স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার জয়নগর-মোহনপুর সড়কের পাশে সুরমা নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিনে বালু ডাম্পিং করায় নদী ভাঙ্গন ও সড়কটি ভেঙ্গে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকাবাসী। এছাড়াও শ্রমিকদের বঞ্চিত করে মেশিনে বালু ডাম্পিং করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বঞ্চিত শ্রমিকরাও। বুধবার সকালে বঞ্চিত বালু শ্রমিকরা শ্রমিকদের বদলে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করায় ক্ষোভ প্রকাশ করলে তাদের হয়ে কথা বলেন স্থানীয় যুবকেরা। এ ঘটনায় শ্রমিকদের হয়ে কথা বলায় তাদেরকে হুমকি ধমকি দিয়েছে কয়েকজন বালু ব্যবসায়ী।
বুধবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বরাবরে লিখিত আবেদন থেকে জানা যায়, মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. রইছ মিয়া ও তার আতœীয় স্বজনসহ কিছু ব্যবসায়ী দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন করে নদীর তীরে ডাম্পিং করছে। এতে নদী ভাঙ্গনসহ কয়েকটি গ্রামের চলাচলের একমাত্র সড়কটিও ভেঙ্গে যাচ্ছে। এ ঘটনায় সম্প্রতি মোহনপুর যুবকল্যাণ পরিষদের সদস্যবৃন্দ জেলা প্রশাসক বরাবরে ড্রেজার মেশিন বন্ধের আবেদন করলে প্রশাসন গত ৩ জুলাই ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে তিনটি অবৈধ ড্রেজার আগুনে পুড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় কয়েকজন ব্যবসায়ী যুবকদের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবরে তাদেরকে যুবকেরা ব্যবসায় বাধা দিচ্ছে এমন অভিযোগ করে। গত ৬ আগস্ট অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক উভয় পক্ষকে তার কার্যালয়ে ডেকে এনে অভিযোগের শোনানী করেন। শুনানিতে যুবকদের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীদের দায়েরকৃত অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অবৈধ ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলন করে নদী ও সড়ক ভাঙ্গনের চেষ্টা করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে উভয় পক্ষকে বিদায় করে দেন।
বুধবার সকালে ইউপি সদস্য রইছ মিয়া ও তার স্বজনরা প্রশাসনের আদেশ উপেক্ষা করে ড্রেজার মেশিন লাগিয়ে বালু উত্তোলন করতে থাকে। এসময় কাজে আসা শ্রমিকরা ড্রেজারের বদলে শ্রমিক দিয়ে বালু উত্তোলনের দাবি জানালে রইছ মিয়া ও তার স্বজনেরা শ্রমিকদের অশ্লীল ভাষায় গালাগালি করেন। শ্রমিকদের গালাগালি করায় স্থানীয় যুবক জাহাঙ্গীর আলম প্রতিবাদ করলে তার দিকে তেড়ে আসে রইছ মিয়া ও তার স্বজনরা। পরে খবর পেয়ে যুবসমাজের সদস্যরা এগিয়ে গেলে পালিয়ে যান এই ইউপি সদস্য।
এ ঘটনায় বুধবার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন মোহনপুর যুব কর্যাণ পরিষদের সহ সভাপতি ও মোহনপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি জনিক মিয়া। তিনি সকল অবৈধ ড্রেজার মেশিন বন্ধ করে নদী ও সড়ক রক্ষার দাবি জানান।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, ড্রেজার মেশিনে বালু উত্তোলনের আইনত কোন সুযোগ নেই। আমি যুবসমাজকে লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছি। অবশ্যই আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে কেউ কিছু করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।