1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
পৃথিবীকে গুরুত্ব দিয়ে এডিবির সেফগার্ড পলিসি সংশোধনের দাবিতে সুনামগঞ্জে অভিনব কর্মসূচী পরকীয়ার অভিযোগে স্ত্রীকে খুন করার ঘটনায় স্বামীর যাবজ্জীবন চুয়াডাঙ্গায় তাপমাত্রা ৪২.২ ডিগ্রি অব্যাহত! সুনামগঞ্জে প্রাণ ও প্রকৃতির সুরক্ষায় ছাত্রলীগের বৃক্ষরোপন কার্যক্রম শুরু গরমে অতি উচ্চ ঝূকিতে শিশুরা, ইউনিসেফের সতর্কতা কক্সবাজারে কতজন রোহিঙ্গাকে ভোটার করা হয়েছে জানতে চান হাইকোর্ট সোনার দাম ২১০০ টাকা কমলো প্রতি ভরিতে সুনামগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ভুতুড়ে বিলে দুশ্চিন্তায় দিনমজুর কবীর দিরাই-শাল্লায় উপজেলা নির্বাচনে প্রতীক পেলেন ২৯ প্রার্থী সুনামগঞ্জের চার উপজেলায় ৫৫জন প্রার্থীর মনোনয়ন বৈধ

