1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:০৫ পূর্বাহ্ন

আয় কমেছে ৭০% দরিদ্র মানুষের

  • আপডেট টাইম :: শুক্রবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২০, ১০.৪৩ এএম
  • ১৪৫ বার পড়া হয়েছে

হাওর ডেস্ক ::
নভেল করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশে নিম্ন আয়ের মানুষ কতটা বিপদে পড়েছে বেসরকারি দুটি গবেষণা সংস্থার জরিপে সেটা উঠে এসেছে। পিপিআরসি ও বিআইজিডি নামের ওই দুটি গবেষণা সংস্থা বলছে, তাদের জরিপে দেখা গেছে যে দেশে ৭০ শতাংশ দরিদ্র মানুষের আয় কমে গেছে। এই দরিদ্র শ্রেণির মধ্যে রয়েছে অতি দরিদ্র, মাঝারি দরিদ্র এবং দারিদ্র্যসীমার ওপরে ছিল কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রভাবে দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে এসেছে।

জরিপে দেখা গেছে, দরিদ্রদের ৪০ শতাংশের ভোগ কমে গেছে। আর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষ্ক্রিয় হয়ে গেছে শহরের ৭১ শতাংশ দরিদ্র মানুষের।
পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) জরিপে আরো দেখা গেছে, শহরে বস্তিতে বসবাসরত ৮২ শতাংশ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। আর গ্রামাঞ্চলে কর্মহীন হয়েছে ৭৯ শতাংশ দরিদ্র মানুষ।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জরিপের ফল প্রকাশ করেন পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. হোসেন জিল্লুর রহমান ও বিআইজিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ইমরান মতিন।

দরিদ্রদের জন্য খোলাবাজারে বিক্রি (ওএমএস) কর্মসূচি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, যত দ্রুত সম্ভব আবার ওএমএস চালু করা জরুরি। শারীরিক দূরত্ব বজায় থাকছে না— এমন যুক্তি তুলে ধরে সরকার ওএমএস বন্ধ করেছে। বিকল্প কোনো উপায় বের করে ওএমএস চালু করার আহ্বান জানান তিনি।

জরিপটি করার প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিআইজিডি ও পিপিআরসি থেকে বলা হয়েছে, টেলিফোনের মাধ্যমে গত ৪ এপ্রিল থেকে ১২ এপ্রিল পর্যন্ত জরিপটি করা হয়েছে। দৈবচয়নের ভিত্তিতে পাঁচ হাজার ৪৭১ জন দরিদ্র মানুষের মধ্যে জরিপটি করা হয়েছে। যার মধ্যে শহর থেকে নেওয়া হয়েছে ৫১ শতাংশ আর গ্রাম থেকে ৪৯ শতাংশ।

এ জরিপটি চালানোর উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে, সরকারের নীতিনির্ধারকরা যাতে সামনের দিনগুলোতে কোনো প্যাকেজ গ্রহণের সময় এটি কাজে লাগাতে পারেন। এ ছাড়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানও চাইলে এই জরিপের ফল কাজে লাগাতে পারে।

হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, কভিড-১৯-এর প্রভাবে কর্মহীন ও আয় বন্ধ হয়ে যাওয়া দরিদ্র মানুষকে নগদ টাকা দেওয়া জরুরি। তাঁদের জরিপে উঠে এসেছে যে প্রতি মাসে দরিদ্র মানুষের জন্য খরচ হবে পাঁচ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা। দেশে এখন দরিদ্র মানুষের সংখ্যা তিন কোটি ৮১ লাখ ৫৬ হাজার ৬৬৯ জন। যার মধ্যে গ্রামে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা দুই কোটি ৬৯ লাখ ৬৪ হাজার ৫৩০ জন। আর শহরে আছে এক কোটি ১১ লাখ ৯২ হাজার ১৩৯ জন।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়। ২৬ মার্চ থেকে কার্যত অচল পুরো দেশ। আয় কমে যাওয়ায় দরিদ্র মানুষ কিভাবে খাদ্য চাহিদা পূরণ করছে—এমন প্রশ্নে শহরের ৬৭ শতাংশ মানুষ বলেছে—তারা সঞ্চয় ভেঙে সংসার চালাচ্ছে। গ্রামে এই হার আরো বেশি ৮২ শতাংশ। মাত্র ৫ শতাংশ বলেছে, এনজিওগুলো সহযোগিতা করছে। ঋণ করে অনেকে সংসার চালানোর

কথা বলেছে। শহরের ৪৭ শতাংশ বলেছে, তারা খাবার খাওয়া কমিয়ে দিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কাউকে নিজের সম্পদ বিক্রি করতে হয়নি। ১৪ শতাংশ বলেছে, তারা সরকারের কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছে। কেউ কেউ বলেছে, তারা বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজনের কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছে।

জরিপে দেখা গেছে, ৬১ শতাংশ দিনমজুর বলেছে এখন তাদের কোনো কাজ নেই। ৬০ শতাংশ ভাঙ্গারি শ্রমিক বলেছে করোনার প্রভাবে এখন তাদের কোনো কাজ নেই। ৫৯ শতাংশ রেস্টুরেন্ট শ্রমিক বলেছে, তাদের কাজ বন্ধ। ৫৭ শতাংশ গৃহপরিচারিকা বলেছে, তাদের কাজ নেই। ৫৫ শতাংশ পরিবহন শ্রমিকের কাজ বন্ধ। ৫৪ শতাংশ কৃষি শ্রমিকের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।

জরিপে আরো দেখা গেছে, রেস্টুরেন্টের একজন শ্রমিক আগে যে টাকা আয় করত, করোনার প্রভাবে সেটি ৯৩ শতাংশ কমে গেছে। রিকশাচালকের আয় কমে গেছে ৭৩ শতাংশ।

জরিপে পুষ্টিহীনতার বিষয়টিও উঠে এসেছে। শহরে ২৩ শতাংশের পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ কমে গেছে। গ্রামে কমে গেছে ১৫ শতাংশের।

করোনা মোকাবেলার জন্য কী জরুরি—এমন প্রশ্নে সবাই বলেছে, নগদ টাকা ও খাদ্য সহযোগিতা দুটোই জরুরি। বিভিন্ন মহল থেকে সহযোগিতা পাওয়া গেলেও এখন পর্যন্ত এনজিওগুলোর ভূমিকা অত্যন্ত নিষ্ক্রিয় বলে জরিপে উঠে এসেছে।
জরিপে অংশ নেওয়া অনেকে বলেছে, করোনার প্রভাবে দীর্ঘদিন দেশ অবরুদ্ধ থাকলে সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়বে। অনেক পরিবার মাত্র এক থেকে দুই সপ্তাহ চলতে পারবে। এসব মানুষের জন্য জরুরি সহায়তা দরকার। সে জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে দ্রুত ওএমএস চালুর তাগিদ দেন হোসেন জিল্লুর রহমান।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!