1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:০১ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
জামালগঞ্জে নবাগত জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভা সিলেটে শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসারকে অপসারণের দাবিতে গণস্বাক্ষর কার্যক্রম ২৫০ শয্যা হাসপাতালে সেবার মান বাড়ানোর দাবিতে মতবিনিময় সুনামগঞ্জে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দোয়া ও মিলাদ বন্যার্তদের সহায়তায় সুনামগঞ্জে শিল্পকলা একাডেমির ব্যতিক্রমী ছবি আঁকার কর্মসূচি জগন্নাথপুরে শিক্ষিকা লাঞ্চিত: দোষীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতাবিরোধী সকল কালাকানুন বাতিলের দাবি সাবেক ছাত্রলীগ নেতা পান্নার মরদেহ হস্থান্তর করলো মেঘালয় পুলিশ কাদের সিদ্দিকী বললেন: বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ আর শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ এক নয় বাংলাদেশে সাম্প্রতিক বন্যায় ২০ লাখ শিশু ঝুঁকিতে : ইউনিসেফ

অধ্যক্ষের দক্ষ নেতৃত্বে বদলে যাচ্ছে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ

  • আপডেট টাইম :: রবিবার, ১১ নভেম্বর, ২০১৮, ২.৪৩ পিএম
  • ৪৪১ বার পড়া হয়েছে

শহীদনূর আহমেদ ::
নতুন উদ্যমে ও ও দক্ষ নেতৃত্বে বদলে যাচ্ছে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ। কলেজের সর্বত্র পরিবর্তনের হাওয়া লাগতে শুরু করেছে। এক সময় সংকটে হাবুডুবু খেতো প্রতিষ্ঠানটি। দাত্বিশীল অধ্যক্ষের অভাবে সংকট দূরূভূত করার বদলে নতুন করে সংকট সৃষ্টি হতো। আর দুর্নীতিতো ছিলই আষ্টেপৃষ্টে জড়ানো। সেই চেহারা আর বর্তমান নেই। এই কলেজের প্রাক্তন শিক্ষক নীলিমা চন্দ অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেবার পরই খোলনলচে পাল্টে যাচ্ছে প্রতিষ্টানটি। দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র ৫ মাসের মাথায় নানা দুনীতি বন্ধ করেছেন। যেসব খাতে দুর্নীতি হতো সেগুলো চিহ্নিত করে সংশ্লিষ্টদের কড়াভাবে সততার সাথে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাছাড়া আদর্শ একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলতে সংশ্লিষ্টদের ডেকে নিয়ে সুষ্ঠুভাবে কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন শুরুতেই। এখন প্রশাসনিক কাজেও গতি ও স্বচ্ছতা এসেছে। ক্যাম্পাসেও কমেছে বহিরাগতের আগমণ।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, অধ্যক্ষ নীলিমা চন্দ দায়িত্ব গ্রহণের সময় কালে কলেজের ভাবমূর্তি ও শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার মান উন্নয়নে নেয়া হয়েছে বহুমূখী উদ্যোগ। গত ৯ নভেম্বর তিনি কলেজে অভিভাবক সমাবেশ করে সুধীজনদের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। ইতোমধ্যে তার পরিকল্পনায় বাস্তবায়িত হয়েছে বেশকিছু উন্নয়ন কাজ । শুরুর দিকেই তিনি কলেজের শিক্ষক সংকট দূরীকরণে উদ্যোগ নেন। দৌড়ঝাপ শুরু করে কয়েকজন অভিজ্ঞ শিক্ষককে নিয়ে আসেন।
