হাওর ডেস্ক::
নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিতর্কিত বক্তা মাহমুদুল হাসান গুনবীকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। বৃহস্পতিবার ঢাকার শাহ আলী থানার বেড়িবাঁধ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। চলতি বছরের মে মাসের প্রথম দিকে গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যান। জুনের শেষের দিকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি পুনরায় স্থান পরিবর্তন করে বান্দরবানে অবস্থান নেন। সেখানে ২-৩ দিন অবস্থান করেন। পরে দেশ ত্যাগেরও চেষ্টা করেন তিনি।
আজ শুক্রবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, দাওয়াতে ইসলামসহ বেশ কয়েকটি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন এসব সংগঠনের আড়ালে তরুণদের টার্গেট করতেন তিনি (গুনবী)। এরপর তাদের পার্বত্য অঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে পরিবার, স্বজনদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখা হতো। এবং এই সময়ে ধর্মীয় অপব্যাখ্যা, স্বাভাবিক জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা তৈরি করে এসব তরুণদের জঙ্গিতে পরিণত করতেন।
তিনি আরো বলেন, মাহমুদ হাসান গুনবী ওরফে হাসান একজন দর্শন পরিবর্তনকারীর ভূমিকা পালন করে থাকে। সে আনসার আল ইসলামের (এবিটি) পক্ষে অন্যতম একজন দর্শন পরিবর্তনকারী। দর্শন পরিবর্তনের কৌশল সম্পর্কে গ্রেপ্তার গুনবি জানায়, বিভিন্ন কার্যক্রম গোপন আস্তানায় বিশেষ প্রশিক্ষণ মাধ্যমে দেওয়া হয়। যেখানে প্রশিক্ষণার্থীরা আত্মীয়-স্বজন, পরিবার বন্ধু বান্ধব থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে। প্রশিক্ষণার্থীদের বাইরের জীবন, সমাজ, রাজনীতি, সংস্কৃতি ও বিজ্ঞান ইত্যাদি থেকে দূরে রাখা হয়। এরপর তাদের মস্তিষ্কে ধর্মীয় অপব্যাখ্যার মাধ্যমে ভয়ভীতি তৈরি ও স্বাভাবিক জীবন সম্পর্কে বিতৃষ্ণা জাগ্রত করা হয়ে থাকে।
বিভিন্ন ওয়াজে বক্তব্যের মাধ্যমে গুনবী তরুণদের উগ্রবাদে আকৃষ্ট করতেন বলেও জানান র্যাব কর্মকর্তা। বলেন, তার মতো যারা মানুষকে আকৃষ্ট করে আসছিল তারা নিজেদের ‘মানহাজী’ বলে পরিচয় দিত। গুনবীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানতে পারার কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
র্যাব জানিয়েছে, গুনবী পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলে পড়াশোনার পর মাদরাসায় ভর্তি হন। ২০০৮ সালে মোহাম্মদপুরের জামিয়া রহমানিয়া আরাবিয়া থেকে তাইসির থেকে দাওরায়ে হাদিস শেষ করেন। এরপর ঢাকা, কুমিল্লা, নোয়াখালী, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সজারের বিভিন্ন মাদ্রাসায় শিক্ষকতা শুরু করেন। পাশাপাশি ধর্মীয় মতাদর্শের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে জড়িত হন।
২০১০ সাল থেকে তিনি ওয়াজ মাহফিল শুরু করেন। ২০১৪ সাল থেকে ধর্মীয় বক্তব্যে উগ্রবাদ প্রচার শুরু করেন। তিনি ধর্মীয় পুস্তকের ব্যবসাতেও জড়িত ছিলেন।