1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
শুক্রবার, ০২ জুন ২০২৩, ০১:৫৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
যাদুকাটায় ড্রেজিং মেশিনে অবৈধভাবে বালু পাথর আহরণ : ২টি ড্রেজার জব্দ সুনামগঞ্জে তীব্র দাবদাহ শেষে দমকা হাওয়া ও একপশলা বৃষ্টি শাল্লায় শেখ রাসেল স্মরণে ফুটবল টুর্নামেন্টের উদ্বোধন সুনামগঞ্জে এসএ পরিবহনের গাড়ি থেকে ৮০ লক্ষ টাকার অবৈধ ভারতীয় পণ্য জব্দ, ম্যানেজার আটক সুনামগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আবারও আলোচিত রায় আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘বিপর্যয়’ সরকারি ব্যয়ে আকাশপথে ‘প্রথম শ্রেণি’তে ভ্রমণ স্থগিত পুলিশ-সাংবাদিক যোগাযোগ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব আইজিপির দেশের অনলাইন সংবাদপত্রে শৃঙ্খলা ফেরানোর পরিকল্পনা রয়েছে: তথ্যমন্ত্রী সংসদে ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেট অধিবেশন শুরু

টাঙ্গুয়ার হাওরের সংরক্ষিত কান্দা এখন মহিষের চারণভূমি: প্রাণবৈচিত্র হুমকিতে

  • আপডেট টাইম :: মঙ্গলবার, ২১ মার্চ, ২০১৭, ৪.০৪ এএম
  • ৪৮৫ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি::
মহিষপালনে ব্যবহার হচ্ছে টাংগুয়ার হাওরের সংরক্ষিত সবুজ বনভুমি। এজন্য ময়মনসিংহের ত্রিশাল ও নেত্রকোণার কলমাকান্দা থেকে কয়েক শতাধিক মহিষ টাঙ্গুয়ার হাওরের সংরক্ষিত বনাঞ্চলে নিয়ে আসা হয়েছে। এ সকল মহিষ প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে রামসার সাইট ঘোষিত সংরক্ষিত এলাকার বিভিন্ন কান্দা-জাঙ্গালে (ঘাস ও বনে আবৃত উঁচু সবুজভুমি) অবাধে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে হাওরের কান্দায় লাগানো ও প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা হিজল-করচের চারা, নলখাগড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন, পাখির বাসা, বিভিন্ন প্রজাতির কচ্চপের ডিম মহিষের পায়ের তলায় পিষ্ট হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, হেমন্তে মওসুমে টাঙ্গুয়ার হাওরের দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ বনাঞ্চল জেগে ওঠে। নানা প্রজাতির ঘাস তখন ছেয়ে যায় হাওরের কান্দা-জাঙ্গাল। সবুজাভ ঘাসের লোভে স্থানীয় একটি চক্রকে ম্যানেজ করে টাকার বিনিময়ে ময়মনসিহের কৃষকরা ঘাস খাওয়াতে মহিষের পাল নিয়ে আসে টাঙ্গুয়ার হাওরে। গত কয়েক বছর ধরে এটা হচ্ছে। টাঙ্গুয়ার হাওরের প্রকৃতি সংরক্ষণে নিয়োজিত সংশ্লিষ্টদের চোখে প্রকৃতি বিনাশী এমন ঘটনা ঘটলেও তারা রয়েছেন নিশ্চুপ।
স্থানীয়রা জানায়, রামসার সাইট হিসেবে ঘোষিত টাংগুয়ার হাওরটির কান্দায় বিপুল সংখ্যক মহিষ প্রায় ২ মাস ধরে রাতদিন অবাধে হাওরের কান্দা-জাঙ্গালে দল বেধে বিচরণ করছে। ঘাস লতা-পাতা খাওয়ার নামে বিনাশ করছে পাখির বাসা, ডিম ও এই মওসুমের কচ্ছপের ডিম। পায়ের তলায় পিষ্ট হচ্ছে হচ্ছে হিজল-করচসহ বিভিন্ন প্রজাতির চারা ও গাছ। ফলে হাওরের স্থলজ, জলজসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণবৈচিত্র এখন হুমকির মুখে। এলাকাবাসী জানায়, প্রায় ২ মাস ধরে পরিবেশ বিনাশী এমন কা- ঘটলেও হাওরটির পরিবেশ বাঁচাতে এ ব্যাপারে কার্যকর কোন উদ্যোগ নেই। এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় পরিবেশবাদী ও সুধীজন।
