সেলিম আহমদ তালুকদার::
সদর উপজেলার স্বনামধন্য কলেজের নাম মঈনুল হক কলেজে সম্প্রতি কলেজের ছাত্রদের দু’পক্ষের সহিংসতার ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। সহিংসতার সুযোগে কতিপয় দুস্কৃতিকারী বাইরের একটি শক্তির ইন্দনে কলেজের নাম ফলকে প্রতিষ্ঠাতার নাম মুছে দিয়েছে। এ ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে ফেইসবুকে। প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন এলাকার সচেতন মহল। তারা এই নিন্দনীয় ঘটনায় নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছেন।
নোয়াগাঁও আলিম মাদ্রাসার প্রভাষক বাণীপুর গ্রামের ফারুক রশীদ লিখেছেন, অতি উৎসাহি কেন নাম পরিবর্তনে। যে নামে আছে সেটাই থাকবে। ফেইসবুকে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে র্যাংস ফার্মাসিউটিক্যাল এর বিভাগীয় কর্মকর্তা জয়নগর গ্রামের অনুরুপ কান্তি আচার্য্য লিখেছেন , এটা উচিত হয়নি। যিনি প্রতিষ্ঠাতা তার নাম মুছে ফেলা এটা ইতিহাস বিকৃতির শামিল। তাহলে ভবিষ্যতে এমন মহৎ কাজে কেউ আর উদ্যেগী হবেন না। আর আমরা ভবিষ্যতে এমন মানুষ তৈরীর প্রতিষ্ঠান পাব না। তাই সবাইকে আমি বিনীত অনুরুধ করব, আসুন সবাই মিলে দন্দ্ব- সংঘাত ভুলে উক্ত প্রতিষ্ঠানটিকে রক্ষা করি। নতুবা আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম নিজ এলাকায় থেকেই উচ্চ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। ঢাকায় কর্মরত চেরীফিল্ড ট্রেডিং এর সিএসআর ম্যানেজার মুড়ারবন্দ গ্রামের আখলাকুর রহমান লিখেছেন, সমস্যা সমাধানের অনেক পথই আছে, তাই বলে নামফলক মুছে ফেলার কাজটি মারাত্বক। শিক্ষা প্রতিষ্টানে আন্দোলন প্রতিবাদ একটি সংস্কৃতি, রক্তাক্ত করাটাও যেমন অন্যায় এর চেয়ে বেশী অন্যায় নামফলকে মুছে দেওয়ার পাঁয়তারা। নাম ফলক মুছার মধ্য দিয়ে এলাকার শিক্ষার গতিকে থামিয়ে দেওয়ারই চেষ্টা মনে হচ্ছে । দৈনিক সুনামগঞ্জের সময় পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক রামনগর গ্রামের মোঃ সেলিম আহমদ তালুকদার লিখেছেন, এটা অপ্রত্যাশিত। কোন অবস্থাতেই কাম্য নয়। এলাকার উচ্চতর বিদ্যাপীঠ কলেজটিতে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে স্থানীয় যুব সমাজ, সচেতন মহলসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে সমঝোতার মাধ্যমে নিষ্পত্তি প্রয়োজন আশা করছি। সাচনা বাজার ইউপি সদস্য রুপাবালী গ্রামের আলাউদ্দিন লিখেছেন, জয়নগর বাজার এরিয়ার লোকদের উত্তরবঙ্গের প্রতি প্রেমের সীমারেখা ছাড়িয়ে গেছে, এর রহস্য খুঁজে বাহির করতে হবে। ছাত্রদের দিয়ে মিছিল করানো সংস্কৃতি রূপে লাভ করেছে। মঈনুল হক কলেজের নাম ফলক নিয়ে যারা ছিনিমিনি করছে, তাদের জনতার সম্মুখে দাঁড় করাতে হবে । সরদারপুর গ্রামের শিক্ষক শহিদুল হক লিখেছেন, এটা কোন সমস্যাই না। রাগে মানুষ অনেক কিছুই করে। এটাকে স্বাভাবিক ব্যপার মনে করে পুনরায় আগের মত কলেজ পরিচালনা করলেই সব সমস্যার সমাধান হবে। কলেজের সুনাম ধরে রাখতে হলে হিংসা,লোভ লালসা বাদ দিয়ে কমিটি ও এলাকার সার্বিক সহযোগিতা কাম্য। ভোরের কাগজ সিলেট প্রতিনিধি শাখাইতি গ্রামে ইয়াহিয়া মারুফ লিখেছেন, এলাকায় উচ্চ শিক্ষার সুযোগ করে দিয়েছেন যে মানুষ, তাঁর নাম বদলানো হলে এলাকাবাসীর ছোট মন-মানসিকতার পরিচয় প্রকাশ পাবে। এরকম শিক্ষানুরাগীরা আমাদের মাঝ থেকে হারিয়ে যাবে। কাজেই বিষয়টির সঠিক তদন্ত করে সঠিকভাবে সমাধান করা এলাকাবাসীর দায়িত্ব। মুড়ারবন্দ গ্রামের সোহেল আহমেদ লিখেছেন, কখন ও হতেপারেনা, যিনি উদার মনমানসিকতা দেখিয়ে আমাদের অন্ধকার থেকে আলো পথে এনেছেন, আর এই কলেজ কিনা অন্য নামে হবে, তা মেনে নেওয়া যায়না। এর জন্য সঠিক তদন্ত করে আসল ঘটনা ও মুল হোতাদের বের করে আনতে হবে। জয়নগর গ্রামের বিশ্বজিৎ তালুকদার লিখছেন, ইতিহাস আছে আমাদের এর আগেও অনেক বড় বড় সমস্যর সমাধান হয়েছে। আশাকরি এটাও সমাধান হবে। এ প্রত্যাশায় আমরা পথ চেয়ে আছি। মোহনপুর গ্রামের মো. সেলিম লিখেছেন এটা সঠিক নয়। উনি হলেন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা, তিনি এলাকার স্বার্থে কলেজ দিয়েছেন, নিজের জন্য নয়। আসল সমস্যা কোথায় সেটা খুজে বের করতে হবে। মঈনুল হক নামেই থাকবে। মঈনুল নাম নয় এটা একটা ইতিহাস । ছোয়াপুর গ্রামের শহিদুল লিখেছেন, এটা উচিত হয়নি। যিনি প্রতিষ্ঠাতা তার নাম মুছে ফেলা এটা ইতিহাস বিকৃতির শামিল। ছোয়াপুর গ্রামের এডভোকেট বোরহান উদ্দিন লিখেছেন প্রতিষ্টান ধ্বংশের ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। রাজু শিকদার লিখেছেন, যারা নাম বদলের পক্ষে তারা সবাই মিলে আগে একটা নতুন নাম ঠিক করুক, তারপর সেই নামে নতুন করে আরেকটি কলেজ খুলে এলাকার উন্নয়নের জন্য কাজ করুক। এতে করে সবার উন্নতি হবে, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হবে, প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার মান বারবে। আরেকজনের গড়া প্রতিষ্ঠান নিয়ে এত কিছু না ভেবে নতুন কিছু করার উদ্যোগ নিলে সকলের জন্য লভজনক হবে।