1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
মঙ্গলবার, ০৭ মে ২০২৪, ০৮:২৭ অপরাহ্ন

সিলেট সীমান্তের বৃহত্তম উৎসব বারুণি ও শাহ আরেফিনের ওরস শুরু হচ্ছে কাল

  • আপডেট টাইম :: মঙ্গলবার, ১৩ মার্চ, ২০১৮, ৪.১৫ পিএম
  • ৬১১ বার পড়া হয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি::
প্রাচীন বাংলার প্রথম রাজধানী লাউড় রাজ্য তাহিরপুরের গঙারূপী যাদুকাটা নদীতে পূণ্য¯œান সম্পন্ন করতে জড়ো হয়েছেন দেশ বিদেশের লাখো পূর্ণার্থী। একই এলাকায় লাউড়েরগড় সংলগ্ন শাহ আরেফিনের মোকামকে ঘিরেও মুসলমান সম্প্রদায়ের লাখো ভক্ত পূণ্যের আশায় উপস্থিত হয়েছেন। একই সময়ে হিন্দু-মুসলমানের মিলনমেলায় উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে তাহিরপুর সীমান্তে।
বুধবার সকাল থেকে গঙ্গারূপী যাদুকাটা নদীতে পূণ্য¯œান শুরু হবে। পরদিন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পুজা অর্চনার মধ্য দিয়ে বার্ষিক ¯œানযাত্রা উৎসবের সমাপ্তি হবে। এ বছর ¯œানযাত্রার মুখ্য সময় নির্ধারিত হয়েছে ১৪ মার্চ ৩০ ফাল্গুন বুধবার দিন বেলা ৩ টা ৪৫ মিনিট ১৭ সেকেন্ড থেকে ১৫ মার্চ ১ চৈত্র পরদিন বৃহস্পতিবার বিকের ৫ টা ১৪ মিনিট ৫০ সেকেন্ড পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যেই ¯œান করলে পূণ্য¯œান হবে বলে পূজার্থীরা জানিয়েছেন। তবে সকলেই শুরুতেই ¯œান সম্পন্ন করেন।
রাজারগাঁও শ্রী ¤্রী অদ্বৈত প্রভুর জন্মধাম পরিচালনা কমিটির সভাপতি করুণা সিন্ধু চৌধুরী বাবুল বলেন, পূণ্য¯œানে আসা ভক্তবৃদ্ধ দর্শনার্থী সহ দুইদিনে প্রায় ৫ লাখ মানুষের মধ্যে মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হবে। তাদের যাতায়াত নির্বিগ্ন করতে ইতোমধ্যে প্রশাসন ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে। আমরা পথে পথে মোবাইল টিমও রেখেছি। এবারও সুষ্ঠুভাবে ¯œানযাত্রা শেষ হবে। তিনি বলেন, সনাতন ধর্মালম্বীদের নিকট সপ্তগঙ্গার মিলন কেন্দ্র খ্যাত পণতীর্থে ¯œানযাত্রা উৎসবকে ঘিরে রাজারগাঁও আঁখড়াবাড়ি ও জাদুকাঁটা নদীর চরে মঙ্গলবার থেকে বসেছে হরেক রকম খেলনা, খাদ্য সামগ্রী ও নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের অস্থায়ী হাজারো দোকান পাঠ। এই দোকানগুলোই শাহ আরেফিনের মোকামে চলে যাবে। তিনি বলেন, গঙ্গা¯œান ও শাহ আরেফিনের ওরস আমাদের মধ্যে মিলনের বার্তা নিয়ে আসে। আমরা দুই ধর্মের লোকজন আনন্দে মাতি। এই সম্প্রীতি ধরে রাখতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি। সৎসঙ্গ প্রার্থনা কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. এনসি রায় নান্টু ও জন্ম মহোৎসব উদযাপন কমিটির সভাপতি গণেশ তালুকদার জানান, ¯œানযত্রা উৎসবে এবার প্রায় ২ লাখ ভক্তবৃন্দের আগমণ ঘটবে বলে আমরা আশাবাদী।
