1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৩:২৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
পশ্চিমবঙ্গের বাজারে কেমন বিক্রি হচ্ছে বাংলাদেশের ইলিশ! অক্টোবরে সিলেট বিভাগের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা হবে! রংপুরে ড. ইউনুসের বিরুদ্ধে মামলা করলেন বঞ্চিত কর্মী ধর্মপাশা ও মধ্যনগরে আ.লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী সেলিম আহমেদের প্রচারণা এবার ‘তৃণমূল বিএনপি’র চেয়ারপারসন হলেন সিলেটের শমসের মবিন চৌধুরী অসামাজিক কার্যকলাপ: শিমুলবাক ইউপি চেয়ারম্যানের আবাসিক হোটেল থেকে তরুণ-তরুণী আটক গত সিটি নির্বাচনে প্রার্থী না হওয়ায় সিলেটের মেয়র আরিফকে বড় পুরস্কার দিল বিএনপি ভূমি অফিসার্স কল্যাণ সমিতি সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির শপথগ্রহণ সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাব নির্বাচন: সভাপতি পঙ্কজ সম্পাদক এ আর জুয়েল শাল্লা উপজেলা প্রেসক্লাবের অভিষেক অনুষ্ঠান সম্পন্ন

করোনাভাইরাস: আগামী দুই সপ্তাহ ‘ক্রুসিয়াল টাইম’