ইতোমধ্যে বদলী ও পদায়নের মাধ্যমে নতুন ১৫ জন শিক্ষক কর্মকর্তা যোগদান করেছেন বলে জানা গেছে। এতে দীর্ঘদিনের শিক্ষক সংকট অনেকটাই লাঘব হয়েছে বলে মনে করছেন কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। প্রশাসনিক কাজে ব্যবহারের জন্য সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে ১২ আসন বিশিষ্ট একটি টয়োটা হাইএচ গাড়ি ক্রয় করা হয়েছে। কলেজের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে প্রথমবারের মতো বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখতে পুরো কলেজ ক্যাম্পাসকে গোপন সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী শহীদ তালেব, গিয়াস, জগৎজ্যোতি ও আলী আসগর স্মরণে বিদ্যমান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিফলকের সংস্কার ও উন্নয়ন করা হয়েছে। কলেজে বহিরাগতদের অনুপ্রবেশ ঠেকাতে একাদশ শ্রেণী থেকে মাস্টার্স (শেষ পর্ব) পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত কলেজ ড্রেস কোড এবং সকল শ্রেণীর শিক্ষার্থীর আইডি কার্ড বাধ্যতামূলক করেছেন তিনি। পাশাপাশি কলেজে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির কর্মচারীদের জন্য নির্দিষ্ট পোশাকের ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসে বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আলাদাভাবে দুটি ওয়াটার পিউরিফায়ার স্থাপন করে বিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা নিশ্চত করেছে কলেজ প্রশাসন।
এক সময় প্রতি বছরের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন, শেসন ও পরীক্ষা ফিসসহ নানা ধরনের ফিস নেওয়া হতো। সেগুলো বছর শেষে ভাগ বাটোয়ারা করে নিতেন কয়েকজন। তিনি অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব নেবার পরই ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে নানা খাতের ফি কমিয়ে প্রয়োজনীয় ফি রেখেছেন। অতিরিক্ত ফিস নেওয়া থেকে সংশ্লিষ্টদের বারণ করেছেন। আদায়কৃত অর্থ খরচে রেজুলেশন করে সুষ্ঠুভাবে খরচ করার নির্দেশনা দিয়েছেন।
লোডশেডিং বিপর্যয়ের কারণে দীর্ঘদিন ধরেই ছাত্রীনিবাসে ভোগান্তির অভিযোগ ছিলো। বর্তমানে ছাত্রীদের পড়াশোনার সুবিধার্থে কলেজের ছাত্রী নিবাসে ‘সোলার প্যানেল’ স্থাপন করেছে কলেজ প্রশাসন। এর বাইরেও, কলেজের শিক্ষকদের পেশার মান উন্নয়নে বিষয়ভিত্তিক জ্ঞান, দক্ষতা, সৃজনশীলতা বৃদ্ধির জন্য সরকারি কলেজে ইন-হাউজ ফেকাল্টি ট্রেনিং প্রবর্তনের মাধ্যমে ঋড়পঁং এৎড়ঁঢ় উরংপঁংংরড়হ পদ্ধতিতে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে বর্তমানে কলেজের নিজস্ব ল্যাবে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের আইসিটি ব্যবহারিক ক্লাস করানো হচ্ছে। কলেজের নিরাপত্তা কর্মীদের জন্য কলেজের প্রবেশ পথে অস্থায়ী গার্ড রুম স্থাপন করা হয়েছে। সরকারি কলেজ প্রশাসনের এসব উন্নয়ন কাজে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন কলেজের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। জেলার এই প্রাচীনতম শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিকে আরো সামনের দিকে এগিয়ে নিতে কলেজ প্রশাসনের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এমনটাই প্রত্যাশা করছেন তারা।
হাবিবা আক্তার, দোলাল মিয়া, সোহানুর রহমান, তিন্নি , আফছানা বেগম, সোহেল আহমদ, আবু সাঈদ কলেজের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী। তারা বলেন, আগের চেয়ে বর্তমানে কলেজের পড়াশুনার মান অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রশাসনিক কাজেও স্বচ্ছতা এসেছে। এখন নিয়মিত ক্লাস হচ্ছে। কলেজ ড্রেস বাধ্যতামূলক করায় বর্হিরাগতদের আনাগোন কম দেখা যাচ্ছে। সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনায় কলেজ ক্যাম্পাসের শৃংখলা ফিরে এসেছে। কলেজে এখন শৃঙ্খলা ফিরেছে বলে জানান তারা।
