হাওর ডেস্ক ::
বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের ছয় মাসের মাথায় এর মালিকানা ও দেখভালের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছে বাংলাদেশ। এখন থেকে বাংলাদেশ কমিউনেকশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটিড (বিসিএসসিএল)’র অধীনে স্যাটেলাইটির সম্পূর্ণ কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
শুক্রবার বিকালে রাজধানীর বাংলামোটরের বিসিএসসিএল কার্যালয়ে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মালিকানা বাংলাদেশকে সম্পূর্ণরূপে বুঝিয়ে দেয় ।
স্যাটেলাইটটির টাইটেল স্পন্সর প্রথমে বিটিআরসির কাছে এবং পরে বিটিআরসি বিসিএসসিএল’র কাছে টাইটেল স্পন্সর হস্তান্তর করে।
অনুষ্ঠানে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, বাংলাদেশ কমিউনেকশন স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটিড (বিসিএসসিএল)’র চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ, বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক, থ্যালেস আলেনিয়ার পোগ্রাম ম্যানেজার জিল ওবাদিয়াসহ একাধিক প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত আছেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, আজকের দিনটি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের। আজ থেকে স্যাটেলাইটের পুরো মালিকানা বাংলাদেশের। এর আগে প্রাথমিকভাবে দায়িত্ব বুঝে নেয় বাংলাদেশ।
এদিকে ৪ নভেম্বর বাংলাদেশে টেলিভিশনে (বিটিভি) সাফ ফুটবলের দুটি খেলা দেখানোর মধ্যদিয়ে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের পরীক্ষামূলক সম্প্রচার সফল হয়। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ পৌঁছেছে অনন্য উচ্চতায়। আর প্রথমবারের মতো নিজেদের স্যাটেলাইট ব্যবহারে ট্রান্সমিশনেও নাম লেখিয়েছে বাংলাদেশ।
এছাড়া ৬ জুন সংসদের বাজেট অধিবেশনে বঙ্গবন্ধু-২ তৈরির প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাধারণত একটি স্যাটেলাইটের বয়স ধরা হয় ১৫ বছর। যা তৈরি করতে ৫ থেকে ৬ বছর লেগে যায়। সেজন্য এখন থেকেই বঙ্গবন্ধু-২ তৈরির প্রস্ততি নিচ্ছি। একটা থাকতে থাকতে আরেকটি যেন চালু হয়ে যেতে পারে সেটা মাথায় রেখেই আমরা কাজ শুরু করে দিয়েছি। দ্বিতীয় স্যাটেলাইটের সময় শেষ হয়ে এলে আমরা বঙ্গবন্ধু-৩ তৈরি করবো। এভাবে পর্যায়ক্রমে আমাদের ধারাবাহিকতা চালিয়ে যাবো।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে চাই আমরা। যখন যে প্রযুক্তি আসবে সেটা যেন আমরা গবেষণা, ধারণ ও ব্যবহার করতে পারি সেই ব্যবস্থা নেবো। যখনই যা আধুনিক ও যুগোপযোগী হবে সেটাই আমরা চিন্তাভাবনা করবো।’
গত ১২ মে বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ২ টা ১৪ মিনিটে যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে দেশের প্রথম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’র সফল উৎক্ষেপণ হয়। নিজ কক্ষপথ ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রিতে পৌঁছানোর পর এর ইন অরবিট টেস্টসহ (আইওটি) নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ হয়৷ পাওয়া যায় সফল সংকেত। পরে সেপ্টেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ চাম্পিয়নশিপ সরাসরি সম্প্রচারের ক্ষেত্রেও সফলতা দেখিয়েছি দেশের এই স্যাটেলাইট।
এছাড়া কয়েকটি বেসরকারি টেলিভিশনের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের পরীক্ষাও শেষ হয়েছে। গত ৩১ জুলাই এ স্যাটেলাইটের জন্য গাজীপুর ও রাঙামাটির বেতবুনিয়ায় দুটি ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
গাজীপুর গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে সার্বক্ষণিক মহাকাশে থাকা বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর গতিবিধি ও অবস্থান পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। স্যাটেলাইট মহাকাশে উৎক্ষেপণের পর গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে সংকেত দিচ্ছে ও নিচ্ছে। গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে ট্র্যাকিং ও কন্ট্রোলিংয়ের কাজ হচ্ছে এবং পুরো সিস্টেমটিকে টেস্ট করা হচ্ছে।