বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জ-৩ (জগন্নাথপুর-দক্ষিণ সুনামগঞ্জ) আসনের নির্বাচনী এলাকা উৎসবমুখর হয়ে উঠেছে। এ উৎসব আরো প্রাণবন্ত করতে প্রায় প্রতিদিনই ‘ঝাঁকে ঝাঁকে’ দেশে ফিরছেন প্রবাসীরা।
চলতি সপ্তাহে এক ফ্লাইটে যুক্তরাজ্য থেকে ২৫ জন লন্ডনপ্রবাসী দেশে ফিরে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, প্রবাসী অধ্যুষিত এলাকা হিসেবে পরিচিত জগন্নাথপুর উপজেলায় সব কটি নির্বাচনেই প্রবাসীদের ভূমিকা থাকে। এর মধ্যে লন্ডনপ্রবাসীরাই বেশি। নির্বাচন এলেই প্রবাসী ‘লন্ডনিরা’ দেশে এসে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে নামেন। গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জগন্নাথপুরের সাতটি ইউনিয়ন পরিষদের মধ্যে ছয়টিতে চেয়ারম্যান পদে লন্ডনপ্রবাসীরা নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। গতবারের পৌরসভার নির্বাচনেও লন্ডনপ্রবাসী মেয়র নির্বাচিত হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন।
এবারের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দুই জোটের পক্ষে এক ডজন প্রবাসী প্রার্থী হতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। দলীয় মনোনয়ন না পেলেও এই প্রবাসীদের অনেকেই নিজ নিজ জোট প্রার্থীর পক্ষে মাঠে সরব রয়েছেন। এর মধ্যে আছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক হরমুজ আলী, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ আবুল কাশেম ও জগন্নাথপুর পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রশীদ ভূঁইয়া।
এই তিন ‘লন্ডনি’ মহাজোটের প্রার্থী এম এ মান্নানের পক্ষে প্রতিদিন মাঠে প্রচারে অংশ নিচ্ছেন।
অন্যদিকে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী জমিয়ত উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নেতা শাহীনুর পাশা চৌধুরীর পক্ষে মাঠে নেমেছেন ঐক্যফ্রন্ট নেতা পাটলী গ্রামের লন্ডনপ্রবাসী জুবায়ের আহমদ চৌধুরী।
চলতি সপ্তাহে জগন্নাথপুর ব্রিটিশ-বাংলা এডুকেশন ট্রাস্টের ট্রাস্টি নুরুল ইসলাম লালা মিয়ার নেতৃত্বে ট্রাস্টের ২৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল দেশে এসে প্রচারে নেমেছে। ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি লালা মিয়া বলেন, ‘মহাজোটের প্রার্থী অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান জগন্নাথপুরের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়নে অনেক কাজ করেছেন। তা ছাড়া তিনি ট্রাস্টের রিসোর্স সেন্টার নির্মাণের জন্য আমাদের এক কোটি ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। সেই কৃতজ্ঞতা থেকে আমরা মাঠে নেমেছি। ’
গত শুক্রবার লন্ডন থেকে এসে মহাজোট প্রার্থীর পক্ষে প্রচারে নামেন যুক্তরাজ্য ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জুবায়ের আহমদ। তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী উৎসবে অংশ নিতে দেশে এসেছি। আত্মীয়-স্বজন, শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিয়ে পছন্দের প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে চাই। ’ লন্ডনপ্রবাসী বিএনপি নেতা সৈয়দ শামীম মিয়া বলেন, ‘১০ বছর পর নির্বাচনে আমাদের দল অংশ নিচ্ছে। তাই ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় যোগ দিতে দেশে এসেছি। ’
যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাজিদুর রহমান ফারুক বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে প্রায় দিন দিন যুক্তরাজ্য থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা দেশে আসছে। এখন পর্যন্ত দুই শতাধিক প্রবাসী এসে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। ’
আওয়ামী লীগ তথা মহাজোটের প্রার্থী এম এ মান্নান বলেন, মহাজোটের পক্ষে জগন্নাথপুর ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জের শতাধিক ‘লন্ডনি’ দেশে এসে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাজ করছেন।
ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী শাহীনুর পাশা চৌধুরী তাঁর পক্ষে অর্ধশতাধিক প্রবাসী এসে প্রচারণা চালাচ্ছেন বলে দাবি করেন।