১৯৪৪ সালের ১ জুলাই ‘সুনামগঞ্জ কলেজ’ নামে প্রতিষ্ঠিত হওয়া এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ১৯৮০ সালের ৩ মার্চ জাতীয়করণের মাধ্যমে সরকারি কলেজের মর্যাদা লাভ করে। পরবর্তীতে ১৯৯৯ সালে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজকে অনার্স কলেজে উন্নীত করার ঘোষণা করা হয়। এরপর ২০০১ সালে বাংলা, দর্শন, ইতিহাস, এবং হিসাববিজ্ঞান এই ৪টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু হয়। নানাবিধ সমস্যা আর সংকট নিয়েই যাত্রা শুরু হয় কলেজটির। সূচনা লগ্ন থেকে নানান সমস্যা আর সংকটের মধ্য দিয়েই অতিবাহিত হয়ে আসছিলো কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রম। চলতি বছরের গত ২৬ মে কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুস ছত্তারের অকাল মৃত্যুতে অভিভাবক শূণ্য হয়ে পড়ে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজ। এই শূণ্যতায় কলেজের প্রশাসনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়। পরবর্তীতে গত ৭ জুন এই কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন অধ্যক্ষ নীলিমা চন্দ। সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদানের পর থেকে তিনি দৃঢ়তার সাথে কলেজের প্রশাসনিক স্থবিরতা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হন। কলেজের শিক্ষক-স্টাফদের মধ্যে সমন্বয় করে কার্যক্রম চালাচ্ছেন আন্তরিকার সাথে।
কলেজের অধ্যক্ষ নীলিমা চন্দ বলেন, ‘আমি আমার অবস্থান থেকে সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজের সার্বিক উন্নয়ন, সমস্যা ও সংকট নিরসনে সর্বাত্মক চেষ্টা করে যাচ্ছি। তবে এখনো পর্যন্ত কলেজের একাডেমিক ভবন ও শিক্ষক সংকট দূর হয়নি। এনাম কমিশনের প্যাটার্ন অনুযায়ী যদি আমাদের সাব প্যাটার্ন হয় তবে সেটা সুনামগঞ্জের জন্য সবচেয়ে বড় উপকার হবে। কারণ আমাদের ১০ টা বিষয়ে অনার্স এবং ৪টা বিষয়ে মাস্টার্স চালু আছে। ভবিষ্যতে বাকি ৬টা বিষয়ে মাস্টার্স এবং ৩টা বিষয়ে অনার্স চালু করার জন্য আবেদন করেছি। মাস্টার্স যদি হয়ে যায়, সেক্ষেত্রে প্রতি বিভাগে ১২ জন করে শিক্ষক থাকতে হয় এবং অনার্সের ক্ষেত্রে ৭ জন। কিন্তু আমাদের এখানে আছে মাত্র ৪ জন করে শিক্ষক। মার্স্টাস কলেজ হওয়া স্বত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত ডিগ্রী কলেজের প্যাটার্ন অনুযায়ী চলছে শিক্ষা কার্যক্রম।
তিনি জানান, প্রতি পাঠ পর্বে আমাদের ৩৫ টা শেণিকক্ষ প্রয়োজন সেক্ষেত্রে আমাদের শ্রেণিকক্ষ আছে মাত্র ১৪টা। সেজন্য আমরা পর্যাপ্ত ক্লাস নিতে পারছিনা। শিক্ষক সংকট এবং শ্রেণিকক্ষ সংকট দূর করা গেলে আমাদের প্রান্তিক জেলা সুনামগঞ্জ শিক্ষাক্ষেত্রে আরো অনেক দূর এগিয়ে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’
তিনি এ ব্যাপারে সরকারের নীতি নির্ধারণী মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ ও সুনামগঞ্জের ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। কলেজের আরো উন্নয়ন, অবকাঠামোগত সমস্যার সমাধানসহ নানা ক্ষেত্রে সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন তিনি।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!