স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার জনপ্রিয় ছাত্রলীগ নেতা ও উপজেলার জয়নাল আবেদীন কলেজের সভাপতি ওয়াহিদ্দুজামান শিপলু হত্যা মামলায় থানার তৎকালীন ওসি শরিফ উদ্দিনকে ১০ বছরের কারাদ- ও দুই হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো তিন বছরের কারাদ-াদেশ দেওয়া হয়েছে। মামলার অন্যতম আসামী তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা বিএনপির সাংগঠনকি সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুলস এবং উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মেহেদী হাসান উজ্জ্বলসহ ৭জনকে খালাস দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রণয় কুমার দাশ এ রায় দেন। উল্লেখ্য গত ২৭ আগস্ট মামলার রায়পূর্ব শোনানীতে আসামীরা উপস্থিত হলে আদালত সবাইকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০০২ সালের ২০ মার্চ তাহিরপুর উপজেলার ভাটি তাহিরপুর গ্রামের বাসিন্দা ও বাদাঘাট জয়নাল আবেদীন কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি ওয়াহিদ্দুজামান শিপলু নিজ বাড়িতে রাতের আধারে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হন। ছাত্রলীগের ওই নেতার মৃত্যুর তিন দিন পর ২৩ মার্চ শিপলুর মা আমিরুন নেছা সুনামগঞ্জ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ৭জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. কামরুজ্জামান কামরুল, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান উজ্জ্বল, উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক জুনাব আলী, বিএনপি কর্মী শাহীন মিয়া, শাহজান মিয়া, তাহিরপুর থানার সাবেক এসাই্ রফিকুল ইসলামকেও আসামী করা হয়। ওসি শরিফুল ইসলাম বাদে অন্যৗ আসামীদের সবাই আদালতের রায়ে খালাস পেয়েছেন।
জানা গেছে আলোচিত এ মামলায় অভিযোগ করা হয়, আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির তৎকালীন রাজনৈতিক বিরোধের জের ধরে তাহিরপুর থানার ওসি শরিফ উদ্দিন ও থানার উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলামের সহযোগিতায় ছাত্রলীগ নেতাকে রাতের আধারে গুলি করে হত্যা করা হয়। আদালত মামলটি আমলে নিয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে কিছুদিন আগে চার্জশিট দেয়া হয়। আদালতে দাখিলকৃত চাজশীটে ওসি-এসআইয়ের সম্পৃক্ততার থাকার কারণে ওসি শরিফ উদ্দিন ও উপ-পরিদশক রফিকুল ইসলামকে চাকুরি থেকে বরখাস্থ করা হয়। দীর্ঘ দিন যুক্তিতর্ক শেষে আদালত বৃহস্পতিবার দুপুরে এ মামলার রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সুনামগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর কবির রুমেন বলেন, ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় তাহিরপুর থানার ওসিকে আদালত ১০ বছরের কারাদ- দিয়েছেন। কিন্তু অন্য আসামিরা অপরাধী হয়েও খালাস পাওয়ায় আমরা ক্ষুব্দ। এই রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করতে যাব। তিনি জানান, কারাদ- পাওয়া সাবেক ওসি শরিফ উদ্দিন বর্তমানে কারাগারে আছেন।
মামলার আসামীপক্ষের আইনজীবী আব্দুল হক বলেন, আমাদের আসামীদের রাজনৈতিক এই মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। অবশেষে আদালত আমাদের আসামীদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন। আমরা আদালতের রায়ে সন্তুষ্ট।