  • আপডেট টাইম :: মঙ্গলবার, ৩১ মার্চ, ২০২০, ১০.৪৪ এএম
  • ১১৫ বার পড়া হয়েছে

হাওর ডেস্ক ::
নভেল করোনাভাইরাসের ইনকিউবিশন পিরিয়ড বা রোগসঞ্চার থেকে প্রথম লক্ষণ দেখা দেওয়ার সময় (সুপ্তাবস্থা) কমপক্ষে ১৪ দিন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ কারণে আগামী দুই সপ্তাহ আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তারা বলছেন, এরই মধ্যে যদি কেউ সংক্রমিত হয়ে থাকেন তাহলে তার লক্ষণ প্রকাশ পাবে আগামী কয়েক দিনে। এ কারণে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলায় সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে জোরালো মত তাদের।
বিশেষজ্ঞরা আরও বলছেন, সাধারণ ছুটি যদি আগামী ৪ এপ্রিল শেষ হয়ে যায় আর সংক্রমিত কেউ যদি ভিড়ে মিশে যাওয়ার সুযোগ পায়, তাহলে সেটা ভয়ঙ্কর হবে। তাই সাধারণ ছুটি বাড়ানোর পাশাপাশি ‘আজ থেকে ১৪ দিন’ বিষয়টিকে মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। তাহলে হয়তো কমিউনিটি ট্রান্সমিশন থেকে আমরা রক্ষা পাবো। এভাবে লকডাউন করেই করোনার উৎসস্থল চীন সংক্রমণমুক্ত হয়েছে।
তবে অর্থনৈতিক দিক বিবেচনায় সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়ানো নাও হতে পারে, এমন আলোচনা আছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, তাতে সংক্রমণ বাড়বে। তখন আবার লকডাউন করতে হবে অনেক সময়ের জন্য। ক্ষতির মাত্রাও বেড়ে যাবে। তখন হয়তো লকডাউন তেমন কোনও কাজে আসবে না।
গত ২৬ মার্চ থেকে শুরু হওয়া সাধারণ এই ছুটিতে রাজধানীবাসী প্রথম কয়েকদিন ঘরে থাকলেও এখন রাস্তায় বের হচ্ছেন। অন্যদিকে ছুটি শেষ হয়ে আসায় ঢাকার বাইরে যাওয়া মানুষেরা ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানা গেছে।
এতে আশঙ্কা প্রকাশ করে জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা বলেন, ‘মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে আসছে, কিন্তু তাদের বাড়িতে থাকতে হবে। আপনারা ঘরে থাকুন, এটা অত্যন্ত জরুরি। সবার স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্যই এসব নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।’ তিনি সবাইকে ঘরে থাকার অনুরোধ করেন।
জানতে চাইলে চিকিৎসা নৃবিজ্ঞানী আতিক আহসান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ২৭ ফেব্রুয়ারি জার্মানি (২৭), ফ্রান্স (১৮), যুক্তরাজ্য (১৩) এবং ইটালিতে (১৩৯) রোগী ছিল অনেক কম, কিন্তু তৃতীয় সপ্তাহ থেকে সংখ্যা বাড়তে শুরু করে এবং চতুর্থ সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপক বাড়তে শুরু করে।’
ওইসব দেশের সব রোগীই কিন্তু তৃতীয় অথবা চতুর্থ সপ্তাহে সংক্রমিত হননি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেখা যাচ্ছে কোনও সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসার পরে গড়ে উপসর্গ দেখা দিতে ১৪ দিন থেকে ২১ দিন পর্যন্ত সময় লাগতে পারে। এবং এরপর উপসর্গের মাত্রা দিন দিন বাড়তে থাকে এবং আক্রান্ত ব্যক্তি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ১৯ দিনে ভালো হয়ে যায় বা মৃত্যুবরণ করে।’
যদিও বাংলাদেশ অনেক দ্রুত বিশেষ পরিস্থিতিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করায় তুলনামূলক নিরাপদ অবস্থানে আছে মন্তব্য করে আতিক আহসান আরও বলেন, ‘কিন্তু সাধারণ ছুটির আগে যারা সংক্রমিত হয়েছেন, তাদের সংখ্যা বুঝতে তিন থেকে চার সপ্তাহ সময় লাগবে। সেই হিসাবে বলা যায়, বাংলাদেশে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকে হয়তো কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করতে পারে এবং দ্বিতীয় সপ্তাহে সেটা অনেক বেশি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।’
তিনি বলেন, ‘তবে এই ছুটি যদি আরও কয়েকদিনের জন্য বাড়িয়ে দেওয়া যায়, তাহলে নতুন করে সংক্রমণের হার অনেক কমে যাবে। সেক্ষেত্রে যারা এর আগেই সংক্রমিত হয়েছেন তাদের এই পুরো সময়টা (ইনকিউবিশন পিরিয়ড ও উপসর্গ দেখা দেওয়া) সম্পন্ন হবে। আর এটা করতে পারলে মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে রোগী সংখ্যা আবার কমতে শুরু করতে পারে।’ তাই ছুটি বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।
সাধারণ ছুটির চতুর্থ দিন রবিবার (২৯ মার্চ) থেকে দেখা যাচ্ছে মানুষজন রাস্তায় বের হয়ে আসছে। এটাকে ‘অ্যালার্মিং’ অভিহিত করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. জাহিদুর রহমান বলেন, ‘অথচ কেউ সংক্রমিত হলে ১৪ দিনের ভেতরে তার লক্ষণ প্রকাশ পাবে। তাই মানুষের ঘর থেকে বের হওয়া ঠিক হচ্ছে না। সরকারের পক্ষ থেকে সাধারণ ছুটির সময় আরও বাড়িয়ে দেওয়া দরকার এবং সেটা হতে হবে কমপক্ষে দুই সপ্তাহ।’
তিনি আরও বলেন, ‘আর এবার কেবল সাধারণ ছুটি নয়, সেখানে জনগণকে কী করতে হবে, কী করা যাবে, যাবে না, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে নির্দেশনা দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, ভীষণ ‍গুরুত্বপূর্ণ আগামী দুই সপ্তাহ। একই সঙ্গে সাসপেক্টেড কেস খুঁজে বের করে তাদের পরীক্ষা করতে হবে, কোনোভাবেই যেন করোনা আক্রান্ত কেউ মিশে যেতে না পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’
জনস্বাস্থ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ে অভিজ্ঞ তারিফুর রহমান বলেন, ‘করোনার ইনকিউবিশন পিরিয়ড ২৪ দিনও আছে, যদিও সে সংখ্যা খুবই কম। যেদিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলো, মানুষ যেদিন ঢাকা ছাড়লো আর কেউ যদি সেদিনই বা বাড়ি যাওয়ার পরও ইনফেক্টেড হয় তাহলে কিন্তু তার লক্ষণ প্রকাশের সময়সীমা হবে ১৪ দিন। তাই ১৪ দিনের ছুটিতে আক্রান্ত এক গুণ মানুষকে যদি পাওয়া যায়, আর যদি ২০ দিনের ছুটি দেওয়া হয়, তাহলে আক্রান্ত এক গুণ এবং তাদের থেকে আক্রান্ত হওয়া বড় হওয়া অংশকেও একটা মেজারের মধ্যে নিয়ে আসা যাবে। এটা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ।’
মহামারির ক্ষেত্রে সংক্রমণের হার নির্ধারণ করতে হয় মন্তব্য করে তারিফুর রহমান আরও বলেন, ‘শুরুর দিকে চীনে একজন মানুষ চারজনকে সংক্রমিত করেছে। যতদিন দিন গেছে লকডাউন যখন শুরু হয়েছে সে সংখ্যা কমতে কমতে চার থেকে দশমিক চারে চলে এসেছে।’
এটা এখন বাংলাদেশেও করতে হবে মন্তব্য করে তিনি সাধারণ ছুটিকে আরও অন্তত ৭ থেকে ১০ দিন বাড়ানোর মত দেন। কারণ, পরে পরিস্থিতির অবনতি হলে দীর্ঘমেয়াদে লকডাউন দিয়েও সামাল দেওয়া কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক উপাচার্য ও ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘যেদিন থেকে ঢাকা থেকে মানুষ বাইরে গেলো সেদিন থেকে একটা কোয়ারেন্টিন পিরিয়ড দেখতে হবে এবং সেটা ১৪ দিন, ততদিন পর্যন্ত সময় দিতে হবে। আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে, কিন্তু বলা তো হয়নি এরপর আর ছুটি বাড়ানো হবে না। আমার অনুরোধ, সরকার সেটা বিবেচনা করুক।’
তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে দেখা যাচ্ছে, পরীক্ষা ছাড়া কয়েকজন রোগী মারা গেলেন। তাদের অনেকের স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়েছে এবং সেটা করা উচিত। এবং সেই স্যাম্পলের ফলাফলের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। সেগুলো যদি একটাও পজিটিভ হয় তাহলে বুঝতে হবে করোনার কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়েছে। তাই আগামী ১৪ দিন খুবই ক্রুসিয়াল আমাদের জন্য।’
আগামী সপ্তাহ আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করে দেশের প্রখ্যাত মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘যারা দেশের বাইরে এসেছেন তাদের কোয়ারেন্টিন পিরিয়ড এখনও শেষ হয়নি। কয়েকদিন গেছে, কিন্তু অপেক্ষা করতে হবে। আর কেউ যেন দেশের বাইরে থেকে না আসতে পারে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। একই সঙ্গে সতকর্তা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।’
সাধারণ ছুটির মেয়াদ আরও কয়েকদিন বাড়ানোর পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত এই চিকিৎসক বলেন, ‘করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ভারতে বাড়ছে, সেই ভয়ও রয়েছে। আমাদের দেশে শনাক্তের হার কম হলেও আত্মতুষ্টিতে যেন না ভুগি।’

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!