স্টাফ রিপোর্টার,তাহিরপুর
সুনামগঞ্জের বাদাঘাট-শক্তিয়ারখলা সড়কে জীবনের ঝুকিঁ নিয়ে দূর্ভোগের মধ্যে দিয়ে চলাচল করছেন দুই উপজেলার সাধারণ মানুষ। জেলার দুটি উপজেলা জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ করার একমাত্র সড়কপথটি বেহাল। তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট-পাঠানপাড়া সড়ক ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মিয়ারচর-শক্তিয়ারখলা বাজার পর্যন্ত সড়কের অংশ খুবই খারাপ। এই সড়কে বড় বড় গর্ত ও ভাঙ্গাচুরা থাকায় চরম দূভোর্গে রয়েছে দুই উপজেলার ১৫টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। দীর্ঘ ২বছরের অধিক সময় ধরে এই বেহাল অবস্থা থেকে উত্তরনের জন্য সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কোন কার্যকর প্রদক্ষেপ না নেওয়ার চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলার ব্যবসা বাণিজ্যের প্রানকেন্দ্র হিসেবে পরিচিত বাদাঘাট ইউনিয়নের বাদাঘাট বাজার। এই বাজারে উপজেলা সদর ও অন্যান্য ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ এবং পাশ্ববর্তি বিশ্বম্বরপুর উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানুষ আসেন দৈনিক নিত্য প্রয়োজনীয় সকল প্রকার জিনিসপত্র ক্রয় বিক্রয় করার জন্য। তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট বাজার দিয়েই উপজেলার শ্রীপুর উত্তর,বড়দল দক্ষিন,বড়দল উত্তর,সীমান্ত এলাকা ও বাদাঘাট ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ মিয়ারচর খেয়াঘাট পাড়ি দিয়ে পাশ্ববর্তি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শক্তিয়ারখলা বাজার দিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করে থাকে। কিন্তু এই সড়কের বাদাঘাট বাজারের হোন্ডা ষ্টেন্ডের সামনে থেকে পাঠানপাড়া (মিয়ারচড়) খেয়াঘাট পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়কে বড়বড় গর্ত সেই সাথে সড়কের বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গনের কারনে প্রায়ই ঘটছে সড়ক দূর্ঘটনা। এদিকে সুনামগঞ্জ সড়কের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মিয়ারচর-শক্তিয়ারখলা বাজার পর্যন্ত সাড়ে ৩ কিলোমিটার সড়কেও একেই অবস্থা বিরাজ করছে। এতে করে স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টান ও সরকারী উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং বিভিন্ন বেসরকারী প্রতিষ্টান থাকার কারনে বাদাঘাট ইউনিয়নের দীঘিরপাড়,পাঠান পাড়া,কামড়াবন্দসহ ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মনবেগ,সিরাজপুর,সত্রিশসহ ১৫টি গ্রামের সাধারন মানুষ ও শিক্ষার্থীরা প্রতিদিনেই বিভিন্ন যানবাহনে চলাচল করতে গিয়ে আহত হচ্ছে শিক্ষার্থীসহ নানান বয়সের মানুষ। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মিয়ারচর,সিরাজপুর গ্রামের শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান, রবি, শাওন, অনিকসহ অনেকেই জানান মিয়ারচর খেয়াঘাট থেকে শক্তিয়ারখলা বাজার পর্যন্ত সড়কের বড় বড় গর্ত ও ভাঙ্গনের কারনে চলাচলে অনেক কষ্ট করতে হয়। অনেক সময় টমটম, মটরসাইকেল দিয়ে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনার শিকার ছোট বড় সবাই। এই সড়কটি দ্রূত মেরামত করা খুবেই প্রয়োজন। বাদাঘাট বাজারের মেডিসিন কোম্পানীর ফারিয়ার সভাপতি সুহেল আহমদ সাজু ও বাদাঘাট গ্রামের বাসিন্দা সুমন, ফকির, মাসুদ, লাদেন, হারুন মিয়াসহ অনেকেই ক্ষোভে জানান, দীর্ঘ দিন ধরেই এই গুরুত্বপূর্ন সড়কটির বেহাল অবস্থা কারো কোন দায় নেই। ভাঙ্গাচুরা থাকার কারনে এর মাঝেই হোন্ডা,টমটম,টেলাগাড়ী চলাচল করছে জীবনের ঝুঁিক নিয়ে। আমরা আছি চরম দূর্ভোগের মাঝে। বাদাঘাট বাজার ব্যবসায়ী রাশিদ ভূঁইয়া, সেলিম হায়দার, মাসুক মিয়া, আবুল কালামসহ অনেকেই বলেন, জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ করার এই একমাত্র গুরুত্বপূর্ন সড়কটি দীর্ঘ দিন ধরেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। তাই দ্রুত সংস্কার জরুরি।
বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মুক্তার মিয়া ও বাদাঘাট ডিগ্রি কলেজের ক্রিয়া শিক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, এই সড়কটি দিয়ে বাদাঘাট বাজার ও বাজার সংলগ্ন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী প্রতিষ্টানের লোকজন সড়কটি ভাঙ্গা চুরা থাকায় পানি জমে থাকায় কাদাঁ পানির মধ্য দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। অনেক সময় কাপড় নষ্ট হয়ে যায়।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা দক্ষিণ বাদাঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এরশাদ মিয়া জানান, মিয়ারচর-শক্তিয়ারখলা সড়কটির বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তপক্ষের সাথে কথা বলেছি এবং সেই অনুযায়ী প্রকল্প ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র তৈরী করে জেলায় পাঠিয়েছি।
তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আপ্তাব উদ্দিন জানান, গুরুত্বপূর্ন সড়কটি মেরামতের জন্য আমি বর্তমান এমপি মহোদয় ও উপজেলা প্রকৌশলীর সাথে জোরালো ভাবে কথা বলেছি সবাই আশ্বাস দিয়েছেন। জনসাধারনের সুবিধার কথা বিবেচনা করে দ্রুত সংস্কারের করা দাবী জানাচ্ছি। তাহিরপুর উপজেলার এলজিইডি প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলমগীর হোসেন জানান, গুরুত্ব পূর্ন এই সড়কটির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।