ধর্মপাশা প্রতিনিধি ::
ধর্মপাশা উপজেলা সদরের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রী (১৪) গতকাল বুধবার বাল্যবিয়ে থেকে রক্ষা পেয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামুন খন্দকারের হস্তক্ষেপে ওই বাল্যবিয়েটি বন্ধ হয়েছে।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধর্মপাশা সদর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দা ও ধর্মপাশা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণিতে পড়–য়া ওই ছাত্রীটির সঙ্গে পাশের ইউনিয়নের এক গ্রামের যুবকের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা গতকাল বুধবার বেলা দুইটায় সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। স্থানীয় এক সাংবাদিকের মাধ্যমে এই বাল্যবিয়ের আয়োজনের খবর পেয়ে গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মামুন খন্দকার ওই ছাত্রীটির বাড়ি যান। তিনি সেখানে গিয়ে দেখতে পান ওই ছাত্রীটির গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান উপলক্ষে পুরো বাড়িজুড়ে আলোকসজ্জা করা রয়েছে। এ সময় ইউএনও ওই ছাত্রীটির বাবা-মাকে বাল্যবিয়ের আয়োজন বন্ধ করতে বললে তাঁরা ইউএনও’র হাতে ওই মেয়েটির একটি ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ তুলে দেন। এই সনদ অনুযায়ী মেয়েটির বয়স ২০বছরেরও উপরে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এ সময় এই সনদ নিয়ে সেখান থেকে চলে আসেন এবং বুধবার সকালে ওই ছাত্রীটির বাবা-মাসহ ছাত্রীটিকে তাঁর কার্যালয়ে আসতে বলা হয়। গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ওই ছাত্রীটি তাঁর বাবা মাকে নিয়ে ইউএনওর কার্যালয়ে আসেন। বিভিন্ন প্রশ্ন ও কথাবার্তার বলার এক পর্যায়ে ছাত্রীটির মা এই ভুয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করার কথা ইউএনও’র কাছে স্বীকার করেন এবং এই জন্য ক্ষমা চান। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বাল্যবিয়ের কুফল তুলে ধরলে মেয়েটির বাবা-মা তাঁদের মেয়েকে ১৮ বছর বয়সের আগে বিয়ে দেবেন না বলে লিখিতভাবে অঙ্গীকার করেন।
ওই ছাত্রীটির মা বলেন, মেয়েডা দেখতে হুনতে বড় অইছে, ভালা একটা জামাই পাইয়া বিয়ার আয়োজন করছিলাম। অহন বুজতাম হারছি এই বয়সও বিয়া দিলে আমার মেয়েডার জীবনডাই ধ্বংস অইয়া যাইত। অহন ১৮বছর না অইলে আমার মাইয়াওে কুনু ছেলের কাছে বিয়া দিতাম না।
ইউএনও মো. মামুন খন্দকার বলেন, বাল্যবিয়ে রাষ্ট্রীয় আইনে কোনো স্বীকৃতি নেই। স্থানীয় এক গণমাধ্যমকর্মীর সহায়তায় এই বাল্যবিয়ে বন্ধ করা সম্ভব হয়েছে।