1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:২৬ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::

সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন : নেতৃত্বের পরিবর্তন না প্রত্যাবর্তন?

  • আপডেট টাইম :: শুক্রবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩, ১১.১৬ পিএম
  • ১১৫ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি::
উপমহাদেশের প্রাচীনতম রাজনৈতিক সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সম্মেলন আজ। স্বাধীন বাংলাদেশের জন্ম ও স্বাধীনতা পরবর্তী প্রতিটি গণতান্ত্রিক সংগ্রামে আতœত্যাগের প্রোজ্জ্বল স্মারক রচনা করেছেন দলের হাজার হাজার নেতাকর্মী। অসাম্প্রদায়িক এই রাজনৈতিক সংগঠনের সম্মেলন নিয়ে তাই জেলার সর্বত্র জোরেশোরে আলোচনা চলছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের চোখও সম্মেলনের দিকে। নেতৃত্বের পরিবর্তন না প্রত্যাবর্তন, কে আসছেন আওয়ামী লীগের আগামী দিনের নেতৃত্বেÑএ নিয়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে আলোচনা চলছে। তবে নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছেনা নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক কে হচ্ছেন। আওয়ামী লীগের কা-ারী দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত নিবেন সেই সিদ্ধান্তই তৃণমূল আওয়ামী লীগ ও নেতৃত্বপ্রত্যাশীরা মেনে নিবেন বলে জানিয়েছেন।
জেলার প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে অতীতে যারা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তারা ছিলেন গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিত্ব। রাজনীতির পাশাপাশি সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবেও প্রভাবশালী ছিলেন তারা। জাতীয়, স্থানীয় দুর্যোগ ও সংকটে মানুষের পাশে দাড়াতেন নিঃঙ্কোচে। মুক্তিযুদ্ধের আগে পরে এই অঞ্চলের সাম্প্রদায়িক ও আঞ্চলিক দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণ, শান্তি প্রতিষ্ঠা ও ন্যায় বিচারেও ভূমিকা রেখেছেন তারা। মুক্তিযুদ্ধে মূল ভূমিকা পালনসহ স্বাধীনতাপরবর্তী দেশের প্রতিটি সংগ্রামে, আঞ্চলিক দ্বন্দ নিরসনসহ নানাভাবে রাজনৈতিক, সামাজিক শান্তি ও সম্প্রীতি রক্ষার কাজ করেছেন। এসব মোকাবেলা করে দলীয় আদশের্র পতাকা নিয়ে এগিয়েছেন দৃঢ় প্রত্যয়ে। তৃণমূলে তৈরি করেছেন হাজার হাজার আদর্শিক নেতাকর্মী। সততা, নিষ্ঠা ও দেশপ্রেমের স্বাক্ষর রেখেছেন সময়ের পরতে পরতে।
প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা অক্ষয় কুমার দাস, হোসেন বখত, ওবায়দুর রেজা চৌধুরী, এডভোকেট আব্দুর রইস, আলফাত উদ্দিন মোক্তার, আব্দুজ জহুর, আছদ্দর আলী মোক্তার, খলিলুর রহমান চৌধুরী, আকমল আলী মোক্তার, মনোয়ার বখত নেক, আয়ূব বখত জগলুলসহ এরকম আতœত্যাগী ও নেতৃত্বের অধিকারী অসংখ্য নেতা দলীয় নেত্রীত্বের পাশাপাশি সামাজিকভাবেও গ্রহণযোগ্য ছিলেন। তাদের রাজনৈতিক সুনামের কথা এখনো মানুষের মুখে মুখে শোনা যায়। এসব নেতাদের প্রত্যেকেই ছিলেন ব্যক্তিগতভাবে সৎ, নির্লোভ, দেশপ্রেমিক ও আওয়ামী লীগের আদর্শের প্রতি অবিচল। আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে তারা জেল জুলুম খেটে দলের পতাকা সমুন্নত রেখেছিলেন। সেই নেতাদের উত্তরসূরীরা নেতৃত্ব আসলে তৃণমূল উজ্জীবিত হবে বলে মনে করেন বেশিরভাগ নেতাকর্মী।
আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক সূত্রের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পচাত্তর পরবর্তী আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ত্যাগী নেতা, সৎ, দেশপ্রেমিক ও অসাম্প্রদায়িক চিন্তা চেতনার অধিকারী প্রভাবশালী অনেক নেতা এখনো আওয়ামী লীগের পক্ষে নীরবে কাজ করছেন। আওয়ামী লীগের প্রকৃত আদর্শ ধারণ করে বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার পক্ষে কাজ করছেন। সাংগঠনিক ও রাজনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ ও নেতৃত্বগুণ সম্পন্ন এসব নেতাদেরকেও নেতৃত্বে নিয়ে আসার পক্ষে তৃণমূল। তাছাড়া আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের রাজপথে মোকাবেলা করে বা বাংলাদেশকে মুক্তিযুদ্ধের কক্ষপথে নিয়ে যেতে পারবে এমন নেতৃত্ব প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।
তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে আরো জানা গেছে গত সাত বছর ধরে বর্তমান কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ব্যরিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন বড়ো কোন বিরোধে জড়াননি। তারা দলীয় কর্মসূচি একই সঙ্গে পালন করেছেন। বিভিন্ন সময়ে উপদলের প্রতি তারা ঝূঁকে পড়লেও ঐক্যবদ্ধ কমূসূচিই পালন করেছেন। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক একে অন্যকে নিয়ে প্রকাশ্যে কখনো বিরূপ মন্তব্যও করেননি। বয়সজনিত নানা রোগের কাছে কাবু সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান নিয়মিত এলাকায় অবস্থান না করলেও সাধারণ সম্পাদক ব্যরিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন দলীয় কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছেন। দলীয় কর্মসূচির পাশাপাশি প্রাকৃতিক ও মানবিক দুর্যোগে তিনি ছিলেন সোচ্চার। তবে স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোতে ভুল দলীয় প্রার্থী বাছাই ও দলীয় প্রার্থীদের ভরাডুবির জন্য সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক দুজনই তৃণমূলে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে আছেন। এরপরও এই দুই নেতার পক্ষে তৃণমূলের সমর্থন রয়েছে। তাই আজকের সম্মেলনে নেতৃত্ব বাছাইয়ে তারা ঝরে পরবেন, না আবারও প্রত্যাবর্তন করবেন এ নিয়ে শেষ মুহুর্তে চুলচেরা বিশ্লেষণ করছেন তাদের সমর্থকরা। একই সঙ্গে অন্য নেতৃত্বপ্রত্যাশীরাও গত কয়েকদিন আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারনী মহলে নেতৃত্ব পেতে তাদের বক্তব্য পেশ করে এসেছেন।
আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সভাপতি হিসেবে ইতোমধ্যে তৃণমূলে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, বর্তমান সভাপতি আলহাজ্ব মতিউর রহমান, সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুহিবুর রহমান মানিক, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নূরুল হুদা মুকুট, এডভোকেট হায়দার চৌধুরী লিটন, ড. খায়রুল কবীর রোমেন, নোমান বখত পলিনের নাম শোনা যাচ্ছে। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমনের সঙ্গে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল হুদা চপল, পৌর মেয়র নাদের বখত, তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান করুণাসিন্ধু চৌধুরী বাবুল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আক্তারুজ্জামান আহমাদ সেলিমের নাম শোনা যাচ্ছে। আগামী নির্বাচন ও সাংগঠনিক প্রভাবের কতা বিবেচনা করে নতুন নেতৃত্ব আসতে পারে এমন কথাও জানিয়েছেন কেন্দ্র্রীয় দায়িত্বশীলরা।
সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর সভাপতি ও সম্পাদক হতে কয়েকজন ঢাকায় গিয়ে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারনী মহলে যোগাযোগও করেছেন এমন কথাও জানিয়েছেন তারা। নেতৃত্ব পেতে শেষদিকে অনেকে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী বলয়গুলোকে কাজে লাগানোর চেষ্টাও করেছেন বলে জানা গছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার এম. এনামুল কবির ইমন বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতিটি কর্মসূচি আমি তৃণমূলকে নিয়ে পালন করেছি। তৃণমূলের অসহায় ও নির্যাতিত নেতাদের খোঁজ খবর নিয়েছি। মুজিববর্ষে তাদেরকে উপহার দেওয়ার চেষ্টা করেছি। একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় তৃণমূল থেকে নেতৃত্ব বাছাই করতে কাজ করেছি অক্লান্তভাবে। যারা আওয়ামী লীগের আদর্শ ধারণ করে তাদের মূল্যায়ণ করেছি। রাজনৈতিক কর্মসূচির পাশাপাশি আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বন্যাসহ প্রাকৃতিক ও সামাজিক দুর্যোগে বিপর্যস্ত সাধারণ মানুষের পাশে ছিলাম। নতুন কমিটিতে নেত্রী যাকেই দায়িত্ব দেবেন তাকেই তার নেতৃত্বেই আওয়ামী লীগ পুনগর্ঠনে কাজ করে যাব। নেত্রীর হাতকে শক্তিশালী করতে ও আগামী নির্বাচনে দলকে বিজয়ী করতে আমি অঙ্গিকারাবদ্ধ। বাংলাদেশের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে আওয়ামী লীগকে টিকিয়ে রাখতে হবে।
সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ আলহাজ্ব মতিউর রহমান বলেন, আমি কখনো দলের বিরুদ্ধে যাইনি। দলের বিরুদ্ধে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীও হইনি। আওয়ামী লীগের দুঃসময় থেকে ছিলাম। এ কারণেই গত সম্মেলনে নেত্রী আমাকে মূল্যায়ণ করেছেন। গত সাত বছর আমি জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে থেকে সংগঠনকে গতিশীল করতে নানা ভাবে কাজ করেছি। তবে আজকের সম্মেলনে নেতৃত্ব বিষয়ে নেত্রী যে সিদ্ধান্ত নিবেন আমি সেটাই মেনে নেব।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!