স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জে আঞ্চলিক হাওর কনভেনশনে বক্তারা বলেছেন, ফসল হারিয়ে নিঃস্ব কৃষকদের এখন উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ ধরতে দিচ্ছেনা ইজারাদাররা। জলমহালের সুনির্দিষ্ট সীমানা চিহ্নিত না করায় দাপুটে ইজারাদাররা এই সুযোগে পুরো হাওরে আধিপত্য সৃষ্টি করে কৃষকদের জাল ও নৌকা কেড়ে নিচ্ছে। অনেককে নির্যাতনের পাশাপাশি মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। বক্তারা বলেন, হাওরের জলমহাল ইজারা সম্পূর্ণ বেআইনী। ইজারাপ্রথা বিলুপ্ত করে টোকেন মানি দিয়ে সারা বছর মৎস্যজীবিদের মাছ ধরার সুযোগদানের আহ্বান জানান।
শুক্রবার সুনামগঞ্জ শহীদ আবুল হোসেন মিলনায়তনে বাসদ মার্কসবাদী সিলেট অঞ্চল’র উদ্যোগে ১২ দফা দাবিতে অনুষ্ঠিত আঞ্চলিক হাওর কনভেনশনে এসব বলেন বক্তারা। কনভেনশনে বক্তব্য রাখেন, বাসদের কেন্দ্রীয় কর্ম পরিচালনা কমিটির সদস্য কমরেড শুভাংশু চক্রবর্তী, জল ও পরিবেশ গবেষণা ইন্সটিটিউটের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক, কমরেড আহসানুল হাবিব, কমরেড শীলা রায়, অ্যাডভোকেট বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু, শিক্ষাবিদ চিত্তরঞ্জন তালুকদার, উজ্জ্বল রায়, সাংবাদিক পঙ্কজ দে, শামস শামীম প্রমুখ।
হাওর কনভেনশনের প্রধান আলোচনা প্রকৌশলী ম. ইনামুল হক বলেন, মৎস্যজীবিরা জানেনা উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছধরা তাদের আইনগত অধিকার। কিন্তু এই অধিকার ভোগ করতে গিয়ে তাদেরকে মামলা হামলা দিয়ে নির্যাতন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ জলমহাল নীতিমালা অনুযায়ী স্থানীয় প্রশাসন হাওরাঞ্চলে যে পক্রিয়ায় জলমহাল ইজারা দেয় তা বেআইনী। নীতিমালায় ইজারার বদলে টোকেন মানি দিয়ে মাছ ধরার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান যোগসাজশে মৎস্যজীবিদের বঞ্চিত করে ব্যবসায়ীদের দিয়ে বেআইনি ইজারা দিচ্ছে। টোকেন মানি দিয়ে মাছধরার অধিকার দিলে ইজারার চেয়েও আরো বেশি রাজস্ব পাবে সরকার। তিনি আরো বলেন, পুলিশ মাছ ধরার কারণে যে মামলা দেয় জলমহাল নীতিমালা অনুসারে তা বেআইনী। এ বিষয়ে মৎস্যজীবী ও কৃষকদের সচেতন হবার আহ্বান জানান তিনি।
বাসদ মার্কসবাদী সিলেট অঞ্চল হাওর অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা, কৃষিঋণ মওকুফ ও স্থগিত, শষ্যবীমা চালু, জলমহালের ইজারা বাতিল, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য রেশনিং চালুসহ ১২ দফা দাবিতে এই কনভেশনের আয়োজন করে। কনভেনশনে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ কৃষকরা অংশগ্রহণ করেন।