সংগ্রাম অফিসে ভাংচুরের নিউজ শেয়ার করার পর সেখানে শতাধিক কমেন্ট পড়েছে। এই রাতে বাসায় ফিরে সেই কমেন্ট দেখে রাগে-দুঃখে আমার মাথার চুল ছিড়তে ইচ্ছা করছে। এই রাগ দুঃখ আমার নিজের উপর। জনগনের একটা বড় অংশ মনে করে যে আমি সুশীল লোক; বাক স্বাধীনতা, প্রেস ফ্রিডম এসবের উপর হামলা হলে আমার ইনিয়ে বিনিয়ে নাকি কান্না করে নিন্দা জানানো উচিত।
আমরা রাগটা এখানেই। গত কয়েক বছরে আমার এমন অধঃপতন হয়েছে যে কিছু মানুষ মনে করে আমি সুশীল তরুণ বুদ্ধিজীবি হয়ে গেছি, আমি এখন সুন্দর সুন্দর শব্দ চয়ন করে জাবর কাটব।
অথচ আমি এরকম না। আমরা এরকম না। আমরা অনলাইনের সেই ফার্স্ট জেনারেশন, যারা নাওয়া-খাওয়া-ঘুম বাদ দিয়ে চব্বিশ ঘন্টা বাংলা ব্লগ পাহারা দিয়েছি। ইমেল গ্রুপ খুলে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে একেবারে ঘড়ি ধরে ডিউটি করে জামাত-শিবিরের শুওরের পালদেরকে অনলাইনের প্রভাব বন্ধ করেছি।
এখন আইসা যদি কেউ কাদের মোল্লারে শহীদ বলার দুঃসাহস দেখায়, তাহলে তার ঐটা মুখ না। ঐটা বাক স্বাধীনতা না, ঐটা পায়ূ স্বাধীনতা। সেই স্বাধীনতাকে কেউ যদি ভরে দেয়, তাহলে আমি সুস্পষ্ট ভাষায়, গভীর আনন্দের সাথে হাততালি দেব। উল্লাস প্রকাশ করব।
অনেকের একটা ধারনা হতে পারে যে আমি বা আমার মতো অনেকেই বড় কুতুব হয়ে গেছি। আমাদেরকে টিভিতে ডাকে, সভা-সেমিনারে দেশ বিদেশে নেমন্তন্ন দিয়ে ডেকে নিয়ে যায়, সুতরাং এই লব্ধ সুশীল মোড়ককে প্যাচিয়ে প্যাচিয়ে আমি বেশ বড় একটা খোলস বানাব আর বাকি জীবন সেই মোড়ক রক্ষার চেষ্টা করব।
সরি টু সে, আমরা সেই চিজ না। কাদের মোল্লার পাকি সন্তানদের পায়ূ স্বাধীনতা বন্ধ করতে গিয়ে যদি আমাদের তথাকথিত ইমেজ ত্যানা ত্যানা হয়ে যায়, আমি তার থোড়াই পরোয়া করি। আমরা মুখোশের ভেতর বাঁচি না, ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তে ভেজা মাটিতে দাঁড়িয়ে রাজাকারের গুনগান যদি কেউ গায়, আর অন্যরা যদি সেখানে গিয়ে লাথি মেরে কোমর ভেঙ্গে দেয়, আমাদের মুখে তখন আনন্দ খেলা করে-এটুকু বলার সৎ সাহস আমার আছে।
আমরা সুশীল না বস। আমাদেরকে সুশীল মনে করে থাকলে সেটা আপনার ভ্রান্ত ধারনা। আমরা রাস্তাঘাটে জামাত শিবিরের সাথে মুখোমুখি লড়াই করা প্রজন্ম। আমরা রগ কাটা বড় ভাইকে রিক্সায় করে নিয়ে যাচ্ছি, রক্তে কোল ভেসে রিক্সার পাদানি গড়িয়ে রাস্তায় রক্ত পড়ছে, সেই স্মৃতি বয়ে নিয়ে যাওয়া প্রজন্ম।
কাদের মোল্লারে শহীদ বলা হলে তাদেরকে ভরে দেয়া হবে।
আমি আরিফ জেবতিক। রাজাকারের পক্ষে থাকার সুশীলতাকে আমি গুষ্টি কিলাই।
(লেখকের ফেইসবুক টাইম লাইন থেকে নেওয়া)