উল্লেখ্য প্রতি বছর চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে বৃহত্তর সিলেট বিভাগে সীমান্তের বড় উৎসব হয় এখানে। বারুণি ¯œানে অংশ নিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দুর্গম যোগাযোগ ব্যবস্থা মাড়িয়ে লাখ লাখ পূণ্যার্থী এখন বারুণি ¯œানের সূচনাকারী শ্রী অদ্বৈত আচার্য্য’র জন্মধান তাহিরপুরের নবগ্রাম (রাজার গাও) এ অবস্থান করেন। ১৫১৬ খ্রিস্টাব্দ থেকে এই তীর্থরূপি গঙা¯œান অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলে ইতিহাস থেকে জানা যায়। জনশ্রতি রয়েছে পঞ্চদশ শতাব্দীতে লাউড়ের রাজা দিব্যসিংহের মন্ত্রী ছিলেন শাস্ত্রবিদ ও সভাপ-িত অদ্বৈত আচার্য্যে পিতা কুবেরাচার্য্য। তার আর তার স্ত্রী নাভাদেবির ৬টি সন্তান মারা যাওয়ায় রাজ্য ছেড়ে চলে যান তিনি। প্রায় ৫০০ বছর আগে শুরু হওয়া ১৫১৬ খ্রিস্টাব্দে এই পণতীর্থের সূচনা করেন শ্রীমান অদ্বৈত আচার্য্য প্রভু। মানুষ তাঁকে গৌরআনা ঠাকুর বলে জানে। তার স্বীকৃত পা-িত্যের কারণে রাজা দিব্যসিং বিশেষ অনুরোধ করে তাকে ফিরিয়ে আনেন। ১৪৩৫ খ্রিস্টাবে জন্ম নেন কমলের মতো সুন্দর এক পুত্র-যার নাম রাখেন কমলাক্ষ বা অদ্বৈত আচার্য্য। মা নাভাদেবি স্বপ্নে দেখেন তার পুত্র শঙ্খচক্র গদাধরী মহাবিষ্ণু রূপী অদ্বৈতের দীপ্তিময় আভা মুখম-ল ও অঙ্গে চারদিক আলোকিত। তিনি তা প্রত্যক্ষ করে অজান্তেই আনত হয়ে চরণোদন প্রার্থনা করে পৃথিবীর পবিত্র সপ্তবারীর জলে অবগাহন করতে দেখেন। পরে তার ঘুম ভেঙ্গে গেলে চিন্তিত মাকে দেখে অদ্বৈত আচার্য্য স্বপ্নবিবরণ জানতে চান। ছেলের পীড়াপিড়িতে তার স্বপ্ন বৃত্তান্ত খুলে বলেন মা। মহাপ্রভু খ্যাত অদ্বৈত আচার্য্য মায়ের স্বপ্নপূরণ ও উদ্বেগ দূর করার জন্য ‘সপ্ততীর্থ হানি হেথায় করিব স্থাপন’ বলে অলৌকিক ক্ষমতার মাধ্যমে পৃথিবীর সপ্তবারীর জল একত্রিত করেন। পরে মা নাভাদেবি সেই পবিত্র জলে ¯œান সম্পন্ন করেন। এরপর থেকেই এই তীর্থের নাম হয় পণতীর্থ বা পণাতীর্থ। এসময় তীর্থগণ পণ করে গিয়েছেন যতদিন পৃথিবী থাকবে ততদিন এই মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথিতে এখানে পূণ্য¯œান উপলক্ষে লাখো পুণ্যার্থীর আগমন ঘটবে।
এদিকে একই সময়ে যাদুকাটা তীরে শাহ আরেফিনের মাজারে ভারত সীমান্তের ঘোমাঘাটের নিচে শুরু হবে শাহ আরেফিনের ওরস। হযরত শাহ আরেফিন (রহ.) লঙ্গর খানার প্রতিষ্ঠাতা ও খাদেম বীর মুক্তিযোদ্ধা (অব. শিক্ষক) হাজি মো. নুরুল আমিন জানান, ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের পাদদেশে বাংলাদেশ অভ্যন্তরে সাড়ে ৭’শ বছরেরও অধিক সময় ধরে চলে আসা সিলেটের ওলিকুল শিরোমণি হযরত শাহ জালাল (রহ.)’র ৩৬০ আউলিয়ার অন্যতম সঙ্গী হযরত শাহ আরেফিন (রহ.) আস্থানায় বার্ষিক ওরস উদযাপন প্রতি বছর এই সময়ে অনুষ্ঠিত হয়। ১৫ মার্চ বৃহস্পতিবার বাদ ফজর মিলাদ মাহফিলের মাধ্যমে শুরু হয়ে ১৭ মার্চ রোববার বাদ ফজর আখেরী মোনাজাতের মাধ্যমে সমাপ্ত হবে। এরই মধ্যে ওরসে যোগ দিতে হাজারো কাফেলাধারী ভক্তরা সমবেত হয়েছেন।
উৎবসটি বরাবরের মতো শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে স্থানীয় প্রশাসন বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!