1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:২০ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
ভারতের দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে ৮৮ আসনে ভোটগ্রহণ শুরু প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে :প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার দেশের যে যে বিভাগ গুলোতে টানা ৩ দিন ঝড়বৃষ্টি হতে পাড়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ঘুড়তে গিয়ে এক পর্যটকের মৃত্যু রোববার থেকে খোলা হতে পাড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে যা জানাল মন্ত্রণালয় সিলেটের মাঠে ভারতকে হারাতে প্রস্তুত বাঘিনীরা মে মাসের প্রথম সপ্তাহে অতি বৃষ্টিপাতে সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যার শঙ্কা ভাষাসৈনিক ও জাতীয় নেতা সামাদ আজাদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ আজ থেকে সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্চ ভর্তি পরীক্ষা শুরু পৃথিবীকে গুরুত্ব দিয়ে এডিবির সেফগার্ড পলিসি সংশোধনের দাবিতে সুনামগঞ্জে অভিনব কর্মসূচী

আমার ছাত্রজীবনের এডভেঞ্চারের নায়ক মজিদ ভাই।। শাহরিয়ার বিপ্লব

  • আপডেট টাইম :: রবিবার, ২১ এপ্রিল, ২০১৯, ১২.৪৪ পিএম
  • ২৯০ বার পড়া হয়েছে

সমরেশ পড়ে একসময় আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনৈতিক দলের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে গিয়েছিলাম।
সমাজ পরিবর্তনের স্বপ্নে আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনৈতিক দলের কর্মীরা তখন ছিল আমার কাছে রোমান্টিক কবির মতো।
এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় আমরা যখন বিভিন্ন বাসাবাড়িতে লুকিয়ে থাকতাম তখন নিজেদেরকে নকশাল নকশাল ভাবতাম।
এইসময় একবার শহর থেকে পালিয়ে টেংরা টিলায় চলে গেছি। চার/পাঁচ দিন বিভিন্ন জায়গায় থেকে আমার এই জায়গাটার প্রতি ভালোলাগা জন্মে যায়।
এমন সময় আতিক নামের বন্ধুর বাড়ীতে গিয়ে ভয় পেয়ে যাই। বাড়ীতে খেতে বসে শুনি জাতীয় পার্টির নেতা আসবেন ওদের বাড়ীতে। আমরা খাওয়াতে থাকা অবস্থায়ই তিনি এলেন। উনি সম্ভবত তখন জাতীয় পার্টির সেক্রেটারি। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ডাঃরহিম সাব সভাপতি।
উনি বাড়ীতে আসার সাথে সাথেই আমার গলায় ভাত আটকে যায়। ভয়ে হাত পা ঠান্ডা। এই বুঝি পুলিশ এসে নিয়ে যায়।
পরে দেখলাম উনিও আমাদের সাথে খেলেন। আমার পারিবারিক পরিচয় পেয়ে আমাকে বুঝালেন। আগে লেখাপড়া শেষ করো তারপর রাজনীতি। রাতে অনেক গল্প। উনিও যে আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতির সৃষ্টি সেই গল্প করতে লাগলেন। যেনো শেষ নেই। মুগ্ধ হচ্ছিলাম। কিন্তু মিলাতে পারছিলাম না। সারারাত উনি গল্প করলেন উনার আন্ডারগ্রাউন্ড জীবনের কিছু কাহিনি শুনে লোম শিহরিত হয়ে যাচ্ছিল।
আমি তন্ময় হয়ে শুনি। কি এডভেঞ্চার!
ছাত্রজীবনের সেই এডভেঞ্চারের নায়ক সমরেশের নকশালবাড়ীর যেন অনিমেশকেই দেখছিলাম জাতীয় পার্টির ভয় পাওয়া নেতার গল্প শুনে।
