজিডির চাল না পাওয়ায় পরিবারের লোকজনকে নিয়ে তাঁদের মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে।
চামরদানি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ওয়াসিল আহমেদ বলেন, ‘চেয়ারম্যানকে বারবার বলার পরও ভিজিডির চাল কেন বিতরণ করছেন না, তা জানি না। বিষয়টি ইউএনও স্যারকেও জানিয়েছি।’
বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ইউনুছ আলী বলেন, ‘চেয়ারম্যানের গাফিলতি ও উদাসীনতার কারণে ভিজিডির চাল বিতরণ হচ্ছে না। বিষয়টি ইউএনও স্যারকে একাধিকবার জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি।’
বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের কার্ডধারীদের মধ্যে কেন চাল বিতরণ করা হয়নি—এর কোনো সদুত্তর দিতে না পেরে ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিম মাহমুদ বলেন, ‘খুব দ্রুত চাল বিতরণ করা হবে।’
চামরদানি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জাকিরুল আজাদ মান্না বলেন, ইউপি সদস্যদের সঙ্গে সমন্বয়হীনতার কারণে চাল বিতরণ করা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘ওই দুটি ইউনিয়নের ভিজিডির চাল বিতরণের জন্য ডিও দেওয়া হয়েছে। কেন এখনো চাল বিতরণ করা হয়নি, সে বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখব।’ সূত্র : -কালের কণ্ঠ