স্টাফ রিপোর্টার::
৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবস। ৫ ডিসেম্বর ভোরে সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধাদের দল শহরে ডুকলে মুক্তিকামী জনতা আনন্দে রাস্তায় নেমে যোদ্ধাদের অভ্যর্থনা জানায়। জয় বাংলা স্লোগানে মুুখরিত হয়ে ওঠে জেলা শহর। এই খবরে ভোরেই পাকিস্তানী হায়েনারা সুনামগঞ্জ পিটিআই ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে যায়। যাওয়ার সময় তিনজন মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে নিয়ে যায়। পিটিআই টর্চারসেলে হত্যা করে যায় অগুনতি মানুষককে।
মুক্তিযোদ্ধারা জানান, সুনামগঞ্জকে হানাদারমুক্ত করতে বালাট সাব সেক্টরের কমান্ডার মেজর মোতালিব, ক্যাপ্টেন যাদব ও ক্যাপ্টেন রঘুনাথ ভাটনগর বিশেষ পরিকল্পনা নেন। যৌথ পরিকল্পনা অনুয়ায়ি দখলদার বাহিনীর উপর আঘাত হানতে কয়েকটি কোম্পানিকে একাধিক গ্রুপে ভাগ করে আক্রমণের দায়িত্ব দেয়া হয়। ‘এ’ কোম্পানিকে যোগীরগাঁও, ‘বি’ কোম্পানিকে হালুয়ারঘাট, সি কোম্পানিকে হাছননগর, ডি কোম্পানিকে বাদেরটেক লালপুর এবং এফ কোম্পানিকে বেরীগাঁও কৃষ্ণনগর অবস্থানের নির্দেশ দেওয়া হয়। কোম্পানিগুলোকে সার্বিক রসদ সরবারাহের দায়িত্ব দেওয়া হয় এডিএম কোম্পানিকে। এছাড়া বনগাঁও সদর দফতরে অতিরিক্ত এক প্লাটুন মুক্তিযোদ্ধা প্রস্তুত ছিলেন যে কোন পরিস্থিতি শামাল দিতে।
৫ ডিসেম্বর সন্ধার পরপরই মুক্তিযোদ্ধারা যৌথভাবে চতুর্দিক দিয়ে পাকিস্তানী হানাদারদের আক্রমণ চালায়। মুক্তিযোদ্ধারা প্রবেশ করার আগেই দালালদের মাধ্যমে খবর পেয়ে পাক হানাদাররা শহর ছেড়ে পালাতে শুরু করে। এভাবেই শত্রুমুক্ত হয় সুনামগঞ্জ। ৬ ডিসেম্বর রাতেই দৈনিক বাংলার তৎকালীন সিনিয়র সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা সালেহ চৌধুরী একটি শহীদ মিনারের ডিজাইন করেন। ৭ ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা শহীদ মিনার বানিয়ে শহীদদের শ্রদ্ধা জানান।
সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবস উপলক্ষে উপলক্ষে জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি পরিষদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এ উপলক্ষে সকালে বিশাল র্যালি বের করবে। এর আগে তারা শহীদ মিনারে শহীদদের উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানাবে। বিকেলে সুনামগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি পরিষদ আলোচনাসভা ও যোদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ানের ‘একাত্তরে সুনামগঞ্জ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করবে।