বীরাঙ্গনা মুক্তিযোদ্ধা কাকন বিবি আর নেই: খেতাবের আক্ষেপ নিয়েই বিদায়

  • আপডেট টাইম :: বৃহস্পতিবার, ২২ মার্চ, ২০১৮, ৪.৫৯ এএম
  • ২৮০ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার:
একাত্তরে পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ সমরে অংশ নেওয়া খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কাকন বিবি মারা গেছেন। সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাত সোয়া ১১টার দিকে এই বীরপ্রতীকের মৃত্যু হয় বলে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম মাহবুবুল হক জানিয়েছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ১০৩ বছর। তিনি এক মেয়ে রেখে গেছেন।
কাকন বিবি’র স্বজন ইনসান আলী জানান,, নিউমোনিয়া, শরীরের লবণ কমে যাওয়াসহ শ্বাসকষ্টের কারণে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) কাকন বিবিকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল। বুধবার রাত সোয়া ১১টার দিকে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
জানা যায়, গত সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে দোয়ারাবাজার থেকে সিলেট নিয়ে আসা হয়। পরে তাকে হাসপাতালের তৃতীয় তলার ১০ নম্বর কেবিনে ভর্তি করা হয়। রাতে অবস্থার অবনতি হলে তার আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।
সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে দায়িত্বরত ডা. তুহিন জানান, কাকন বিবি দীর্ঘদিন ধরে নানা রোগে ভুগছিলেন। পূর্বের ব্রেনস্টোকের সমস্যার সাথে নিউমোনিয়া, শরীরে লবণের পরিমাণ কমাসহ শ্বাসকষ্টও ছিল।
মুক্তিযোদ্ধা কাকন বিবি’র সাথে হাসপাতালে থাকা মেয়ে সখিনা বলেন, তিনদিন ধরে জ্বরে ভুগছিলেন মা। এরপর থেকে তার কথা বলা বন্ধ হয়ে যায়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দোয়ারাবাজার উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হয়। তখনই ইউএনও তাঁকে দ্রুত ওসমানী হাসপাতালে নিয়ে আসতে আর্থিক সহযোগিতাসহ সবধরনের সহযোগিতা করেন।
সখিনা আরো বলেন, গত বছরের ২১ জুলাই ব্রেনস্টোক করেন তিনি। এরপর থেকে শারীরিক অবস্থা ভালো যাচ্ছিল না।
জানা গেছে, ভারতের খাসিয়া পাহাড়ের পাদদেশে খাসিয়া সম্প্রদায়ের এক পরিবারে জন্ম কাকন বিবির। ১৯৭০ সালে দিরাই উপজেলার শহীদ আলীর সঙ্গে বিয়ে হয়। বিয়ের পর নাম পরিবর্তিত হয়ে নুরজাহান বেগম করা হয়। তার বর্তমান বসতি ছিল দোয়ারাবাজার উপজেলার লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের জিরাগাঁও গ্রামে। কাকন বিবি মাত্র তিন দিনের শিশু কন্যা সন্তান সখিনাকে রেখে যুদ্ধে চলে যান। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর বিপক্ষে মুক্তিবাহিনীর হয়ে শুধু গুপ্তচর হিসেবেই কাজ করেননি, করেছেন সম্মুখযুদ্ধও। মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য অবদানের জন্য তাকে বীরপ্রতীক খেতাব দেওয়া হয়।
কন্যাসন্তান জন্ম দেওয়ার কারণে স্বামীর সঙ্গে কাকন বিবির প্রথম সংসার ভেঙে যায়। পরবর্তীতে ইপিআর সৈনিক মজিদ খানের সঙ্গে কাকন বিবির বিয়ে হয়। মজিদ তখন কর্মসূত্রে সিলেট ইপিআর ক্যা¤েপ থাকতেন। দুই মাস সিলেটে স্বামীর সঙ্গে বসবাস করার পর তিনি আগের স্বামীর ঘর থেকে মেয়ে সখিনাকে নিয়ে আসেন। মেয়েকে নিয়ে এসে তিনি স্বামীকে খুঁজে পাচ্ছিলেন না। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, স্বামী বদলি হয়ে দোয়ারাবাজার সীমান্ত এলাকার কোনো এক ক্যা¤েপ আছেন। সীমান্তবর্তী জিরাগাঁও গ্রামে শহীদ আলীর আশ্রয়ে মেয়েকে রেখে দোয়ারাবাজারের টেংরাটিলা ক্যা¤েপ যান তিনি।
১৯৭১ সালের জুন মাস তখন। পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে ধরা পড়েন। তাদের বাংকারে দিনের পর দিন অমানুষিকভাবে নির্যাতন সহ্য করতে হয় কাকনকে। এরপর তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তখনই কাকন স্বামীকে পাওয়ার আশা ত্যাগ করে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে যুদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন।
জুলাই মাসে তার সঙ্গে দেখা হয় স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের। মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী তার সঙ্গে সেক্টর কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মীর শওকতের দেখা করিয়ে দেন। তার ওপর দায়িত্ব পড়ে গুপ্তচর হিসেবে বিভিন্ন তথ্য জোগাড়ের। কাকন বিবি শুরু করেন পাকিস্তানিদের কাছ থেকে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা। তার সংগৃহীত তথ্যের ওপর ভিত্তি করে মুক্তিযোদ্ধারা আক্রমণ চালিয়ে সফল হন।
গুপ্তচরের কাজ করতে গিয়েই দোয়ারাবাজার উপজেলার বাংলাবাজারে পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে ফের ধরা পড়েন তিনি। এবার একনাগাড়ে ৭ দিন পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকাররা তাকে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। লোহার রড গরম করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছেঁকা দেয়। মৃত ভেবে অজ্ঞান কাকন বিবিকে পাকিস্তানি বাহিনী ফেলে রেখে যায়। তাকে উদ্ধার করে বালাট সাবসেক্টরে নিয়ে আসা হয়। সুস্থ হয়ে তিনি আবার ফিরে আসেন বাংলাবাজারে। অস্ত্র চালনায় প্রশিক্ষণ নেন। মুক্তিযোদ্ধা রহমত আলী তাকে প্রশিক্ষণ দেন। পরবর্তীকালে তিনি সম্মুখ যুদ্ধে আর গুপ্তচর উভয় কাজই শুরু করেন।
কাকন বিবি প্রায় ২০টি যুদ্ধে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে বীরপ্রতীক উপাধিতে ভূষিত করার ঘোষণা দেন। কিন্তু তার খেতাবটি কার্যকর হয়নি। এই আক্ষেপ নিয়েই বিদায় নিলেন তিনি।হ

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!