জগন্নাথপুর প্রতিনিধি::
জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-রশিদপুর সড়কে গর্তে দুইটি মালবোঝাই ট্রাক আটকে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়েছে।আজ শনিবার সকাল ৯টার দিকে জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-রশিদপুর সড়কের জগন্নাথপুর পৌরশহরের হামজা কমিউনিটি সেন্টারের সামনের গর্তে দুইটি ট্রাক পড়ে আটকে যায়। এ কারণে ওই সড়কে সরাসরি যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (দুপুর দুই টা)। সড়কের গর্তে ট্রাক দুইটি পড়ে থাকতে দেখা গেছে। উপজেলা সদরের সঙ্গে টানা ৬ ঘন্টা ধরে ছোট আকারের যানবাহন ছাড়া সব ধরনের ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এজন্য দুর্ভোগের শিকার হন পথচারিরা। এদিকে সড়কের সংস্কার দাবীতে আজ রোববার (১৪ জুলাই) থেকে অনিদিষ্টকালের জন্য এ সড়কে মিনি বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়ায় ঘোষনা দিয়েছে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা।
এলাকাবাসী ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সিলেট বিভাগীয় শহরসহ ঢাকার রাজধানীর সঙ্গে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলাবাসী জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-রশিদপুর সড়ক দিয়ে যাতায়াত করে আসছেন। দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কজুড়ে ভাঙাচোর, খানাখন্দ আর অসংখ্যা গর্ত সৃষ্টি হয়ে বেহালদশা বিরাজ করছে। প্রায় প্রতিদিনই সড়কের বিভিন্ন গর্তে ভারী যানবাহন পড়ে আটকে যায়। যে কারণে ঘন্টার পর ঘন্টা যানজট সৃষ্টি হয়ে বিঘিœত ঘটে যানচলাচল। ২০১৭ সালে জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ সড়কের জগন্নাথপুরের ১৩ কিলোমিটার অংশ সংস্কারের জন্য প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। এ কাজটি পান সুনামগঞ্জের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স নূরা এন্টারপ্রাইজ। ওই প্রতিষ্ঠান কিছু কাজ করে বন্ধ করে দেয়। এরপর স্থানীয় এলজিইডির তত্ত্বাবধান নি¤œমানের সামগ্রী দিয়ে নামমাত্র কাজ করে অর্থ লুট করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ উঠে কাজের তিন মাসের মাথায় সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভাঙন দেখা দেয়। দীর্ঘকাল থেকে এ সড়কের কাজের নামে সরকারী অর্থ লুট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠে আসছে। চলতি বছর সড়কের বেহাল দশা দেখা দিলে মানুষ বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। পরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর গত মে মাসে সড়কে অস্থায়ী মেরামতের জন্য ১৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়। এ কাজ পায় সুনামগঞ্জের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রেনু এন্টারপ্রাইজ। ঈদুল ফিতরের আগে দিন (৪ জুুন) সড়কের হামজা কমিউনিটি সেন্টারের সামনে যৎসামান্য মেরামত করা হয়। কাজটি প্রথমে জুন মাসে শেষ হওয়ার কথা শুনা গেলেও পরে কর্তৃপক্ষ জানায় চলতি মাসের ২৩ জুলাই অস্থায়ী মেরামতের কাজ সম্পন্ন হবে। গত দুই মাসেও ১৩ লাখ টাকার জরুরি মেরামত কাজ শেষ না হওয়ায় নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
এ সড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত যাতায়াতকারী নিকেশ বৈদ্য বলেন, সংস্কারের অভাবে প্রায় অচল হয়ে পড়েছে জগন্নাথপুরবাসীর প্রধান এই সড়কটি। ভাঙাচোরা আর অসংখ্যা গর্তে সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে চলাফেরা করতে হচ্ছে আমাদেরকে। কবে এই মরণযন্ত্রনা শেষ হবে জানি না। তোফাজ্জল হোসেন সুমন নামে আরেক যাতায়াতকারী বলেন, এ সড়কে জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে সংস্কার কাজের জন্য সরকার অর্থ বরাদ্দ দিলেও মানমাত্র করে করে অর্থলুট করা হচ্ছে অনেক যুগ ধরে। এসড়কের দুর্নীতি কি দুদকের চোখে পড়ে না।
জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-রশিদ-সিলেট সড়কের পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি নিজামুল করিম বলেন, বর্তমানে সড়কে যানবাহন চলাচল অনুপযোগি হয়ে পড়েছে। সড়কে বিরাজমান অসংখ্যা গর্তে যানবাহন পড়ে আটকে যায়। নষ্ট হচ্ছে গাড়ীর যন্ত্রাংশ। তাই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ সড়কের সংস্কার কাজ না হয়ে আজ থেকে অনিদিষ্টকালেল জন্য মিনিবাস চলাচল বন্ধ থাকবে।
স্থানীয় সরকার অধিদপ্তরের জগন্নাথপুর উপজেলা প্রকৌশলী গোলাম সারোয়ার বলেন, গর্তে আটকে পড়া ট্রাক দুইটি অপসারণের জন্য লোকজন পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ সড়কে সংস্কার কাজের জন্য আমরা ২০কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।