বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় পুলিশের নির্যাতনে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ তুলে মহাসড়কে লাশ নিয়ে প্রায় চার ঘন্টা সড়ক অবরোধ করেছে ওই যুবকের এলাকার বাসিন্দারা। এতে সুনামগঞ্জ-সিলেট সড়কে দুই দিকে প্রায় তিন কিলোমিটার ব্যাপী দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ফলে চরম ভোগান্তি সয়েছেন হাজারো যাত্রী। বিকেল ৫টায় প্রশাসনের বিচারের আশ্বাসে অবরোধকারীরা অবরোধ তুলে নিয়ে সড়ক মুক্ত করে দেন। ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার বেলা ২টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত পাগলাবাজারে মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছিলেন মৃতের গ্রামসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের লোকজন। তারা মহাসড়কে লাশ ফেলে রেখে বিক্ষোভ করেন।
অবরোধকারী এলাকাবাসী ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ গরু চুরির অভিযোগে উপজেলার পাগলা বাঘেরকোণা গ্রামের কাচাই মিয়ার ছেলে উজির মিয়া (৪০) কে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর তাকে নির্যাতন করা হয় বলে গত ১০ ফেব্রুয়ারি জামিনে বেরিয়ে আসেন তিনি। তবে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ তাকে মারধর করে বলে অভিযোগ উঠে। গত ১০ জানুয়ারি জামিনে বেরিয়ে আসার পর উজির মিয়া সিলেট ওসমানী হাসপাতালে গিয়েও চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে আসেন বলে স্বজনরা জানান। স্বজনরা জানান, ২১ ফেব্রুয়ারি সকালে সেদিনের নির্যাতনের জেরে আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে স্বজনরা তাকে কৈতক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে যাবার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি জানান, এই খবর এলাকায় এসে পৌঁছলে ক্ষুব্দ হয়ে ওঠেন সাধারণ মানুষজন। তারা লাশ নিয়ে পাগলাবাজারে মহাসড়কে ফেলে অবরোধ করেন। চার ঘন্টা পর প্রশাসনের অবরোধে ও বিচারের আশ্বাসে এলাকাবাসী অবরোধ তুলে নেন।
বিকেল পোনে ৫টার দিকে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার হালিম ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু সাইদসহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের আশ্বাস দিলে ক্ষুব্দ জনতা অবরোধ তুলে নেন।
দীর্ঘ চার ঘন্টা অবরোধে সিলেট থেকে সুনামগঞ্জে আসা যাত্রী তাসনুভা সোবহান বলেন, প্রায় চার ঘন্টা সড়কে অবরোধে ছিলাম। শত শত গাড়ি দুই দিকে আটকা ছিল। শিশু ও বয়স্ক মানুষরা দুর্ভোগ সয়েছেন বেশি। অনেক অসুস্থ মানুষও আটকা পড়ায় চিকিৎসা নিতে পারেননি। সড়কে লাশ ফেলে অবরোধকারীরা দীর্ঘক্ষণ বিক্ষোভ করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আবু সাইদ বলেন, কয়েক ঘন্টা সড়ক অবরোধের কারণে কয়েক শ যানবাহন দুদিকে আটকা পড়ে। খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে ছুটে যাই। অবরোধকারীরা অভিযোগ করেছেন এক যুবককে কয়েকদিন আগে পুলিশ ধরে নিয়ে এসেছিল এবং নির্যাতন করেছে। আজ বাড়ি থেকে হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়েছে। আমরা এই অভিযোগটি খতিয়ে দেখব এবং কেউ দোষী হলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।