হাওর ডেস্ক ::
করোনা পরিস্থিতি অনুকূলে আসলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য তৈরি করা ৩০ দিনের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস বাস্তবায়ন করা হবে। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে আগে থেকেই স্কুল খোলার প্রস্তুতি নিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের মৌখিকভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। আর আগের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের বিদ্যালয়গুলো স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল খোলার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো। বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে এ তথ্য জানা গেছে।
তবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর থেকে নতুন করে কোনও নির্দেশনা দেওয়া হয়নি বলে জানান প্রতিষ্ঠান প্রধানরা। তবে আগে বলা হয়েছিল, কোনদিন স্কুল খোলা হবে তা ১৫ দিন আগেই জানিয়ে দেওয়া হবে। আগামী ১৫ নভেম্বর থেকে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস বাস্তবায়নের কথা থাকলেও বুধবার (৪ নভেম্বর) পর্যন্ত নতুন কোনও নির্দেশনা নেই। আগের নির্দেশনা অনুযায়ী ৩০ দিনের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস বাস্তবায়নে তারা নিজেরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
রাজধানীর হাজারীবাগ বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও মুখপাত্র এস এম ছাইদ উল্লা বলেন, ‘আগেই বিদ্যালয় খোলার প্রস্তুত নিতে বলা হয়েছে। নতুন করে কোনও নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। আমরা স্ট্যান্ডবাই রয়েছি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে বলা হলে আমরা তখনই খুলে দিতে পারবো।’
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার কাঁঠালতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. তাসরিফ আহমেদ বলেন, উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আমাদের বিদ্যালয় খোলার জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেছেন মৌখিকভাবে। আমরা বিদ্যালয় খোলার প্রস্তুতির জন্য বৈঠক করেছি।
রাজধানীর শাহীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক পিংকী ভৌমিক বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নিতে নতুন করে কোনও নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। আগেই যে নির্দেশনা রয়েছে সে অনুযায়ী আমরা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হলে নতুন স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে কিভাবে বিদ্যালয় চলবে তার নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে বিভাগ, জেলা ও প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিউটে (পিটিআই)। অধিদফতর থেকে পাঠানো এই নির্দেশিকা দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাতে বিভাগীয় উপপরিচালক, জেলা শিক্ষা অফিসার এবং পিটিআইয়ের সুপারিন্টেনডেন্টকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এর আগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (পলিসি অ্যান্ড অপারেশন) তাপস কুমার আচার্য্য স্বাক্ষরিত চিঠিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি নির্দেশিকা পাঠানো হয় মাঠ পর্যায়ে।
ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিদ্যালয় পুনরায় চালুর নির্দেশিকা প্রেরণ করা হলো। এ নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’ এর গত ৮ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এই নির্দেশিকা স্কুল পর্যায়ে পৌঁছে দিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকে নির্দেশ দেয়।
১ নভেম্বর থেকে ৩৯ দিনের জন্য সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা একাডেমি (ন্যাপ)। সংক্ষিপ্ত এ পাঠ পরিকল্পনা চলবে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলার কথা ছিল। কিন্তু করোনার কারণে ১ নভেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না খোলায় নেপ আবার নভেম্বর ডিসেম্বর মাসের জন্য ৩০ দিনের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করে। যদি ১৫ নভেম্বর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হয় তাহলে এই সিলেবাস বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে। অন্যথায় প্রাথমিকের প্রত্যেক শ্রেণির সব শিক্ষার্থীদের পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ করবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিজস্ব মূল্যায়নে পঞ্চম শ্রেণির সনদ দেবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ মার্চ থেকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (কওমি ছাড়া) ছুটি চলছে।