স্টাফ রিপোর্টার::
শিল্পমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু বলেছেন, এই দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তৎকালীন উপমহাদেশের শ্রেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক ড. কুদরত-ই-খোদার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু একটি শিক্ষা কমিশন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুুজিবুর রহমানকে হত্যার পর সেটি আর বাস্তবায়ন হয়নি। ২০১০ সালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী সর্বস্তরের নেতা-নেতৃবৃন্দসহ ও বিভিন্ন দেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে একটি যুগোপযোগী শিক্ষানীতি প্রণয়ন করেছেন। আর এর ফলেই শিক্ষাক্ষেত্রে আমুল পরিবর্তন হয়েছে। কেননা ২০০৯ সালে এই দেশে যেখানে শিক্ষার হার ছিল মাত্র শতকরা ৪৭ ভাগ আর বর্তমানে তা শতকরা ৭২ভাগে উন্নীত হয়েছে।
ধর্মপাশা উপজেলার ধর্মপাশা ডিগ্রি কলেজটি সরকারিকরণ উপলক্ষে সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতনকে কলেজ কর্তৃপক্ষের দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শনিবার দুপুরে কলেজ চত্বরে এই গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়।
শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু আরও বলেন, ১৯৯৬ সালে আমরা ক্ষমতায় আসার পর এই দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল ৪০ হাজার মেট্রিক টন। আর ২০০৯ সালে আবার ক্ষমতায় আসার পর তা ছিল ২৬ হাজার মেট্রিক টন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে এই দেশে কোনো খাদ্য ঘাটতি থাকেনা। বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে গেছে। ফলে খাদ্য আমদানির পরিবর্তে আমরা ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল বিদেশে রপ্তানি করতে সক্ষম হয়েছি।
মন্ত্রী বলেন, সংবিধান অনুযায়ীই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে তিনি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আনার মাধ্যমে এই দেশকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার করার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ধর্মপাশা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আব্দুল করিম।
উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শামীম আহমেদ মুরাদ ও ধর্মপাশা সরকারি কলেজের প্রভাষক মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী মাহমুদ-এর সঞ্চালনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এমপি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব মো. আব্দুল হালিম, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ, জেলা আওয়ামী লীগের কৃষি বিষয়ক সম্পাদক করুণাসিন্ধু চৌধুরী বাবুল, ধর্মপাশা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমেদ বিলকিস, মধ্যনগর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক গিয়াস উদ্দিন নূরী, ধর্মপাশা সরকারি কলেজের প্রভাষক আফরোজ মাহবুবা খান, ধর্মপাশা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন রোকন প্রমুখ। এর আগে ধর্মপাশা সরকারি কলেজ কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে ওইদিন সকাল পৌনে ১১টার দিকে কলেজ চত্বর থেকে এক আনন্দ র্যালি বের হয়। এটি উপজেলার সদর বাজারের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এদিকে শনিবার বিকেলে তাহিরপুর উপজেলার ট্যাকেরঘাট শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
এ সময় তিনি বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি আবারো তৎপর হয়ে উঠেছে। তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নির্বাচন বানচাল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।
আমির হোসেন আমু আরো বলেন, বাংলার মানুষের উপরে আমাদের বিশ্বাস আছে। আমরা জানি বাংলার মানুষ যে উন্নয়নের ছোঁয়া পেয়েছে, বাংলার মানুষ শিক্ষার আলো পেয়েছে, স্বাস্থ্যের অধিকার পেয়েছে, সে জন্য তারা শেখ হাসিনার সাথে ঐক্যবদ্ধ। তাই ২০১৪ সালের মতো কোন অপশক্তি এই উন্নয়নের ধারাকে ব্যাহত করতে পারবে না।
আমির হোসেন আমু তাঁর বক্তব্যে বলেন, আগামীতেও শেখ হাসিনা নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান মেনে অনুষ্ঠিত হবে এবং আবারো আওয়ামী লীগ জনগণের ভোটে সরকার গঠন করবে। একাত্তরের পরাজিত শক্তি বার বার শেখ হাসিনাকে হত্যার চেষ্টা চালিয়েছে, এখনো তারা সক্রিয়। এই অপশক্তি দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়।
মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্বের কাছে পরিচিতি পেয়েছে। এই দেশ সম্ভাবনাময় দেশ, বিশ্বের প্রায় সব দেশ আমাদের এখানে বিনিয়োগ করতে চায়।
শিল্পমন্ত্রী আরো বলেন, সুনামগঞ্জে ক্ষুদ্র শিল্পের বিকাশের জন্য ইতোমধ্যে ৩২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। আদিবাসীদের কুটিরশিল্পের জন্য আরও বেশি টাকা দেওয়া হবে। এলাকার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। এলাকাবাসীকে ভাবতে হবে কে বেশি এলাকার উন্নয়ন করেছে। কার দ্বারা হাওর এলাকাকে একটি উন্নত জনপদে রূপান্তরিত করা সম্ভব। শেখ হাসিনার নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আপনারা বিজয়ী করেন। তাহলেই উন্নয়ন হবে।
তাহিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আবুল হোসেন খাঁর সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলকাছ উদ্দিন খন্দকার, আলী মুর্তুজা, জালাল উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মোদাচ্ছির আলম, উপজেলা আ.লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক ফরিদ গাজী প্রমুখ।