1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:২২ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলন: অনিয়ম দুর্নীতির প্রকল্পেরও যথাসময়ে কাজ হয়নি

  • আপডেট টাইম :: সোমবার, ৫ মার্চ, ২০১৮, ১১.১৭ এএম
  • ২৭৮ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার ::
সুনামগঞ্জে হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মানে নীতিমালা লঙ্ঘন, অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহন করেও যথাসময়ে বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ করা যায়নি। নানা অনিয়মের প্রতিবাদে হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন সোমবার দুপুরে শহরের শহিদ মুক্তিযোদ্ধা জগৎ জ্যোতি পাঠাগার মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন করে। হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি অ্যাড. বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু’র সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ নির্মাণের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে আমরা লক্ষ্য করেছি বাঁধ নির্মাণে দায়িত্বপ্রাপ্ত অনেকেই নিবেদিত হয়ে কাজ করছেন, আমরা তাঁদের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়ে আসছি। কিন্তু এর পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে বাঁধ নির্মাণে নেয়া অনেক পদক্ষেপ আমাদের উদ্বিগ্ন করেছে। এইসব পদক্ষেপের প্রতিবাদ করে হাওরবাসীর পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছি।
প্রসঙ্গত, চলতি বোরো মৌসুমে ফসল রক্ষা বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরুর প্রাক্কালে সঠিক সময়ে বাঁধের কাজ শুরু, তদারকিতে সেনাবাহিনী মোতায়েন ও বিগত বছরের হাওর দুর্নীতির সাথে জড়িত ব্যক্তিদের প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইসি) কমিটিতে অর্ন্তভুক্ত না করার দাবি জানিয়েছিলাম। দাবিগুলোর পক্ষে জেলা সদরসহ উপজেলায় উপজেলায় সংগঠনের উদ্যোগে মানববন্ধন করা হয়েছে। কিন্তু কৃষকের পক্ষে আমাদের এই ন্যায্য দাবিগুলোর কোনটাই আমলে নেয়া হয়নি।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, ২৮ ফেব্রুয়ারি মধ্যে সকল ফসল রক্ষাবাঁধের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত করার কথা থাকলেও কোন বাঁধের কাজই ওই সময়ের মধ্যে সমাপ্ত করা হয়নি। দেরিতে নির্মিত বাঁধের মাটি আলগা থাকার কারণে বাঁধগুলো দুর্বল হবে। এতে করে সামান্য বৃষ্টিপাত ও বন্যার পানির প্রথম ধাক্কায় দুর্বল বাঁধগুলো ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকিতে থাকবে। বাঁধের ৫০ মিটার দূর থেকে মাটি এনে বাঁধ নির্মাণের বিধান থাকলেও বেশিরভাগ পিআইসি এই বিধানের তোয়াক্কা না করে বাঁধের গোড়া থেকে মাটি উত্তোলন করে বাঁধ নির্মাণ করছে। এতে বাঁধের ভিত্তি দুর্বল হওয়ায় বাঁধগুলোর পানির চাপ সামলানোর ক্ষমতা থাকবেনা। নীতিমালায় বাঁধের গ্রাউন্ড লেবেল আপার লেবেলের তিনগুণ হওয়ার কথা থাকলেও বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশ্যে বেশিরভাগ বাঁধের আপার লেবেল ঠিকটাক রেখে গ্রাউন্ড লেবেল সরু করা হয়েছে। এতে নির্মিত বাঁধগুলো নিচ থেকে উপরে খাড়া হওয়ায় সহজেই ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বোরো ফসল রক্ষায় আবশ্যক অনেক হাওরে বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প গ্রহণ করা না হলেও প্রভাবশালীদের ইশারায় তাদের স্থানীয় অনুসারীদের অবৈধ আর্থিক সুবিধা দিতে অনেক অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প গ্রহণ করে সরকারি অর্থ অপচয় করা হচ্ছে। হাওরের বোরো ফসল রক্ষাবাঁধের টাকা দিয়ে শহররক্ষা বাঁধ, গ্রামের যাতায়াতের রাস্তা, কোন দিন কাজে আসবে না এমন রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। প্রতিটি বাঁধে আবশ্যিকভাবে র্দূমুজ করার কথা থাকলেও, আমাদের পরিদর্শণকৃত কোন বাঁধেই দুর্মুজের কাজ পরিলক্ষিত হয়নি। বাঁধে দুর্মুজ করার জন্য ২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও এ টাকার কোন কাজ করা হয়নি, ফলে এ টাকা অপচয় ও আত্মসাত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
আরো বলা হয়, পুরাতন অনেক বাঁধে মাটির প্রলেপ দিয়ে বাঁধটিকে একেবারে নতুনের মতো অবয়ব দেওয়া হচ্ছে। ওইসব বাঁধে মাটির পুরো টাকা ধরা হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বৃষ্টির পানি যাতে বাঁধের মাটি কেটে নিয়ে যেতে না পারে সেজন্য বাঁধে ঘাস লাগানোর কথা থাকলেও কোন বাঁধে ঘাস লাগাতে দেখা যায়নি। এখাতে বরাদ্ধকৃত টাকা পুরোটাই অপচয় হওয়ার আশংকা রয়েছে। মাটির বদলে অনেক স্থানে দুর্বল বালির বাঁধ দেওয়া হচ্ছে। আগাম বন্যা হলে ওইসব বাঁধ কিছুতেই পানির চাপ সামলাতে পারবে না। প্রতিটি প্রকল্পতে বরাদ্দের পরিমাণ, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নাম, পদবী সম্বলিত সাইনবোর্ড টানানোর বাধ্যবাধকতা থাকলেও জনগণকে অন্ধকারে রাখতে বেশিরভাগ বাঁধে সাইবোর্ড টানানো হয়নি। কর্তৃপক্ষের চাপে কাজের শেষ পর্যায়ে এসে কোন কোন বাঁধে সাইবোর্ড টানাতে দেখা গেছে।
তাছাড়া সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকবৃন্দের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন, হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু ও সিনিয়র সহ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান।
এসময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বক্তরা বলেন, আমরা নিজের পকেটের টাকা খরচ করে হাওরের গিয়ে বাঁধ ও ড্রেসিনংগুলো দেখেছি। এখন পর্যন্ত আমার ৯৬৪ টি পিআইসির মধ্যে ১১ টি পিআইসি পরিদর্শন করেছি। এবছর হাওরের বাঁধের উন্নয়নের জন্য সরকার আন্তরিক ছিল প্রয়োজন মতো অর্থও সরকার দিয়েছে। কিন্তু আমার বাঁধে গিয়ে দেখেছি ক্ষমতাশীল দলীয় প্রভাব পিআইসিতে সরাসরি সম্পৃক্ত। তারা কাজগুলো সঠিকভাবে করছেন না। তাই প্রশাসন পানি উন্নয়ন বোর্ড ও ক্ষমতাশীল ব্যাক্তিরা যদি আন্তরিক হতেন তাহলে বাঁধের কাজ এখন পর্যন্ত ঠিকমতো হতো।
অন্যানদের মধ্যে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলনে উপদেষ্ঠা বিকাশ রঞ্জন চৌধুরী ভানু, মুক্তিযোদ্ধা মালেক হোসেন পীর, অধ্যক্ষ রবিউল ইসলাম, সংগঠনের সদস্য মুর্শেদ আলম, সালেহীন শুভ, মাছুম হেলাল, মাহবুবুর রহমান পীর, এমরানুল হক চৌধুরী, রাজু আহমদ প্রমুখ।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!