হাওর ডেস্ক:
সুনামগঞ্জের ঝুমন দাস সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ব্যবহার না করার শর্তে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সুনামগঞ্জের শাল্লার ঝুমন দাশ আপন। রোববার (১৩ নভেম্বর) ঝুমনের স্ত্রী সুইটি রাণী দাস জামিনের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ ঝুমন দাশ আপনকে জামিন দেয়।
ফেসবুকে ‘উসকানিমূলক’ পোস্ট শেয়ার দেয়ার অভিযোগে গত ৩০ আগস্ট সকালে ঝুমন দাসকে হেফাজতে নেয় শাল্লা থানা পুলিশ। প্রায় ১২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার সলঙ্গা থানার হাটিকুমরুল ইউনিয়নের নবরত্ন মন্দিরের গেটে ঝোলানো মসজিদের দানবাক্সের একটি ছবি ভাইরাল হয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। হেঁটে দেশ পরিভ্রমণে নামা এক ব্যক্তি ছবিটি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করেন। সেই ছবিটি আরো অনেকের সঙ্গে শেয়ার করে কেবল গ্রেপ্তার হন ঝুমন দাস আপন।
এর আগে গত বছরের ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে ‘শানে রিসালাত সম্মেলন’ নামে হেফাজতের একটি সমাবেশের আয়োজন করে হেফাজতে ইসলাম। এতে হেফাজতে ইসলামের তৎকালীন আমির জুনায়েদ বাবুনগরী ও যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হক সাম্প্রদায়িক বক্তব্য দেন।
এই সমাবেশের পরদিন ১৬ মার্চ মামুনুল হকের সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন ঝুমন দাস। স্ট্যাটাসে তিনি মামুনুলের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের অভিযোগ আনেন।
পরদিন কয়েক হাজার লোক মাথায় হেফাজতের পট্টি বেধে লাঠিসোঁটা নিয়ে মিছিল করে হামলা চালায় নোয়াগাঁও গ্রামে। তারা ঝুমন দাসের বাড়িসহ হাওরপারের হিন্দু গ্রামটির প্রায় ৯০টি বাড়ি, মন্দির ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
এরপর ২২ মার্চ ঝুমনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন শাল্লা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল করিম। ঝুমন গ্রেপ্তার হওয়ার ছয় মাস পর গত বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর শর্তসাপেক্ষে হাইকোর্ট থেকে জামিনে মুক্তি পান।