1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ১২:০০ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

স্ত্রীর সহায়তায় এতিম তরুণীকে র্ধষণ: ছাতকের সেই মাওলানা আব্দুল হক জেল হাজতে

  • আপডেট টাইম :: সোমবার, ৪ মার্চ, ২০১৯, ১২.১৯ পিএম
  • ২৭৬ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি::
স্ত্রীর সহযোগিতায় দীর্ঘদিন ধরে এতিম হতদরিদ্র তরুণীকে ধর্মীয়ভাবে মোহাচ্ছন্ন করে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় মাদরাসা শিক্ষক মাওলানা আব্দুল হককে জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন আদালত। সোমবার দুপুরে সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন মাওলানা আব্দুল হকের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন। এদিকে চাজর্শীট থেকে মাওলানা আব্দুল হকের স্ত্রী অভিযুক্ত সাকেরা আক্তারকে বাদ দেওয়ায় আসামি পক্ষের আইনজীবী আদালতের কাছে নারাজির অনুরোধ জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর দৈনিক কালের কণ্ঠে ‘ছাতকে তরুণীকে দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণ’ শিরোনামে সর্বপ্রথম সংবাদটি প্রকাশিত হলে জেলা ব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়। এ নিয়ে সুনামগঞ্জ জেলা মহিলা পরিষদসহ নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটি মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। গত বছরের ৩০ অক্টোবর ধর্ষক আব্দুল হক ও তার স্ত্রী সাকেরার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন নির্যাতিত তরুণি জাকেরা আক্তার আম্বিয়া।
মামলার বিবরণে জানা যায়, দীর্ঘ এক দশক ধরে ছাতকের কালারুকা ইউনিয়নের নয়া লম্বাহাটি গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের ওই তরুণীকে ধর্মীয় কথাবার্তায় মোহাচ্ছন্ন করে স্ত্রীর সহায়তায় ধর্ষণ করে আসছিল হাসনাবাদ মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা আব্দুল হক। ধর্ষিতা ওই তরুণী আব্দুল হকের মেয়ের বান্ধবী ও ধর্ষক শিক্ষকের মাদ্রাসার ছাত্রী। দুই বছর আগে এক বিবাহিত প্রবাসীর কাছে ওই তরুণীকে বিয়ে দেন মাওলানা আব্দুল হক। প্রবাসী স্বামী বিদেশ চলে যাওয়ার পর আব্দুল হক আবারও তরুণীকে ধর্ষণ করতে চাইলে বাধা দেন তিনি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তরুণীর বাবার বাড়ি এসে তাঁকে আবারও ধর্ষণ করেন ওই মাওলানা। বিষয়টি প্রবাসে থেকে জানতে পারেন তাঁর স্বামী ও শ্বশুরের পরিবারের লোকজন। একপর্যায়ে নির্যাতিতা তরুণী তাঁর পরিবার ও তাঁর শ্বশুরের পরিবারকে তাঁর ওপর দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন চালানো মাওলানা আব্দুল হকের বর্বরতার কথা প্রকাশ করেন। এতে ক্ষুব্ধ ও হতভম্ব হয়ে পড়ে সবাই। এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে সালিস হলে মাওলানা আব্দুল হককে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। নির্যাতিত তরুণী আইনি আশ্রয় নিতে চাইলে তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখে মাওলানা আব্দুল হকের ঘনিষ্ঠজন ও কিছু সালিসকারী। সালিসকারীরা ফতোয়া জারি করে বলে, এ ঘটনা প্রকাশ করা পাপ এবং এতে আলেমসমাজের কলঙ্ক হবে। নানাভাবে নির্যাতিতাকে দমিয়ে রাখতে ব্যর্থ হয় মাওলানা ও তার স্বজনরা। ধর্ষনের এ ঘটনা কালের কণ্ঠে প্রকাশের পর মাদ্রাসা কৃর্তপক্ষ মাওলানা আব্দুল হককে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার করেছিল। গত ৩০ অক্টোবর মাতুব্বর ও মাওলানার স্বজনদের হুমকি উপেক্ষা করে ছাতক থানায় গিয়ে মাওলানা আকরাম আলীর ছেলে ধর্ষক মাওলানা আব্দুল হক (৫৫) ও তাঁর স্ত্রী সাকেরা বেগমের (৪৫) বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছিলেন ওই তরুণী। মামলার পর থেকেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান অভিযুক্ত দম্পত্তি। এক পর্যায়ে মামলা থেকে অভিযুক্ত স্ত্রী সাকেরা আক্তারকে বাদ দিয়ে আদালতে চার্জশীট প্রদান করে পুলিশ। গতকাল সোমবার দুপুরে চুপিসারে আদালতে আতœসমর্পন করে জামিন প্রার্থনা করেন মাওলানা আব্দুল হক। মহিলা পরিষদের প্যানেল আইনজীবী মতিয়া আক্তার জামিনে শক্তভাবে বাঁধা প্রদান করেন। বিকেলে আদালতের বিচারক মো. জাকির হোসেন মাওলানা আব্দুল হকের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
সুনামগঞ্জ মহিলা পরিষদের প্যানেল আইনজীবী এডভোকেট মতিয়া আক্তার বলেন, মাওলানা আব্দুল হক প্রভাব বিস্তার করে চার্জশীট থেকে তার স্ত্রীকে বাদ দিয়েছেন। আমরা আদালতের মাধ্যমে চার্জশিটের বিরুদ্ধে নারাজি প্রদানের কথা বলেছি। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন পলাতাক থাকার পর চুপিসারে এসে জামিন নিতে চেয়েছিলেন মাওলানা আব্দুল হক। আমরা খবর পেয়ে বাধা প্রদান করেছি। আদালত সবকিছু বিবেচনা করে তার জামিন নামঞ্জুর করেছেন। মহিলা পরিষদের পক্ষে মামলায় উপস্থিত ছিলেন এডভোকেট তৈয়বুর রহমান বাবুল।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি এডভোকেট নান্টু দাস মাওলানা আব্দুল হকের জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশনার কথা স্বীকার করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!