বিশেষ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জে ‘উন্নয়ন ভাবনা:সুনামগঞ্জ’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা অনুষ্টিত হয়েছে। স্থানীয় দৈনিক সুনামগঞ্জের খবরের ৭ম বর্ষপূর্তি’র নানা আয়োজনের অংশ হিসেবে শনিবার সুনামগঞ্জের বিভিন্ন পর্যায়ের সম্মানীত দায়িত্বশীলদের নিয়ে শহরের শহীদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎজ্যোতি পাবলিক লাইব্রেরীতে সকাল ১০ সাড়ে টায় শুরু হওয়া এই গোলটেবিল আলোচনা চলে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত। গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা বলেন, সুনামগঞ্জের কৃতি সন্তানরা সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছেন, বিশেষ করে পরিকল্পনা মন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব সুনামগঞ্জের বাসিন্দা হওয়ায় হাওরাঞ্চলের অবেহেলিত এ জেলার কাঙ্খিত উন্নয় পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার এখনই সময়। প্রয়োজনে সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে উন্নয়ন বাস্তবায়ন কমিটি করতে হবে। উন্নয়ন ভাবনা বাস্তবায়ন করতে হলে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে উন্নয়ন প্রকল্প শুরু ও বাস্তবায়ন করতে হবে। প্রয়োজনে সংবিধানে প্রত্যন্ত ও পিছিয়ে পড়া এলাকাকে এগিয়ে নিতে যেসব বিধান রয়েছে, তা অনুসরণ করতে হবে। বক্তারা শিক্ষার হার বাড়ছে, কিন্তু মান বাড়ছে না, এমন কথা জানিয়ে বলেন, সুনামগঞ্জে বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ, টেক্সটাইল ইন্সটিটিউট, নার্সিং ইন্সটিটিউট, শিল্প ও কারিগরি সহায়তা কেন্দ্র (বিটাক) সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান হবে। আমাদের শিক্ষার্থীরা এসব প্রতিষ্ঠানের সুফল পাবে কি না, তা ভাবতে হবে। আইন করে প্রয়োজনে জেলার জন্য ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কোটা সংরক্ষণ করতে হবে। প্রাইমারি শিক্ষার মতো সকল পর্যায়ে হাওর ভাতা চালু করতে হবে। এতে শিক্ষক সংকট দূর হবে। বক্তারা আরো বলেন, জেলার সাড়ে ৩ লক্ষ কৃষক এবার ১২ লক্ষ টন ধান উৎপাদন করেছেন। এর মধ্যে লটারির মাধ্যমে মাত্র ১৬ হাজার মে.টন ধান সরকার কৃষকদের কাছ থেকে কিনে নিচ্ছে। প্রশ্ন হলো বাকি কৃষকরা কি করবে। হাওরে মানুষের করুণ মৃত্যু ঠেকাতে বজ্রপাত প্রতিরোধী দ- দ্রুত বিশেষ ব্যবস্থায় স্থাপন করতে হবে। শিক্ষার্থীদের এবং নারীদের কর্মসংস্থানের জন্য প্রতি উপজেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র গড়ে তোলারও দাবি করা হয় গোলটেবিল আলোচনায়। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বেশী করে স্থানীয় লোক নিয়োগের দাবি জানিয়ে বলা হয়, তাহলে শিক্ষক স্বল্পতার সংকট কিছুটা কমবে। বিভিন্ন পর্যায়ে সর্বোপরি সুনামগঞ্জের উন্নয়ন বাস্তবায়ন কমিটি করতে হবে। প্রয়োজনে উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য পুস্তিকা প্রকাশ করা যেতে পারে।
দৈনিক সুনামগঞ্জের খবরের উপদেষ্টা সম্পাদক অ্যাডভোকেট বজলুল মজিদ চৌধুরী’র সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, পুলিশ সুপার বরকতুল্লাহ্ খান, পৌরসভার মেয়র নাদের বখ্ত, সিভিল সার্জন ডা. আশুতোষ দাস, এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী ইকবাল আহমদ, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আপ্তাব উদ্দিন, লেখক ও আইনজীবী হোসেন তৌফিক চৌধুরী, আইনজীবী ও গবেষক অ্যাডভোকেট আবু আলী সাজ্জাদ হোসাইন, জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইউসুফ আল আজাদ, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ, তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল, শাল্লা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (আলামিন চৌধুরী), নারীনেত্রী জেলা উদীচী’র সভাপতি শীলা রায়, শিক্ষাবিদ পরিমল কান্তি দে, সুনামগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ পরাগ কান্তি দে, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)’র সভাপতি ধুর্জটি কুমার বসু প্রমুখ। গোলটেবিল আলোচনার শুরুতে প্রারম্ভিক বক্তব্য উপস্থাপন করেন পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক পঙ্কজ কান্তি দে।