বিশেষ প্রতিনিধি::
সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে একাত্তরের বীরাঙ্গনা ও শহিদ পরিবারের উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে। বুধবার দুপুরে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকা শ্যামারচর বাজারে বীরাঙ্গনা ও শহিদ পরিবারের নেতৃত্বে বিজয় দিবস উপলক্ষে এক বিশেষ বিজয় র্যালি বের হয়। র্যালিটি বাজার প্রদক্ষিণ করে স্থানীয় ব্রজেন্দগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে আলোচনাসভায় মিলিত হয়।
এলাকার বীরাঙ্গনা পিয়ারা বেগম, কুলসুম বিবি, জমিলা বেগম, প্রমিলা দাস, জাহেরা বেগম, মুক্তাবান বিবির নেতৃত্বে শ্যামারচর বাজারে ওই আনন্দ র্যালি বের হয়। মহান মুুক্তিযুদ্ধে বীরাঙ্গনা পিয়ারা বেগমের বাবা, ভাইসহ পরিবারের ৭ জন সদস্য শহিদ হন। ৪ ডিসেম্বর এলাকার দালাল আব্দুল খালেকের লোকজন তাদের বাড়িতে গিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতার অভিযোগে নির্মমভাবে তাদেরকে হত্যা করে। ধরে নিয়ে যায় পিয়ারাবেগমসহ তার বোনদের। বাড়িঘর লুট করে জ্বালিয়ে দেয়। একই দিন পাশের পেরুয়া গ্রামের বীরাঙ্গনা কুলসুম বিবির স্বামী গুঞ্জুর আলীকে হত্যা করে তাকে ধরে নিয়ে আসে। একই গ্রামের প্রমিলা দাসকে ধরে নিয়ে ক্যাম্পে নির্যাতন করে। মুক্তাবান ও জমিলাকে ধরে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালায়। এভাবে কয়েকটি গ্রামে গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ ও নারীনির্যাতন করে প্রশিক্ষিত রাজাকার বাহিনী। তারা প্রায় অর্ধ শতাধিক নীরিহ লোকজনকে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল।
একাত্তরের সেই নির্যাতিত নারী ও শহিদ পরিবারের লোকজন বিজয়ের ৫০ তম দিবসে চোখের জলে স্বজনদের স্মরণ করেছেন। নতুন প্রজন্মকে সাহস ও প্রেরণা দিতে রাস্তায় নেমে বিজয় দিবস উদযাপন করে তাদের উপর বর্বতার চালানোর লোমহর্ষক বর্ণনা দিয়েছেন। দাবি জানিয়েছেন একাত্তরের সেই বর্বর রাজাকার ও আলবদরদের বিচারকাজ দ্রুত শেষ করার।
বীরাঙ্গনা ও শহিদ পরিবারের স্বজনদের বিজয় র্যালি ও আলোচনাসভায় উপস্থিত ছিলেন এলাকার মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক অমরচাদ দাস, বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রভাত চন্দ্র দাস, আওয়ামী লীগ নেতা জদীস শামন্ত, কানু চৌধুরী, নূর ইসলাম, যুবলীগ নেতা এনামুল হক মাসুম প্রমুখ।