হাওর ডেস্ক::
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে চলমান বিধিনিষেধ অকার্যকর হয়ে যাওয়ায় আরও কঠোর অবস্থানে গেল সরকার।
এমন বাস্তবতায় আগামী সোমবার (২৮ জুন) সকাল ছয়টা থেকে সাতদিনের জন্য সারাদেশে কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। এ সময় জরুরি পরিষেবা ছাড়া সরকারি ও বেসরকারি সব অফিস বন্ধ থাকবে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া বন্ধ থাকবে পণ্য পরিবহন ছাড়া সব যানবাহন চলাচল।
কঠোর লকডাউনে অনির্দিষ্টকালের জন্য সকল অফিস আদালত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যানবাহন বন্ধ থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে সরকার এটাকে কঠোর লকডাউন বললেও পরিচিতি পেয়েছে শাটডাউন হিসেবে। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত আদেশ আগামীকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জারি করা হবে।
এ ব্যাপারে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন জানান- ‘এবারের লকডাউনে পুলিশ, বিজিবি থাকবে। প্রয়োজন হলে সেনাবাহিনীও মোতায়েন করা হবে।’
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বাজেট সংক্রান্ত যে সকল প্রতিষ্ঠান- যেমন এনবিআর, ব্যাংক এগুলো স্বল্প পরিসরে খোলা থাকবে। বাকি সব বন্ধ থাকবে। জরুরি পণ্যবাহী ব্যতীত সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। শুধুমাত্র অ্যাম্বুলেন্স এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত কাজে ব্যবহৃত যানবাহন চলবে। জরুরি কারণ ছাড়া বাড়ির বাইরে কেউ বের হতে পারবেন না। গণমাধ্যম এর আওতা বহির্ভূত থাকবে।’
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ মৃত্যুর প্রথম খবর আসে। কয়েক মাস সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার ঊর্ধ্বগতিতে থাকার পর অনেকটা নিয়ন্ত্রণেও চলে আসে। চলতি বছরের শুরুতেও নিয়ন্ত্রণে ছিলো। তখন শনাক্তের হারও ৫ শতাংশের নিচে নেমেছিল। তবে গত মার্চ মাস থেকে মৃত্যু ও শনাক্ত আবার বাড়তে থাকে।
এর মধ্যে গত ১৬ এপ্রিল দেশে দৈনিক মৃত্যু একশো ছাড়ায়। সেদিন ও তার পরদিন ১৭ এপ্রিল ১০১ করে মৃত্যু হয় করোনায়। ১৮ এপ্রিল ১০২ জন ও ১৯ এপ্রিল ১১২ জন মারা যান, যা একদিনে সর্বোচ্চ।
বাংলাদেশে এটাকে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ বলছেন বিশেষজ্ঞরা। সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করায় প্রথমে ২১ এপ্রিল ও পরে তা বাড়িয়ে ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করেছিল সরকার। এরপর সেটি ধাপে ধাপে বাড়িয়ে ১৬ জুলাই পর্যন্ত করা ছিলো।
এর মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার সারাদেশে ১৪ দিনের শাটডাউনের সুপারিশ করেছিলো কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি থেকে। আর এই সুপারিশকে যৌক্তিক বলে জানিয়েছিলেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, সরকারের শাটডাউনের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে।