বিশেষ প্রতিনিধি::
এক বছর আগে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে জেলা আওয়ামী লীগের ঐক্যবদ্ধ দাবি ছিল সুনামগঞ্জ সদর আসনে নৌকার প্রার্থী দেওয়ার। কোনভাবেই জাপাকে এই আসনটি ছাড় দিতে নারাজ আওয়ামী লীগের একাধিক হেভিওয়েট প্রার্থী মনোনয়ন চেয়েছিলেন। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়ন দেন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কবি ড. মহোম্মদ সাদিককে। অবশেষে ৩২ বছর পরে এই আসনে বিজয়ের মুখ দেখলো আওয়ামী লীগ। ড. মোহাম্মদ সাদিকের মাধ্যমে আসনটি উদ্ধার করলো আওয়ামী লীগ।
নেতাকর্মীরা জানান, সর্বশেষ ১৯৯১ সনে প্রয়াত নেতা আব্দুজ জহুর এই আসনে নৌকা প্রতীকে এমপি নির্বাচিত হন। পরে টানা দুইবার বিএনপি প্রার্থী এডভোকেট ফজলুল হক আছপিয়া নির্বাচিত হন। গত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন থেকে টানা তিনবার জাতীয় পার্টিকে আসনটি ছেড়ে দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। দীর্ঘদিন জেলা সদরের আসনটি আওয়ামী লীগের হাতছাড়া থাকায় কাঙ্খিত উন্নয়ন হয়নি। সাংগঠনিকভাবেও দুর্বল হয়ে পড়ছে তৃণমূল এমনটি মনে করছেন দলের নেতাকর্মীরা।
এবারের প্রতিটি নির্বাচনী জনসভায় নৌকার প্রার্থী ড. মোহাম্মদ সাদিক সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা সরকারের উন্নয়ন অভিযাত্রা থেকে পিছিয়ে আছে বলে বক্তব্য দেন। এই অগ্রযাত্রায় সুনামগঞ্জ-৪ আসনকে যুক্ত করার দাবি ওঠে। ড. মোহাম্মদ সাদিক সেই দাবিপূরণের অঙ্গিকার করে নৌকায় ভোট চান। তার প্রতিটি সভা বিপুল মানুষের উপস্থিতি হতো। অবশেষে ৭ জানুয়ারি ভোটে কাঙ্খিত ফলাফল পায় নৌকা। পাত্তাই পাননি জাতীয় পার্টির এমপি এডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহর লাঙ্গল।
রাত ১২টায় জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেন। আওয়ামী লীগ প্রার্থী ড. মোহাম্মদ সাদিক নৌকা প্রতীকে ৯০ হাজার ৩৫২ ভোট পান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধিী জাতীয় পার্টির বর্তমান এমপি এডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ লাঙ্গল প্রতীকে ভোট পান ৩১ হাজার ৭১৮। নৌকা ৫৮ হাজার ৬৩৪ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়। এই আসনে গড়ে প্রায় ৪২ ভাগ ভোট কাস্ট হয়েছে।
আওয়ামী লীগের বিজয়ী প্রার্থী ড. মোহাম্মদ সাদিক বলেন, এই জয় সুনামগঞ্জ-সদর ও বিশ্বম্ভরপুরবাসীর বঞ্চনা ও দীর্ঘশ্বাসের। তারা গত ১৫ বছরে সরকারের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় শরিক হতে পারেননি। এখন আমার প্রধান কাজ হবে আমার বঞ্চিত দুটি উপজেলাকে মাননীয় নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের রেলে যুক্ত করা। কাঙ্খিত রায়ের জন্য আমি সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।