বিশেষ প্রতিনিধি::
নির্ধারিত সময় শেষে কাজ শেষ করতে না পেরে পরবর্তীতে সময় বাড়িয়েও হাওরের ফসলরক্ষা বাধের কাজ শেষ করা যায়নি। এ ঘটনায় উদ্বিগ্ন কৃষকদের প্রতি সংহতি জানিয়ে প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করেছে হাওর বাচাও আন্দোলন। আজ ৭ মার্চ বৃহষ্পতিবার দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করেন তারা। এতে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবাদী সমাবেশে হাওর বাঁচাও আন্দোলনের নেতারা অভিযোগ করেন এবারও হাওরের ফসলরক্ষা বাধের প্রকল্প গ্রহণ, অনুমোদনে অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় প্রকল্পের পাশাপাশি অক্ষত, অল্প ক্ষতিগ্রস্ত প্রকল্পেও সমান বরাদ্দ দিয়ে সরকারের অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে একটি চক্র। দুর্নীতি ও অনিয়মের দিকে নজর থাকায় এবারও তাই যথাসময়ে বাধের কাজ শেষ করা যায়নি।
বক্তারা অভিযোগ করেন, পিআইসি নীতিমালা অনুযায়ি গত ২৮ হাওরের ৭৩৫টি প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল। ১৫ ডিসেম্বর থেকে কাজ শুরুর নির্দেশনা থাকলে যথামসময়ে কাজ শুরু হয়নি। এবার ১২৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৯১ কিলোমিটার অস্থায়ী ফসলরক্ষা বাঁধ সংস্কার, নির্মাণ ও পুননির্মাণ করা হচ্ছে।
বক্তারা অভিযোগ করেন বিলম্বে কাজ শুরু হওয়ায় বাধ টেকসই না হওয়ার আশঙ্কা আছে। বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলের প্রথম ধাক্কা সামলানোর শক্তি থাকবেনা বাঁধের। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি যথাসময়ে ও যথা নিয়মে কাজ শেষ করতে না পারায় ৭ মার্চ পর্যন্ত আরো এক দফা সময় বাড়ানো হয়। কিন্তুও ওই সময়ে এসেও কাজ শেষ করা যায়নি। ফলে হাওরের কৃষকরা উদ্বিগ্ন আছেন। কারো অবহেলায় হাওরের ফসলহানী হলে কঠোর আন্দোলনের ডাক দেন নেতারা।
প্রতিবাদী সমাবেশে বক্তব্য দেন খন হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সহ সভাপতি অধ্যাপক চিত্তরঞ্জন তালুকদার, সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, আইনজীবী সমিতির সভাপতি নজরুল ইসলাম শেফু, কৃষক আন্দোলনের প্রবীণ নেতা রমেন্দ্র কুমার দে মিন্টু, হাওর বাঁচাও আন্দোলন জেলা কমিটির সভাপতি ইয়াকুব বখত বাহলুল, এডভোকেট বুরহান উদ্দিন দোলন প্রমুখ।
উল্লেখ্য ২০১৭ সালে হাওরের ফসলডুবির পর ঠিকাদারী প্রথা বিলোপ করে পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) করে সরকার কৃষকদের নেতৃত্বে হাওরের ফসলরক্ষা বাধ নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করছে। এতে জেলা কমিটিতে জেলা প্রশাসক সভাপতি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। গণশুনানী করে হাওরে গিয়ে প্রকৃত কৃষকদের মাধ্যমে কমিটি গঠনের নির্দেশনা থাকলেও সেটা মানা হচ্ছেনা। ফলে মধ্যস্বত্ত্বভোগীরা ফসলরক্ষা বাধের প্রকল্প নিয়ে অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়ছে বলে কৃষকদের অভিযোগ আছে।