স্টাফ রিপোর্টার::
হাওর ডুবে যাওয়ার প্রায় ২৫ দিন পর হাওর পরিদর্শন করলেন পানিসম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। গতকাল শুক্রবার দুপুরে তিনি সুনামগঞ্জের ডুবে যাওয়া হালির হাওর ও শনির হাওরের বাধ পরিদর্শন করেন। এর আগে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে সার্কিট হাউসে কথা বলেন। বাধ পরিদর্শন শেষে তিনি রাতে আবারো সার্কিট হাউসে সুধীজন ও সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
বাধের কাজে সবসময় দুর্নীতি ও অনিয়ম হচ্ছে সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নকে সমর্থন করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, বাঁধের কাজে কোথায় দুর্নীতি হয় আমি জানি। সবচেয়ে বড় দুর্নীতি হয় বাধের গোড়া থেকে মাটি কেটে বাধে ফেলা হয়। এতে বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তিনি বলেন, এই দুর্নীতির কারণে গত বছর আমি ৫০ ভাগ বিল আটকে দিয়েছি। এই বিল ছাড় করার জন্য অনেকে আমাকে তদবির করেছিল। আমি কারো তদবির রাখিনি। এবার অবশিষ্ট টাকা দেওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। যারা বাধের কাজে দুর্নীতি করেছে তাদের শাস্তি পেতে হবেই। কোন অনিয়ম হয়ে থাকলে আমরা সেটা অবশ্যই খতিয়ে দেখব।
মন্ত্রী আরো বলেন, সুনামগঞ্জ থেকে ২১ কি.মি. দূর হচ্ছে ভারতের চেরাপুঞ্জি। এখানে এই সময়ে ১১০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। সুনামগঞ্জে হয়েছে ৫০০ মি.মি. হয়েছে। চেরাপুঞ্জির বৃষ্টির পানি ৪-৫ ঘন্টার মধ্যেই এসে সুনামগঞ্জের হাওর-বাওর নদীতে পড়ে। এই সময়ে কতটুকু বৃষ্টি হয়েছে, বাধের উচ্চতা কত ছিল এসব নিয়ে কেউ আলোচনা করেনা। টকশো হয়না। হাওরের পরিবেশ নিয়েও কোন আলোচনা হয়না। সবাই শুধু পাউবোর দুর্নীতিকেই দেখে। তিনি বলেন, বাধ ভেঙ্গে নয় ‘ওভারফ্লোতে’ হাওরের ফসল তলিয়ে গেছে।
শুক্রবার রাতে মন্ত্রী স্থানীয় সার্কিট হাউসে সাংবাদিক ও সুধীজনের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজের দুর্নীতি-গাফিলতি বিষয়ে তিনি বলেন, এখানে বাধ নির্মাণকাজে দুর্নীতির প্রভাবটা অন্যরকম। অন্য দুর্নীতির সঙ্গে এর কোন মিল নেই। এখানে দুর্নীতির কারণে ক্ষতি হলে সকল মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি বলেন, দুর্নীতির তদন্ত চলছে। আমি দ্যর্থহীন কণ্ঠে বলছি তদন্তে দুর্নীতি প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ক্ষতির পুনরাবৃত্তি না হওয়া, ভবিষ্যতে কি করা দরকার সেটা আমার কাছে এখন গুরুত্বপূর্ণ। কিভাবে আগামী বছর থেকে ক্ষতি কমানো যায় সেটাই ভাবছি। ক্ষতি কমিয়ে আনতে আমরা আগামী বছর থেকে চারটি নদী খনন করব। তাছাড়া কিভাবে আগাম জাতের ধান চাষ করা যায় সেটা নিয়ে ভাবা হচ্ছে। এখন আমরা সেই ক্ষতি কমানোরই প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এসময় মন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম বীরপ্রতীক, সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ অ্যাডেভাকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ, সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমদ খান প্রমুখ।