এই নেতাই মজিদ ভাই।
পরবর্তীতে জাতীয় পার্টির সুদিনে উনাকে আমি ক্ষমতার কাছাকাছি দেখিনি। শুনিওনি। কারন জাতীয় পার্টির সুদিন মানে আমাদের দুর্দিন।
এরশাদ পতনের পরে সুনামগঞ্জের দুই বিপ্লবী নেতাই এমপি হলেন। একজন নজির ভাই অন্যজন মজিদ ভাই। নজির ভাই হলেন কমিউনিস্ট পার্টি থেকে আর মজিদ ভাই হলেন সদ্য পতিত এরশাদের দল জাতীয় পার্টি থেকে।
নজির ভাই আমাদের আসনে মনোনয়ন পাওয়ায় আমরা যারা একটু বাম ঘেঁসা ছাত্রলীগের কর্মীরা তারা খুশী হয়েছিলাম। বিশেষ করে আমি।
কারন জাতীয় ছাত্রলীগের সেক্রেটারী হওয়ার পর থেকেই আমার বই পড়ার অগ্রহ বেড়ে যায়। প্রতি রাতে প্রিপারেশন নিতাম পরের দিনের কার্যক্রমের জন্যে। রীতিমতো এসাইনমেন্ট রেডি করতাম পরের দিনের সভায় কি বলবো। ছাত্র ইউনিয়নের নেতা কাজলদার সাথে কমিউনিস্ট পার্টির সব কার্যক্রমে যুক্ত থাকতাম গোপনে। নজীর ভাইয়ের কাছে ক্লাশ করতাম প্রায়ই। মুক্তির দিগন্ত, একতা, পত্রিকার গ্রাহক হয়ে গেছিলাম। যে কারনে নজির ভাইয়ের ইলেকশনে ও ইলেকশনের পরে ব্যক্তিগত ঘনিষ্ঠতা বেড়ে যায়।
নাখাল পাড়া এমপি হোস্টেলে নজির ভাইয়ের পাশের রুমে থাকতেন মজিদ ভাই। আমি যতোবার নজির ভাইয়ের রুমে গেছি ততোবার উনার রুমেই খেয়েছি। ভাবির পাঙ্গাশ মাছের রান্না এখনো জিভে লেগে আছে। আমি তাঁকে ভাই ডাকলেও তিনি আমাকে শালা বলে ডাকতেন। কেন ডাকতেন জানি না।
হিমেলও আমাকে মামা বলেই ডাকে।
পিপি থাকা অবস্থায় উনার বাসায় গিয়েছি কয়েকবার। আত্ববিশ্বাসে বলিয়ান ভরাট কন্ঠ। দাপুটে উক্তি। কিন্তু এতো আদুরে সম্বোধন। নিরহংকার ব্যক্তিত্ব। খুব কম মানুষেই আছে প্রথিবীতে।
গতকাল তাঁর মৃত্যু সংবাদে যতটুকু ব্যথিত হয়েছি তার চেয়ে বেশী ইমোশনাল হয়েছি। ফিরে গেছিলাম সেই ছাত্রজীবনের টেংরাটিলায়। গত রাতে ভরা জোছনা ছিল।
টেংরাটিলার স্বৈরাচারের হুলিয়া নিয়ে পালিয়ে থাকা সেই শীতের রাতেও ছিল ভরা পুর্নীমা। পুর্নীমার রাতে আতিকের সাথে হঠাৎ পরিচয় হওয়া গোপন রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসা ক্ষমতার রাজনীতির একজন সংগঠকের সাথে।
নেত্রকোনায় কবিকুঞ্জের আড্ডায় গিয়ে কোনও ভাবেই মন বসাতে পারিনি। তারুন্যে আমার দেখা একজন বিপ্লবী। আমার স্বপ্নের নকশালবাড়ীর নায়ক।
এই নায়কেরা ক্ষমতার রাজনীতি ভোগ করতে পারে না। মানায় না।
হয়তো কিংবা হয়তো না।
কবিকুঞ্জ থেকে উঠে আসি। রাস্তায় চলছে আমাদের মাইক্রোবাস। আকাশের নাতাল চাঁদ। আমি ভাবছি।
একজন বিপ্লবীর মৃত্যুতে চাঁদের কি কান্না।
আলোয় ভাসিয়ে দিচ্ছে জোছনা। মনের ঘরে উথাল পাতাল ঢেউ। ডাকছে সমাজ ডাকছে চাঁদ। ডাকছে রাতের পসর।
এই সমাজকে পসর দিতে হলে বিপ্লবীদের আসতেই হবে। কখনো কখনো মজিদ ভাইদের প্রথম জীবনের গল্প হয়েই।
তাই তিনি জাত পতনের পর যতই স্বৈরাচারের দলের এমপি হোন, আমার কাছে তিনি সর্বহারা মানুষের সনাজ পরিবর্তন আন্দোলবের একজন যোদ্ধা ছিলেন। আমি উনাকে কোনও দিন জাতীয় পার্টির নেতা ভাবতে পারিনি।
আপনি ভালো থাকুন মজিদ ভাই। আপনি আমাদের আলো হয়েই থাকুন।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!