অনলাইন ::
স্থানীয় সরকারের সাম্প্রতিক কয়েকটি নির্বাচনে অনিয়মের যে ধরনের অভিযোগ উঠেছে, সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তেমন কিছু ঘটবে না বলেই রিটার্নিং কর্মকর্তা আলীমুজ্জামানের বিশ্বাস।
ভোটের আগের দিন রোববার নগরীর মেন্দিবাগ এলাকায় নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আলীমুজ্জামান বলেন, “আমার দৃষ্টিতে আমার নির্বাচনী এলাকায় সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় আছে। একটি চমৎকার রাজনৈতিক সহাবস্থানের সংস্কৃতি এখানে বিরাজমান। এখানে নির্বাচনে পোলিং এজেন্টরা যেতে পারবে না এমন না, সবাই যেতে পারবে। আগের নির্বাচনের মত এবারের নির্বাচন হবে না ইনশাআল্লাহ।”
সোমবার রাজশাহী ও বরিশালের সঙ্গে একই দিনে সিলেট সিটি করপোরেশনের ভোট হবে। প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীসহ মোট সাতজন এ নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন।
বিএনপি নেতারা অভিযোগ করে আসছেন, সম্প্রতি গাজীপুর ও খুলনা সিটির নির্বাচনে ‘ব্যাপক অনিয়ম ও জালিয়াতির’ মাধ্যমে জয় পেয়েছে ক্ষমতাসীনরা। এখন ‘সেই কৌশল’ তারা সোমবারের তিন সিটির ভোটেও কাজে লাগাতে চাইছে।
এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আলীমুজ্জামান বলেন, সিলেটে ভোট নিয়ে কোনো ‘শঙ্কার তথ্য’ তিনি পাননি।
“নির্বাচনের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি প্রায় শেষ। এখন ভোটকেন্দ্রে মালামাল পৌঁছানো হচ্ছে।”
সিলেটে প্রার্থীদের মধ্যে ‘সুসম্পর্ক’ আছে দাবি করে এই নির্বাচনী কর্মকর্তা বলছেন, নির্বাচন আয়োজনে এখন পর্যন্ত বড় কোনো ‘চ্যালেঞ্জ’ তিনি দেখছেন না।
“কোনো অ্যাঙ্গেল থেকেই আমরা চ্যালেঞ্জের কোনো আভাস পাইনি। আমার কাছে যেটি মনে হয়েছে, দলীয় ও নির্দলীয় সব প্রার্থীর মধ্যেই একটি ব্যক্তিগত সুসম্পর্ক রয়েছে। যেটি নির্বাচনের জন্য একটি আশার দিক।”
গ্রেপ্তার-হয়রানি বন্ধে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনার পরও বিএনপির নেতাকর্মীদের পুলিশ গ্রেপ্তার করছে বলে অভিযোগ করে আসছে দলটি। শনিবার রাতেও বিএনপির প্রার্থী আরিফুল হক চৌধুরীর নির্বাচনী প্রচার কমিটির সদস্য সচিবকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়েও সাংবাদিকরা রিটার্নিং কর্মকর্তার দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
জবাবে আলীমুজ্জামান বলেন, নির্বাচনের বিষয়টি ঠিক ‘ওইরকম নয়’।
“এখানে গ্রেপ্তারের বিষয়ে বলা হয়েছে যে নির্বাচনের পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে করতে হবে। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে যদি আইনগত কোনো ব্যাপার থেকে থাকে সেটা ভিন্ন। সিটি করপোরেশন এলাকায় গ্রেপ্তার বা অন্য কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিতে পুলিশকে যদি পুরোপুরি নিষেধ করে দেই তাহলে আশপাশের যতো ক্রাইম সব এখানে এসে জড়ো হবে। আমাদের ভোটারদের নিরাপত্তার বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে।”
সাংবাদিকরা ভিডিও করতে পারবেন না
রিটার্নিং কর্মকর্তা বলেন, সাংবাদিকরা ভোটকেন্দ্রের ভেতরে যেতে পারবেন, কিন্তু ভিডিও নিতে পারবেন না।
“আপনারা স্ন্যাপ তুলতে পারবেন, নট ভিডিও। গোপন কক্ষে তো আপনি যেতেই পারবেন না। আমাদের নির্বাচন কমিশনার মহোদয় যেটা বলে গেছেন, ভিডিও আপনারা বাইরে করবেন, কিন্তু ভেতরের শুধু স্ন্যাপ নিতে পারবেন। ভোট গণনার সময় আপনারা ভিডিও করতে পারবেন না।”
উপস্থিত সাংবাদিকরা এ সময় রিটার্নিং কর্মকর্তাকে বলেন- সংবাদ সংগ্রহ ও প্রচার বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের দেওয়ায় নির্দেশনায় ভিডিও ধারণে কোনো বাধার কথা বলা নেই। তারপরও ভোটকেন্দ্রের ভিডিও নিতে বাধা কোথায়?
এর উত্তরে আলীমুজ্জামান বলেন, “কমিশনার মহোদয়ের নির্দেশনা আছে। আমি কোনো মন্তব্য করতে চাইছি না।”
একজন সাংবাদিক এ সময় বলেন- বিষয়টি স্পষ্ট না করলে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে। তাছাড়া অন্যায়ভাবে কেউ ব্যালটে সিল মারলে সেই ভিডিও নিতে সমস্যা কোথায়?
রিটার্নিং অফিসার শুরুতে এ প্রশ্নও এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে বার বার প্রশ্নের মুখে তিনি বলেন, “এটা হয়ে যাবে।”
গণমাধ্যমকর্মীদের বিষয়ে ইসির নির্দেশনার অনুলিপি প্রিজাইডিং অফিসারদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন সাংবাদিকরা।
আলীমুজ্জামান তখন বলেন, একটি করে অনুলিপি তাদের পাঠিয়ে দেওয়া হবে।