1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কোটা আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদের পরিবার পেল সাড়ে ৭ লাখ টাকার চেক শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি, আমার বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী কোটা আন্দোলনের দুই সমন্বয়কের সঙ্গে সরকার পতনের আলোচনা হয় ভিপি নুরের! শিক্ষিত প্রজন্মের কাছে আমরা সম্মান চাই: বীর মুক্তিযোদ্ধা রুমা চক্রবর্তী এমপি এভাবে রাষ্ট্রের ধ্বংস মানতে পারছি না: প্রধানমন্ত্রী আন্দালিব রহমান পার্থ ৫ দিনের রিমান্ডে কোটা আন্দোলন সহিংসতায় নিহতদের পরিবারের দায়িত্ব নেবেন প্রধানমন্ত্রী : কাদের গবেষক দীপংকর মোহান্ত সুনামগঞ্জ পিটিআইয়ে সুপার হয়ে আসায় কবি লেখকদের ফুলেল শুভেচ্ছা সুনামগঞ্জে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শীথিল সিলেটসহ ১১ অঞ্চলে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আভাস

নাইকো দুর্নীতির টাকা খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান নিয়েছেন: এফবিআই

  • আপডেট টাইম :: শনিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৮, ১.৪২ পিএম
  • ১৯২ বার পড়া হয়েছে

