1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৮:২২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
কোটা আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদের পরিবার পেল সাড়ে ৭ লাখ টাকার চেক শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলিনি, আমার বক্তব্য বিকৃত করা হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী কোটা আন্দোলনের দুই সমন্বয়কের সঙ্গে সরকার পতনের আলোচনা হয় ভিপি নুরের! শিক্ষিত প্রজন্মের কাছে আমরা সম্মান চাই: বীর মুক্তিযোদ্ধা রুমা চক্রবর্তী এমপি এভাবে রাষ্ট্রের ধ্বংস মানতে পারছি না: প্রধানমন্ত্রী আন্দালিব রহমান পার্থ ৫ দিনের রিমান্ডে কোটা আন্দোলন সহিংসতায় নিহতদের পরিবারের দায়িত্ব নেবেন প্রধানমন্ত্রী : কাদের গবেষক দীপংকর মোহান্ত সুনামগঞ্জ পিটিআইয়ে সুপার হয়ে আসায় কবি লেখকদের ফুলেল শুভেচ্ছা সুনামগঞ্জে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শীথিল সিলেটসহ ১১ অঞ্চলে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আভাস

আত্মমর্যাদার প্রতীক একজন শাহ আলমের খণ্ডিত জীবনাখ্যান

  • আপডেট টাইম :: বৃহস্পতিবার, ১১ মে, ২০১৭, ৫.৩৫ পিএম
  • ৫৭১ বার পড়া হয়েছে

।। ডা. নূরুল ইসলাম।।
শাহা আলম। বয়স আনুমানিক ৪৫ বছর। বাড়ি পাবনা জেলার ভেড়ামারা থানার তারাপুর গ্রামে। হত দরিদ্র পরিবারের সাধারন খেটে খাওয়া একজন মানুষ। দিনরাত হাড়ভাংগা পরিশ্রম করে তিন ছেলে-মেয়ে, স্ত্রী ও বৃদ্ধ বাবা-মাকে নিয়ে মোটামোটি একধরনের সুখি জীবনের অধিকারীই ছিলেন। দিনে আনে দিনে খায় অবস্থায় থাকলেও মনের দিক থেকে পরিবাবের সবাইকে নিয়ে সুখি ছিলেন।
৪ বছর পূর্বে জীবনে ঘটে ছোট্ট একটি দূর্ঘটনা। পরের বাড়িতে মজুরির কাজ করতে গিয়ে পায়ে ঢুকে যায় এক তারকাটা! সেখান খেকেই জীবনে নেমে আসে চরম দূর্দশা। এক সময়ে পায়ে পচন ধরে যায়। চিকিৎসকের পরামর্শে সহায়-সম্ভল যা আছে সব খুইয়ে অবশেষে পা কাটকে বাধ্য হন। কিন্তু পা হীন হয়ে পরিবারের দূর্দশা আরো বেড়ে যায়। কারো বাড়ি কাজ করতেও যেতে পারেন না। কিন্তু পরিবারের ছোট ছেলে-মেয়ে, বৃদ্ধ বাবা-মাকে দুবেলা আহার যোগাতে না পারার ক্ষমতা তাকে কুড়েকুড়ে খেতে থাকে। সৃষ্টিকর্তার নিকট দিনরাত প্রার্থনা করে কাঁদতে থাকেন নিজের অসহায়ত্ব নিয়ে।
অনেকে পরামর্শ দেয় ভিক্ষাবৃত্তিকে বেছে নেয়ার জন্য।কিন্তুু তিনি মনে মনে প্রার্থনা করেন প্রয়োজনে মরে যাবেন কিন্তু পরিবারের কাউকে ভিক্ষাবৃত্তির টাকা দিয়ে খাবার খাওয়াবেন না।
একদিন পরিবারের কাউকে না জানিয়ে ঢাকায় পাড়ি জমান। পরিচিত এক রিক্সাচালক বন্ধুর এখানে উঠেন। রিক্সা তিনি পূর্ব থেকেই চালাতে জানেন। কিন্তুু একপায়ে চালাতে তাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে।
গত চার বছরে এক পায়েই তিনি রাজধানী ঢাকা শহরে রিক্মা চালাচ্ছেন। প্রতিমাসে একবার পাবনার গ্রামের বাড়িতে যান। পুত্র-কন্যা, স্ত্রী, বাবা-মাকে দেখে আসেন। তাদেরকে মাসের খরচপাতি দিয়ে আবার ঢাকায় চলে আসেন।
নিজের পরিশ্রমের টাকা দিয়ে নিজে একটা রিক্সা কিনেছেন। সমস্যা শুধু একটাই, নিজের কাটা পা টা সব সময় লুকিয়ে রাখেন কারন এক পা হীন দেখলে কেউ তার রিক্সায় চড়তে চায় না।
আজ রাতে বংগবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হতে বাসায় ফেরার পথে তার রিক্সা করেই বাসায় ফিরলাম। দুই পা ওয়ালা রিক্সা চালকের চেয়ে তিনি কোন অংশেই কম দক্ষ নন বরং মনের জোর থেকে তিনি আমাদের তথাকথিত দুই পা ওয়ালা থেকেও অনেক শক্তিশালী!
এদেশের হাজারো দুই-পা ওয়ালা শিক্ষিত ছেলে-মেয়েরা বেকার জীবন-যাপন করে, মনের শক্তি হারিয়ে কেবল হা হুতাস করে। তাদের জন্য পাবনার এক-পা ওয়াল রিক্সাচালক শাহা আলম এক বিরাট অনুপ্রেরণা দৃষ্টান্ত হতে পারে যদি যেকোন কাজকে ভালোবেসে মনের শক্তিতে বলীয়ান হয়ে সামনে অগ্রসর হয়।
জীবনযুদ্ধে হার না মানা, পাবনা জেলার ভেড়ামারা থানার তারাপুর গ্রামের এক-পা ওয়ালা রিক্সাচালক শাহা আলমের প্রতি রইলো অন্তরের অন্তস্তল থেকে হাজারো সালাম আর সশ্রদ্ধা।
লেখক: ডাক্তার। বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার হিসেবে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!