1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১৮ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
পৃথিবীকে গুরুত্ব দিয়ে এডিবির সেফগার্ড পলিসি সংশোধনের দাবিতে সুনামগঞ্জে অভিনব কর্মসূচী পরকীয়ার অভিযোগে স্ত্রীকে খুন করার ঘটনায় স্বামীর যাবজ্জীবন চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২.২ ডিগ্রি অব্যাহত! সুনামগঞ্জে প্রাণ ও প্রকৃতির সুরক্ষায় ছাত্রলীগের বৃক্ষরোপন কার্যক্রম শুরু গরমে অতি উচ্চ ঝূকিতে শিশুরা, ইউনিসেফের সতর্কতা কক্সবাজারে কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে জানতে চান হাইকোর্ট সোনার দাম ২১০০ টাকা কমলো প্রতি ভরিতে সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ভুতুড়ে বিলে দুশ্চিন্তায় দিনমজুর কবীর দিরাই-শাল্লায় উপজেলা নির্বাচনে প্রতীক পেলেন ২৯ প্রার্থী সুনামগঞ্জের চার উপজেলায় ৫৫জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ

অরিত্রীর আত্মহননের দায় নিতে হবে আমাদের।। মোঃ রইসুজ্জামান

  • আপডেট টাইম :: বুধবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২.৪৮ এএম
  • ২৭২ বার পড়া হয়েছে

একুশ শতকের এই সময়ে দাঁড়িয়ে যখন আমরা মাহসমারোহে বিশ্বব্যাপী নিজেদের প্রশংসা কীর্তন করছি ঠিক তখনই আমাদের এমন ঘটনার সাক্ষী হতে হয়৷ এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই আমাদেরকে ভাবিয়ে তুলে, হৃদয় ক্ষতবিক্ষত হয়, প্রশ্ন জাগে৷ যে মেয়েটি হতে পারতো এদেশের আশার আলো, তাকেই কীনা আমরা ঠেলে দিলাম দূর নক্ষত্রের দেশে৷ যে আর কখনও তার স্বপ্ন ফেরি করে বড়াবে না আমাদেরই চতুর্পাশে৷ আমরাই নিবীয়ে দিলাম সেই প্রদীপ!!!
বলছিলাম ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের নবম শ্রেনীর ছাত্রী অরিত্রীর কথা৷ যাকে অকালে হারিয়েছি আমরা, যার জন্য আজ শোকে বিহবল সবাই৷ সমবেদনা, তদন্ত কমিটি, আন্দোলন ইত্যাদি কতকিছু করতে মহাব্যাস্ত চারপাশ৷ এতে কি ফিরে আসবে পিতার অপমান সইতে না পেরে আত্মহননের পথ বেছে নেয়া মেয়েটি? তার সাজানো স্বপ্নের বাগান ভরবে কি ফুলে ফুলে??
আমরা সবাই জানি, যত কিছুই ঘটুক না কেন একসময় মনে হবে সবই ছিল বৃথা আস্ফালন৷ আজ হয়তোবা আবেগ আর বিবেক মিলে আমাদের গলা সরগরম৷ কিন্তু কাল থেকে আবার ‘যেই লাউ সেই কদু’ অবস্থা৷ সেখানে অরিত্রী নামের কারো কথা আমাদের মনে থাকার মতো ব্যাপার নয়৷ কারণ অতিথেও থাকে নি৷ তনু, আফসানারাও অরিত্রীর মতো স্বপ্নজাল বুনেছিল৷ কিন্তু সেই স্বপ্নের অকাল মৃত্যুর পর আমরা ভুলে গেছি তাদের৷ সেই মৃত্যুর প্রতিশোধ আমরা নিতে পারি নি৷ কারণ, সেখানে বিচারের বানী নিরবে নিভৃতে কেঁদেছে৷ যার ফল স্বরূপ আরও একটি হৃদয় বিদারক ঘটনার সাক্ষী হলো এই বাংলার জনগণ অরিত্রী নামক একটি নক্ষত্রের অকাল পতনের মধ্য দিয়ে৷
অতিথের ঘটনাপ্রবাহ থেকে অরিত্রীর আত্মহত্যার ব্যাপারটি সম্পূর্ণ আলাদাই বটে৷ মেধায় মননে বেড়ে ওঠা মেয়েটি সইতে পারে নি তার নিজের সামনে পিতাকে অপমান করার দৃশ্য৷ নিশ্চয়ই সে ভেবেছে তার জন্ম হয় নি নিজের জন্মদাতাকে অপমানিত করার জন্য৷
কিশোর মেয়েটি নিজের বিবেক কাজে লাগিয়ে যে ভাবনা ভেবেছিল সেই ভাবনা কি তাকে গড়ে তুলার কারিগরেরা ভেবেছিলেন একবারও? উত্তর হবে, নিশ্চয়ই না৷ কারণ যদি তারা ভাবতেন তাহলে অবশ্যই এমন ঘটনা ঘটতো না৷ এখন প্রশ্ন জাগে, আসলে সেই মহান শিক্ষকেরা কি ভাবেন??
এই সমাজে সবচেয়ে আলোকিত মানুষ হিসেবে সবার উপরেই স্থান হওয়ার কথা শিক্ষকদের৷ কারণ, শিক্ষকদের বলা হয় মানুষ গড়ার কারিগর৷ একজন কামার যেভাবে লোহাকে পুড়িয়ে-পিটিয়ে ধারালো যন্ত্রপাতি তৈরি করেন কিংবা একজন কুমোর যেভাবে মাটি টিপে টিপে বাহারি মৃৎসামগ্রী তৈরি করেন তাদের চাইতেও কঠিন কাজটি করতে হয় শিক্ষকদের৷ কারণ তিনি মানুষের মনোজগতকে পুড়িয়ে-পিটিয়ে টিপে টিপে পরিপূর্ণতা প্রদান করেন৷ আর এ কাজ করতে গিয়ে প্রতিটি শিক্ষার্থীর মনোজগতে প্রবেশ করতে হয় তাকে৷ সুতরাং তিনি বুঝেন তার ছাত্রের সবলতা, দুর্বলতা সম্পর্কে এবং সে অনুযায়ী তিনি তার প্রচেষ্টা চালাতে থাকেন৷ কিন্তু কোন ছাত্রের আচরণজনিত কারণে নিশ্চয়ই ওই ছাত্রের অভিভাবককে অপমান করার এখতিয়ার বা অধিকার তিনি রাখেন না৷ সর্বোচ্চ অবগত করা এবং প্রাতিষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন৷ তাহলে ভিকারুননিসায় এমন হলো কেন???
এর একমাত্র সদুত্তর হতে পারে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার দৈনদশা৷ স্বাধীনতার অর্ধশতক পার হলেও ঘুনেধরা বহুধাবিভক্ত শিক্ষা ব্যবস্থা পরিপক্বতা অর্জন করতে পারে নি৷ পড়াশোনার ব্যায়, পাঠদান পদ্ধতি, শিক্ষকদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ প্রদানের মতো ব্যাপারগুলো এখনও প্রশ্নবিদ্ধ৷
পড়াশোনার ব্যায়, পাঠদান পদ্ধতি প্রতিষ্ঠানভেদে ভিন্নরকম হওয়ায় কিছু অসাধু শিক্ষক ও কর্মকর্তা সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিজেদের ব্যাক্তিগত স্বার্থ হাসিল করার পায়তারায় ব্যস্ত থাকেন৷ তারা নিজেদের দায়িত্ব কর্তব্যের কথা ভুলে গিয়ে বিবেককে জলাঞ্জলি দেন৷ আর এর সাথে যোগসাজশ রক্ষা করে রাগব বোয়ালেরা ফায়দা লুটতে থাকে৷ যার ফলে ব্যথিত হয়ে উচ্চারণ করতে হয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখন ব্যবসায়িক আস্তানা ও কৃতদাস তৈরির কারখানায় পরিণত হচ্ছে৷ শিক্ষার বাণিজ্যিক মান এতই বেড়েছে যে, নামে-বেনামে ফি আদায় করে শিক্ষার অধিকারকে করা হচ্ছে ভূ-লুণ্ঠিত৷ যার প্রমাণ আমরা দেখি, সাম্প্রতিক সময়ে এই বেপরোয়াপনা রোধ করতে দুদকের হস্তক্ষেপ৷
শিক্ষাব্যবস্থার এই দৈনতার জন্যই অরিত্রীকে স্বচক্ষে দেখতে হয় পিতার অপমান, শুনতে হয় হৃদয় ক্ষতবিক্ষত করা কথামালা৷ অবশেষে সিদ্ধান্ত নিতে হয় চির বিদায়ের৷
এই বিদায়কে আমরা আত্মহত্যা বলি কি করে বলুন তো?? এটি তো পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডই বটে৷ যার জন্য আমরা কোনভাবেই প্রস্তুত ছিলাম না৷ আর ভবিষ্যতে এমন ঘটনা দেখার জন্যও প্রস্তুত নই৷
এখন কথা হলো, এই যে হত্যাকান্ড এর দায় নেবে কে?? উত্তরে বলতে হবে, জাতি হিসেবে আমরা এর দায় কোনভাবেই এড়াতে পারি না৷ সুতরাং আমাদেরকেই দায়িত্ব নিতে হবে এমন সম্ভাবনার অপমৃত্যু রোধ করার৷ সেজন্য অরিত্রীকে মৃত্যুর প্ররোচনা দানকারী শিক্ষকদের যথোপযুক্ত বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির সুবন্দোবস্ত করতে হবে৷ সেইসাথে শিক্ষা ব্যবস্থায় আনতে হবে প্রয়োজনীয় সংস্কার৷ শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ রোধ করে বৈষম্যহীন, একমুখী ও বিজ্ঞানভিত্তীক শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে৷ তবেই তনু, আফসানা, অরিত্রীরা আমাদের ক্ষমা করবে৷
লেখকঃ সহ-সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, কেন্দ্রীয় কমিটি৷

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!