হাওর ডেস্ক::
সরকার পুলিশের হাতে চায়নিজ রাইফেল, সাব মেশিনগান, ৯ এমএম পিস্তলসহ কোনো ধরনের মারণাস্ত্র না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, এই ধরনের অস্ত্র শুধু এপিবিএন (আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন) এর কাছে থাকবে, পুলিশের হাতে থাকা অস্ত্রগুলো জমা দিতে হবে।
আজ সোমবার আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির নবম সভা শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ সিদ্ধান্ত জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুলিশের হাতে প্রাণঘাতী অস্ত্র না রাখার দাবী ওঠে। গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত ডিসি সম্মেলনেও এ ধরনের অস্ত্র না রাখার সুপারিশ করা হয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “মারণাস্ত্র শুধু এপিবিএনের হাতে থাকবে। পুলিশদের অভিযানে মারণাস্ত্রের প্রয়োজন নেই।”
কবে থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে—এ বিষয়ে তিনি বলেন, “আজ শুধু সিদ্ধান্ত হয়েছে, তবে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কিছুটা সময় লাগবে।”
পুলিশের হাতে কোন ধরনের অস্ত্র রাখা যাবে এবং কীভাবে তা কার্যকর হবে, সে বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রধান উপদেষ্টা খোদা বখস চৌধুরীর নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
র্যাব পুনর্গঠন নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, “র্যাবের বর্তমান নাম, পোশাক এবং পুনর্গঠন কীভাবে হবে, এসব বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) আব্দুল হাফিজকে।”
এছাড়া বৈঠকে ঈদের আগে পোশাকশ্রমিকদের বেতন পরিশোধ বিষয়ে আলোচনা হয়। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “শ্রমিকদের বৈধ বেতন মালিকদের পরিশোধ করতে হবে, তবে অবৈধ দাবি মেনে নেওয়া হবে না।”
ঈদ উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নিশ্চিত করার জন্য রাজধানীর প্রতিটি কোরবানির হাটে ১০০ জন আনসার নিয়োগের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি হাইওয়ে পুলিশ সড়কে কার্যক্রম পরিচালনা করবে, চাঁদাবাজি বন্ধ করতে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ভারতের পুশইন
আজকের সভায় ভারতের পুশইন নিয়ে গুরুত্বের সাথে আলোচনা হয়েছে, জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, “ভারত অনেক মানুষকে পুশইন করেছে, তাদের মধ্যে বাংলাদেশের নাগরিকদের সংখ্যা বেশি।”
বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী বলেন, ৭ ও ৮ মে ভারতের বিএসএফ ২০২ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। এসব ব্যক্তির তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়েছে এবং তাদের অনেকেই গত দুই–তিন বছরে ভারতে চলে গিয়েছিল। বর্তমানে প্রশাসন তাদের ঠিকানায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করছে।
তিনি জানান, ভারতের পুশইনকৃত ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৯ জন রোহিঙ্গা ছিল, যারা বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে গিয়েছিল। এর মধ্যে পাঁচজনের ভারতীয় ইউএনএইচসিআর আইডি কার্ড রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং ভারতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জানানো হয়েছে।
বিজিবি মহাপরিচালক আরও জানান, খাগড়াছড়ির ওপারে ২০০–৩০০ জনকে পুশব্যাক করার জন্য রাখা হয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশের নজরদারি বাড়ানোর কারণে তাদের পুশব্যাক করা যাচ্ছে না।