দক্ষিণ শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শিমুল আহমদ জানান, দুই মাস আগে স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি ৩ লাখার টাকার চুক্তিতে ময়মনসিংহের ত্রিশাল থেকে প্রায় ৪ শতাধিক মহিষ টাংগুয়ার হাওর এলাকায় নিয়ে এসেছেন। এ মহিষগুলো সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাওরটির বড়বন, টানেরবন, বিয়াসখালী, গোলডোবা, ইকরদাইড়, বাঘমারা, জয়পুর হাওর ও পাদিচোরা সহ বিভিন্ন এলাকায় ঘাস খেতে অবাধে চষে বেড়ায়। এ সময় কান্দায় লাগানো ও প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা হিজল-করচের চারা, নলখাগড়াসহ বিভিন্ন প্রজাতির বন, পাখির বাসা ও ডিম নষ্ট পায়ে পিষ্ট করে নষ্ট করছে। তিনি বলেন, হাওরটির মিষ্টি পানির বিভিন্ন বিরল প্রজাতির কচ্ছপ কান্দায়র সংরক্ষিত বনে ডিম দিয়ে থাকে। এখন মহিষের পায়ের তলায় পিষ্ট হয়ে সেই ডিম নষ্ট হওয়ার পথে।
স্থানীয় পাঠাবুকা গ্রামের যুবক রিপচান হাবীব বলেন, মহিষগুলো আমাদের স্থানীয় গবাদিপশুর ঘাসও শেষ করে দিয়েছে। তাছাড়া পরিবেশ-প্রতিবেশের ক্ষতিতো হচ্ছেই। হাওর রক্ষায় নিয়োজিতদে সামনে এটা হলেও তারা নিরব।
আমরা হাওরবাসী সংগঠনের প্রধান সমন্বয়কারী রুহুল আমিন বলেন, নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলা থেকে আসা শতাধিক মহিষ হাওরটির চিড়ারগাঁও সংলগ্ন পুরানকান্দাসহ বিভিন্ন এলাকায় অবাধে চষে বেড়িয়ে স্থলজ-জলজ উদ্ভিদ নষ্ট করছে। এতে করে প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা নানা প্রজাতির বনের ক্ষতি হচ্ছে। তিনি বলেন, টাংগুয়ার হাওর একটি সংরক্ষিত এলাকা। এখানে এসব একদম অনুচিত। হাওর ব্যবস্থাপনায় ত্রুটির কারণেই এটা হচ্ছে বলে জানান তিনি। তিনি আরো বলেন, এখনই মহিষগুলোকে হাওর থেকে না তাড়ালে আগামি বছর বিভিন্ন এলাকা থেকে মহিষ এসে হাওরটির কান্দাকে মহিষচারণ ভুমিতে পরিণত করবে।
টাঙ্গুয়ার হাওর সংরক্ষণে নিয়োজিত জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি ও আইইউসিএনের থিম্যাটিক কো অর্ডিনেটর ওয়াহিদুজ্জামান বলে, এই মওসুমে সাধারণত টাঙ্গুয়ার হাওরপাড়ের কিছু লোক দূর দূরান্ত থেকে মহিষ, গরুর পাল নিয়ে আসে। যখন হাওররক্ষণাবেক্ষণের প্রকল্প ছিল তখন আমরা কমিউনিটির লোকদের দায়িত্ব দিয়ে সংশ্লিষ্টদের এসব থেকে বিরত রাখতাম। এখন যেহেতু প্রকল্প নেই তাই কমিউনিটির লোকদের কাজে লাগানো যাচ্ছেনা। তিনি বলে, টাঙ্গুয়ার হাওরের কান্দা-জাঙ্গালে মহিষ চারণ খুবই ক্ষতিকর।
তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমি প্রথম শুনলাম। এ বিষয়ে ঁেখাজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
তাহিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, হাওরের কান্দা কোনমতেই মহিষের চারণভূমিতে পরিণত করা উচিত নয়। কারণ এই এলাকা সংরক্ষিত। কিভাবে প্রশাসনের সামনে এটা হচ্ছে আমাদের বোধগম্য নয়।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!