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের করা নাইকো দুর্নীতি মামলায় কানাডার রয়্যাল মাউন্টেড পুলিশ ও যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই) কর্মকর্তাদের তদন্ত প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে দাখিল করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলায় কানাডার পুলিশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের এফবিআইয়ের কয়েকজন কর্মকর্তার সাক্ষ্য নিতে বিচারিক আদালতে আবেদন করা হয়েছে। দুই দেশের তিন তদন্ত কর্মকর্তার জবানিতে নাইকো দুর্নীতিতে খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানের সংশ্লিষ্টতার কথা এসেছে। এই প্রসঙ্গে তদন্তকারী কর্মকর্তা (এফবিআই-এর কর্মকর্তা) ডেবরা গ্রিফিত তার দেওয়া সাক্ষ্যে জানিয়েছেন, তার তদন্তে উঠে এসেছে কাশেম শরিফ নিয়ন্ত্রিত অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গিয়েছে সেলিম ভুঁইয়া, বাবুল গাজী ও জামাল শামসির কাছে। প্রমাণ রয়েছে এসব অর্থ ছিল ঘুষের অর্থ। যা তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানসহ অন্যদের দেওয়ার জন্য মধ্যস্থতাকারীদের হাতে দেওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অনুরোধের পর ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে নাইকো দুর্নীতি নিয়ে তদন্ত শুরু করেন এফবিআই’র আন্তর্জাতিক অর্থ পাচার ও সম্পদ উদ্ধার বিশেষজ্ঞ স্পেশাল এজেন্ট ডেবরা লাপ্রেভোটে গ্রিফিত। ২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত তিনি চারবার বাংলাদেশ সফর করেন। ওই সময় ন্যাশনাল কোঅর্ডিনেশন কমিটি অ্যাগেইন্সট গ্রিয়েভাস অফেন্সেস (এনসিসিএজিও)-এর সঙ্গে তিনি ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছেন। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশি তদন্তকারীদের সঙ্গে কাজ করেছেন তিনি। তদন্ত কাজে তিনি যুক্তরাষ্ট্র, বাংলাদেশ, সিঙ্গাপুর, সুইজারল্যান্ড ও কানাডা থেকে নথি সংগ্রহ করেছেন।
মার্কিন প্রসিকিউটরকে দেওয়া সাক্ষ্যে এফবিআই কর্মকর্তা ডেবরা গ্রিফিত জানান, ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে ঢাকায় নাইকোর হয়ে কর্মকাণ্ড নিয়ে সাক্ষ্য দেন সেলিম ভুঁইয়া। আদালতকে সেলিম জানান, ২০০২ সালে মামুনের কার্যালয়ে তাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ওই সময় মামুনের কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন নাইকো বাংলাদেশের তৎকালীন ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরিফ। তারা নাইকোর সঙ্গে সরকারের চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য সেলিমের সহযোগিতা চান। সেলিম উল্লেখ করেন, গ্যাস উত্তোলনের চুক্তির বিষয়ে সহযোগিতা করলে কাশেম তাদের আর্থিক সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। বিচারকদের কাছে সেলিম বলেন, তার কাজ ছিল নাইকোর হয়ে সরকারের বিভিন্ন অনুমতি আদায় করা।
সেলিম উল্লেখ করেন, পরে তিনি ও মামুন তার বন্ধু জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে দেখা করে সহযোগিতা চান। প্রতিমন্ত্রী তাদের সহযোগিতা করতে রাজি হন। এর ফলে মামুন ও সেলিম নাইকোর চুক্তির বিষয়ে অগ্রগতি জানতে নিয়মিত মোশাররফ হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। ২০০৩ সালের শেষ দিকে বাপেক্স-নাইকো জেভিএ স্বাক্ষরিত হয়। জেভিএ সফলভাবে স্বাক্ষরিত হওয়ায় সুইজারল্যান্ডে কাশেম শরিফের নিয়ন্ত্রণাধীন অ্যাকাউন্টে জমা হয় ২৯ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার। পরে সেখান থেকে কাসিম ৫ লাখ ডলার (প্রায় তিন কোটি টাকা) বাংলাদেশে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে সেলিমের অ্যাকাউন্টে দেন।
জবানবন্দিতে সেলিম জানান, এই টাকা থেকে মামুনকে একটি পে অর্ডারের মাধ্যমে দিয়েছেন ১ লাখ ৮০ টাকা এবং বাকি টাকা নগদ ও চেকের মাধ্যমে। তিনি মনে করেন, মামুনকে দেওয়া এই টাকা প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠদের সঙ্গে ভাগাভাগি করা হয়েছে। সেলিম আরও জানান, মোশাররফ হোসেনকে একই অ্যাকাউন্ট থেকে দেওয়া হয় ৬০ লাখ টাকা এবং নিজের লবিং ফি হিসেবে বাকি ৬০ লাখ টাকা রাখেন।
ডেবরা গ্রিফিত তার দেওয়া সাক্ষ্যে আরও বলেছেন, বিস্তারিত তথ্য-প্রমাণে দেখা যায়, জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী, খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান এবং অন্যদের ঘুষ দেওয়ার জন্য কাশেম শরিফ নিয়োগ দিয়েছিলেন সেলিম ভুঁইয়াকে। আমার তদন্তে উঠে এসেছে, কাশেম শরিফ নিয়ন্ত্রিত অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গিয়েছে সেলিম ভুঁইয়া, বাবুল গাজী ও জামাল শামসির কছে। প্রমাণ রয়েছে এসব অর্থ ছিল ঘুষের অর্থ। যা প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ অন্যদের দেওয়ার জন্য মধ্যস্থতাকারীদের হাতে দেওয়া হয়েছে।
এফবিআই কর্মকর্তা আরও বলেছেন, তদন্তে উঠে এসেছে যে, ২০০৩ সালে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেন নাইকো ও বাপেক্সের মধ্যকার জেভিএ স্বাক্ষরের জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের মৌখিক নির্দেশনা দিয়েছিলেন।
রয়্যাল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশের (আরসিএমপি) তদন্ত কর্মকর্তা কেভিন ডুগান সাক্ষ্যে জানিয়েছেন, ২০০৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর সিটি ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড স্টেটমেন্ট থেকে জানা যায়, রহমান গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের প্রযত্নে মো. গিয়াস উদ্দিন আল-মামুন নামের ক্রেডিট কার্ড অ্যাকাউন্টে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা জমা হয়েছিল। ব্যাংক স্টেটমেন্ট অনুসারে, এই অ্যাকাউন্টটি গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ও তারেক রহমানের কাছে থাকা ক্রেডিট কার্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত।
কেভিন ডুগান জানান, কানাডার তদন্তকারীদের কাছে দেওয়া সাক্ষ্যে গিয়াস উদ্দিন মামুন জানায়, রহমান ইন্ডাস্ট্রিজ ক্রেডিট কার্ডের জন্য শুধু ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু এটা তারেক রহমানের সঙ্গে তার ব্যক্তিগত কার্ড।
কানাডা পুলিশের এই তদন্ত কর্মকর্তা বলেছেন, নিজে কেন নাইকোর দেওয়া অর্থে বেশিরভাগটা রেখেছেন, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে গিয়াস উদ্দিন আল মামুন যা বলেছিলেন জবানবন্দিতে, তারও উল্লেখ করেছেন সেলিম ভূঁইয়া। তার দাবি, ‘বেশিরভাগ টাকা মামুন নিজের কাছে রেখেছেন। কারণ তারেক রহমান তার সঙ্গে আছেন। ’
কানাডার আরেক তদন্ত কর্মকর্তা লয়েড স্কোয়েপের সাক্ষ্যে উঠে এসেছে, প্রকল্পটি চূড়ান্তভাবে পাস করাতে দরকার ছিল জ্বালানি প্রতিমন্ত্রীর স্বাক্ষর। মোশাররফ হোসেন প্রকল্পের আবার পাঠান তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার কাছে। খালেদা জিয়া এতে বিস্মিত হয়ে জানতে চেয়েছিলেন, যে প্রকল্পের অনুমোদন তিনি আগেই দিয়েছেন, তা কেন আবার তার কাছে পাঠানো হলো এবং প্রকল্পটির তো বাস্তবায়ন শুরু হয়ে যাওয়ার কথা।
লয়েড আরও বলেন, ফাইলটি মোশাররফের কাছে ফেরত যায়। তিনি ভীত হয়ে পড়েন এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল সিদ্দিকীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন। কামাল সিদ্দিকী স্পষ্টভাবেই মোশাররফকে প্রকল্পটি অনুমোদন দিতে বলেন।
উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ৯ ডিসেম্বর তত্ত্বাবধায়ক সরকার খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে তেজগাঁও থানায় মামলাটি দায়ের করে দুদক। ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় দুদক। মামলায় অভিযোগে বলা হয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনটি গ্যাসক্ষেত্র পরিত্যক্ত দেখিয়ে কানাডীয় কোম্পানি নাইকোর হাতে ‘তুলে দেওয়ার’ মাধ্যমে আসামিরা রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করেছেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন—সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব শফিউর রহমান, ব্যবসায়ী গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, বাগেরহাটের সাবেক এমপি এম এ এইচ সেলিম এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া-বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরিফ।
-বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!