বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের শাল্লা থানার এক এসআইকে মারধরের অভিযোগে উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও যুবলীগ নেতা অরিন্দম চৌধুরী অপুর বিরুদ্ধে দায়েরকৃত পুলিশ এসল্ট মামলাকে সাজানো দাবি করে মামলার বাদী এসআই, তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণের দাবিতে ডিআইজি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। বৃহষ্পতিবার দুপুরে ‘শাল্লা নাগরিক মঞ্চ’ নামের একটি সামাজিক সংগঠন এই স্মারকলিপিতে মামলাটি প্রত্যাহারের দাবিও জানায়। সংগঠনের পক্ষে ডিআইজি মফিজ উদ্দিনের হাতে স্মারকলিপিটি তুলে দেন এডভোকেট সুব্রত দাশ, এডভোকেট দেবব্রত চৌধুরী লিটন ও প্রভাষক বিপুল তালুকদার।
স্মারকলিপিতে বলা হয় অরিন্দম চৌধুরী অপুসহ তার ঘনিষ্ট বিশ্বজিৎ রায়, পলাশ সরকার পল্টু, রতন রায়, চন্দন রায় ও সেন্টু চন্দ্র দাসসহ ৫জনের বিরুদ্ধে গত ১৩ জুলাই এসআই শাহ আলী ও এসআই আল মামুন তিনটি পৃথক মামলা দায়ের করেন। মামলায় যাদেরকে আসামি করা হয়েছে তারা সবাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের ত্যাগী সৈনিক এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সোচ্চার। গত ১৭ মার্চ সাম্প্রদায়িক শক্তি যখন শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা ও লুটপাট চালায় তখন অরিন্দম চৌধুরী অপু এর প্রতিবাদে সোচ্চার ছিলেন। এ ঘটনায় অপু সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলোর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হওয়ায় তার পরিবার থানায় সাধারণ ডায়েরি করে। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয় অপুর ভাই আইনজীবী অমিতাভ চৌধুরী রাহুল ফেইসবুকে অপুকে হুমকিদাতা এলাকার ১১ জনের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে তদন্তের জন্য দেওয়া হয় শাল্লা থানার কর্তব্যরত এসআই শাহ আলীকে। কিন্তু শাহ আলী তদন্ত না করেই সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে করা সাধারণ ডায়েরি প্রত্যাহারের চাপ দেন। এসব বিষয় সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপারকে অবগত করা হলে পুলিশ সুপার দিরাই সার্কেল আবু সুফিয়ানকে বিষয়টি দেখার জন্য দায়িত্ব দেন। তিনি অপুর পরিবার ও এসআই শাহ আলীর মৌখিক ও লিখিত স্বাক্ষী নিয়ে এই ঘটনায় এসআই শাহ আলীকে শোকজ করেন বলে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়।
স্মারকলিপিতে আরো উল্লেখ করা হয় এ কারণে এসআই শাহ আলী আরো ক্ষুব্দ হন। এর জের ধরেই গত ১৩ জুলাই তাকে মারধরের অভিযোগে অরিন্দম চৌধুরী অপু ও তার ঘনিষ্টজনদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। ওই রাতে শাল্লা থানার ওসি মামলা সংক্রান্ত কারণে বাইরে থাকায় এসআই শাহ আলী ওসির চার্জে থেকে এই সাজানো মামলা করেন বলে স্মারকলিপিতে তারা উল্লেখ করেন। অপুর হুমকিদাতা মামুনুল হকের অনুসারীদের সঙ্গে ঘনিষ্ট যোগাযোগ করে তিনি এই মিথ্যা মামলা সাজিয়ে অরিন্দম চৌধুরী অপু ও তার ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিতদের ঘুম থেকে তুলে নিয়ে ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় গ্রেপ্তার করেছিলেন। ওই রাতে তিনটি মামলার পরষ্পরপরবিরোধী এজাহারের বক্তব্য থেকেই এ ঘটনা সাজানো ও পরিকল্পিত বলে উল্লেখ করা হয় স্মারকলিপিতে।
শাল্লা নাগরিক মঞ্চ স্মারকলিপিতে উল্লেখ করে এসআই শাহ আলী নিজেই একজন মাদকাসক্ত এবং ঘটনার দিন তিনি মাদক সেবন করেছিলেন। এসআই শাহ আলীকে ডোপটেস্ট করানোরও দাবি জানান তারা। পুলিশের একজন ব্যক্তির কারণে যাতে সুশৃঙ্খল একটি বাহিনীর সুনাম ক্ষুন্ন না হয় সেজন্য নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করে সাজানো মামলা থেকে যুবলীগ নেতা অরিন্দম চৌধুরী অপুসহ তার অপর ঘনিষ্ট ৫ জনকে মামলা থেকে প্রত্যহারের দাবি জানান।
স্মারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত এডভোকেট দেবব্রত চৌধুরী লিটন বলেন, ডিআইজি মহোদয় মনোযোগ দিয়ে আমাদের কথা শুনেছেন। তিনি আমাদেরকে ন্যায় বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করি সাম্প্রদায়িক অপশক্তির ষড়যন্ত্রের শিকার অরিন্দম চৌধুরী অপু ও তার ঘনিষ্টজনরা নির্দোষ প্রমাণিত হবেন।