হাওর ডেস্ক::
সঞ্চয়পত্র বিক্রি বেড়েই চলেছে। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) বাজেট ঘাটতি মেটাতে সঞ্চয়পত্র থেকে যে পরিমাণ ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছিল, তার চেয়ে প্রায় ৭৪ শতাংশ এবং সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি ঋণ নিয়েছে সরকার। এ সময়ে মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯১ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে নিট বিক্রির পরিমাণ ৩৪ হাজার ৭২৮ কোটি টাকা। করোনা সংক্রমণের ভয় উপেক্ষা করেই মানুষ সঞ্চয়পত্র কিনতে প্রতিদিনই ব্যাংক, সঞ্চয় ব্যুরো ও ডাকঘরে ভিড় করছে। ঈদের পর থেকে এই ভিড় তুলনামূলক বেশি।
বর্তমানে দেশে চার ধরনের সঞ্চয়পত্র চালু রয়েছে। এগুলো হলো—পরিবার সঞ্চয়পত্র, পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও পেনশনার সঞ্চয়পত্র।
জানা যায়, বিনিয়োগের বিকল্প সব উৎসর চেয়ে সঞ্চয়পত্রের সুদ এখন সবচেয়ে বেশি, প্রায় ১২ শতাংশের কাছাকাছি। কিন্তু ব্যাংকে টাকা রাখলে সুদ মিলছে ৪ থেকে ৬ শতাংশ। অন্যদিকে শেয়ারবাজারও খুব একটা ভালো যাচ্ছে না। তাই বিভিন্ন শর্ত পরিপালন করেও সঞ্চয়পত্রে ঝুঁকছে মানুষ।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরে প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) মোট ৯১ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ এপ্রিল মাসে পাঁচ হাজার ৮৮৬ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের পুরো সময়ে মোট সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ ছিল ৬৭ হাজার ১২৭ কোটি টাকা।
এদিকে চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে নিট ২০ হাজার কোটি টাকার ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ধরা হয়। কিন্তু এই লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে পাঁচ মাস না যেতেই অতিক্রম হয়ে যায়। এর পর থেকে লক্ষ্যের অতিরিক্ত সঞ্চয়পত্র বিক্রি করতে হচ্ছে সরকারকে। জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে ৩৪ হাজার ৭২৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে এপ্রিলে নিট বিক্রি হয়েছে এক হাজার ৫২৬ কোটি টাকা। আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধের পর যেটা অবশিষ্ট থাকে, তাকে বলা হয় নিট বিক্রি।
এদিকে আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা প্রায় ৬০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া নতুন অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে টিআইএন ছাড়াই দুই লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কেনার সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে এর বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে চাইলে টিআইএন বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বর্তমানে এক লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে টিআইএন বাধ্যতামূলক করা আছে।