বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর সীমান্তে হাজং গৃহবধুকে ধর্ষণের ঘটনায় স্বাস্থ্য প্রতিবেদন বদলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বাংলাদেশ জাতীয় হাজং সংগঠন ও বাংলাদেশ হাজং ছাত্র সংগঠন। রবিবার বিকেলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো ধর্ষিতার মেডিকেল রিপোর্ট প্রত্যাখান করে এই ফলাফলকে সন্দেহজনক হিসেবেও মন্তব্য করে তারা ঘটনাটি ভিন্নখাতে নিতে এই কাজ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে। তারা ধর্ষক আব্দুর রশিদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে।
উল্লেখ্য গত ১৪ আগস্ট সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার রাজাই গ্রামে এক হাজং তরুণী (২৩) কে সীমান্ত নদীতে গোসল করার সময় একা পেয়ে ধর্ষণ করে একই গ্রামের আব্দুর রশিদ (৪৫)। এ ঘটনায় ওইদিনই ভিকটিমের মা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। পুলিশ ধর্ষককে আটক করে কারাগারে প্রেরণ করে। পরদিন ধর্ষিতাকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে প্রেরণ করে থানা পুলিশ।
বাংলাদেশ জাতীয় হাজং সংগঠনের পক্ষে সাধারণ সম্পাদক পল্টন হাজং ও বাংলাদেশ হাজং ছাত্র সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আশীষ হাজং এর পাঠানো বিবৃতিতে তারা উল্লেখ করেন এই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাহিরপুর থানার সাব-ইন্সপেক্টর আবু বকর সিদ্দিক ঘটনার দিন ভিকটিমকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য না পাঠিয়ে পরদিন সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে মেডিকেল রিপোর্ট করান। স্বাস্থ্য পরীক্ষার আগেই ধর্ষিতা অজ্ঞতা বশত গোসল করায় এবং বৃষ্টির সময় ধর্ষণের ঘটনা ঘটায় আলামত নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয় স্বাস্থ্য পরীক্ষার ১৬ দিন পর গত ১ সেপ্টেম্বর জানানো হয় মেডিকেল পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত পাওয়া যায়নি। এই স্বাস্থ্য প্রতিবেদনকে সন্দেজনক ও ভুল উল্লেখ করে তা প্রত্যাখান করে সংগঠনটি। বিবৃতিতে উদ্বেগ জানিয়ে মামলাটি ভিন্নখাতে নিতে প্রতিবেদন পাল্টে দেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করে বিবৃতিদাতারা বলেন, বলেন ঘটনার পর আলামত নষ্ট করতে শালিসের কথা বলে বিলম্ব করে পুলিশ। তারা ঘটনার দিন ভিকটিমকে হাসপাতালে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য না পাঠিয়ে পরদিন পাঠিয়েছিল। তাছাড়া এ ব্যাপারে ধর্ষিতা অজ্ঞ থাকায় এবং বৃষ্টির সময় নদীতে ধর্ষণের ঘটনা ঘটায় আলামত মুছে গেছে বলে মনে করেন তারা। সংগঠন দুটি আব্দুর রশিদকে বাঁচানোর চেষ্টা শক্ত হাতে প্রতিরোধ করার আহ্বান জানায় এবং দোষীর দ্রুত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে কঠোর আন্দোলন হুমকি দেন।
বাংলাদেশ জাতীয় হাজং সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক পল্টন হাজং বলেন, ঘটনার দিন সকালে তুমুল বৃষ্টি ছিল। এই বৃষ্টির সময় বাড়ির পাশের পাহাড়ি খালে গোসল করতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হন গৃহবধু তরুণী। আমরা বারবার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। তাছাড়া বৃষ্টির সময় নদীতীরে ঘটনা ঘটায় ধর্ষিতার আলামত ধুয়ে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া সাথে সাথে ধর্ষিতাকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য না পাঠিয়ে বিলম্বে পাঠানোয় আমরা সন্দেহ করছি ধর্ষককে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে।
এ বিষয়ে তাহিরপুর থানার ওসি আব্দুল লতিফ সরদার বলেন, আমরা যথাযতভাবে যথা সময়ে ভিকটিমকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছি এবং দোষীকেও আটক করে কারাগারে প্রেরণ করেছিলাম। আমাদের দায়িত্বে কোন অবহেলা নেই।