1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১২:০২ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
এমপি মানিকের ছোট ভাইয়ের ইন্তেকাল বৃহস্পতিবার জানাজা আজ মহান মে দিবস ধর্মপাশায় ইউপি সদস্যের শূন্য পদে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে কণ্ঠশিল্পী পাগল হাসানের ঘর নির্মাণ করে দেবেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান বেনজিকে গ্রে ফ তা রে দাবীতে সিলেটে দু র্নী তি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরামে গণজমায়েত ও মিছিল সিলেটে যুবদল সভাপতি টুকুকে কারাগারে প্রেরণের প্র তি বা দে বি ক্ষো ভ মিছিল হবিগঞ্জে ট্রাক-পিকআপ মুখোমুখি সং ঘ র্ষে প্রাণ গেল ২ জনের লন্ডনে চুপিসারে ‘দ্বিতীয় প্রাক-বিয়ের অনুষ্ঠানে’ অনন্ত-রাধিকা! আবাহনীর জয়কে থামিয়ে দিতে মাঠে নেমেছেন সাকিব ঝিনাইদহে উপনির্বাচনে প্রার্থী হচ্ছেন হিরো আলম

খসরু ভাই, আপনাকে বিস্মৃত হতে দেবনা ।। শামস শামীম

  • আপডেট টাইম :: বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১, ৭.০৪ পিএম
  • ২১৬ বার পড়া হয়েছে

বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলুল মজিদ চৌধুরী আমাদের থেকে এত চটজলদি স্মৃতি হয়ে যাবেন ভাবনায়ও ছিলনা। তবে তাঁকে আমরা বিস্মৃত হতে দেবনা এটা বড় গলায়ই বলতে পারি। কারণ জাতিরাষ্ট্রের জন্মযুদ্ধের স্থানীয় আখ্যান তিনি রচনা করে আমাদেরকে চিরকালের জন্য ঋণী করে গেছেন। তাঁর এই রচনাই আমাদের, মানে যারা মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে টুককাট কাজ করি তাদের প্রাথমিক দাঁড়ানোর ভিত্তিভূমি। এর উপর দাঁড়িয়েই আমরা এখন ইতিহাসের পাঠ নিচ্ছি। তাঁর এই সূত্রগ্রন্থ থেকেই আরো সবিস্তার তথ্য ও তত্ত্ব জানানোর চেষ্টা করছি। তিনি শুধু জন্মযুদ্ধে জড়িতই ছিলেননা, স্বাধীনতা পরবর্তী জাতি পুনর্গঠনেও কাজ করেছেন। শিক্ষা, সংস্কৃতি, আইন পেশা, সাংবাদিকতার মাধ্যমে তিনি সুনামগঞ্জে বহুমুখি কাজ করে অমর হয়ে আছেন, থাকবেন। হাওরের দাবি নিয়ে গঠিত হাওর বাঁচাও আন্দোলনের প্রাণ রসতো ছিলেন তিনিই!
আমার রচিত ‘১৯৭১: চোরের গাঁওয়ের অশ্রুত আখ্যান’ ২০১৭ সনে বেরুনোর পর উনার জন্য একটি সৌজন্য সংখ্যা রেখেছিলাম। কিন্তু আমি দেবার আগেই তিনি সিলেট বইমেলা থেকে বইটি সংগ্রহ করে ফোন দিয়ে অভিনন্দন জানান এবং বিরল ধারণা নিয়ে বই লেখায় প্রশংসা করেন। আমি প্রাণিত হই। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে রিপোর্ট ফিচার লিখার কারণে এসংক্রান্ত কোন জটিলতা দেখা দিলে উনার শরণাপন্ন হতাম। তিনি ধারণা পরিষ্কার করে দিতেন। মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত কোন অনিয়ম হলে বিভিন্ন কাগজ, তথ্য, তত্ত্ব হাতে ধরিয়ে দিয়ে রিপোর্ট করার কথা বলতেন। গত জানুয়ারি মাসে দোয়ারাবাজারের এক শহিদ যোদ্ধার ভাতা সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিলে বেশ কিছু কাগজ দিয়ে রিপোর্ট করতে বলেছিলেন। ব্যস্ততার জন্য আর করা হয়নি। তাই এখন অপরাধবোধে ভোগছি।
আশির দশকে উনার সম্পাদনায় ‘সাপ্তাহিক সুনাম’ নামের একটি পত্রিকা বেরিয়েছিল। আব্দুল হাইয়ের ‘সাপ্তাহিক সূর্যের দেশ’র পর বলা যায় তাঁর এই পত্রিকাটিই ছিল বিষয়-বৈচিত্রে সম্পাদনায় অনন্য। পুরাতন নিয়ে ঘাঁটাঘাটির কারণে পুরো এক বছরের বাঁধাই করা ‘সুনাম’ পত্রিকা তিনি আমাকে দিয়ে দিয়েছিলেন। এখনো আমার সংরক্ষণে আছে সুনামের ভা-ার। সুনামগঞ্জের স্থানীয় ইতিহাস, সংস্কৃতি, রাজনীতি, শিক্ষাসহ সার্বিক ব্যবস্থাপনার একটি উজ্জ্বল স্মারক হতে পারে এই সংখ্যাগুলো। যা ভবিষ্যত গবেষকদের নির্ঘাত কাজে লাগবে।
গত তিন বছর আগে ৫নম্বর সেক্টরের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আমি কাজ শুরু করি। শুরুতেই খসরু ভাইর শরণাপন্ন হই। তাঁর কাছ থেকে সাবসেক্টরগুলোর ধারণা আরো স্পষ্ট করি। উনার সঙ্গে আলাপ করে আরো ঋদ্ধ হই। এই বইটির কাজ গত মাসে শেষ হয়েছে। আসছে মার্চেই আমাদের বন্ধু প্রকাশক রাজীব চৌধুরীর ‘চৈতন্য’ থেকে এটি বেরুবে। আমার আফসোস হচ্ছে খসরু ভাইর হাতে বইটি ধরিয়ে দিতে পারবনা।
মহান মুুক্তিযুদ্ধের চেতনা নতুন প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে তিনি মুক্তিযুদ্ধ চর্চা ও গবেষণা কেন্দ্র করেছিলেন। এই কেন্দ্র থেকে কয়েকটি প্রকাশনা বেরিয়েছে। যার সঙ্গে আমি ওতপ্রোত ছিলাম। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ভাষাসৈনিক ডা. হারিছ উদ্দিন স্মারকগ্রন্থের জন্য আমরা তাঁর নেতৃত্বে কাজ শুরু করেছিলাম। তিনি ডা. হারিছ উদ্দিনের শোকসভার পুরো সিডি আমাকে ধরিয়ে দিয়ে এটা থেকে ডকুমেন্টেশন করার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেটা এখনো আলোর মুখ দেখেনি।
খসরু ভাইসহ কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের উদ্যোগে ‘গৌরবের মুক্তিযুদ্ধ’ নামে একটি দাতব্য সংগঠন করেছেন। উনারা রাষ্ট্র প্রদত্ত ভাতা না নিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে, তাঁদের সন্তানদের পড়ালেখাসহ ভালো কাজে ব্যয় করছেন। যুদ্ধের স্মৃতি-স্মারক করছেন। ২০১৯ সালে গৌরবের মুক্তিযুদ্ধ থেকে প্রদত্ত সম্মাননা অনুষ্ঠানে সম্মাননা প্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ বিশিষ্টজনদের উপর ডকুমেন্টশনের জন্য আমাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আমি তাঁর সঙ্গে কথা বলেই লেখাগুলো তৈরি করেছিলাম এবং অনুষ্ঠানে প্রকাশিত ছোট ফোল্ডারে এগুলো ছাপা হয়েছিল। সুনামগঞ্জের ‘সোনালি সকাল’ প্রবীণ ও প্রৌঢ়দের একটি হাঁটার সংগঠন। এটারও অন্যতম প্রাণভোমরা তিনি। এই সংগঠনটি নিয়ে আমি ও খলিল ভাই ফিচার করার কারণে সংগঠনের সবার কাছে আমাদের গ্রহণযোগ্য করেছিলেন তিনি। ২ বছর আগে আমাদের দু’জনকে বিরল সম্মাননাও দিয়েছিলো সংগঠনটি। সর্বশেষ গতমাসে সংগঠনের পক্ষ থেকে মধ্যাহ্নভোজেও দেশি খাবারের মাধ্যমে আপ্যায়িত হয়েছিলাম। এভাবে বারবার উনার উদার ও প্রশ্রয়মাখা ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছি। তাই স্মৃতির ঝাঁপি থেকে অনেক স্মৃতি জমা হয়ে আছে।
খসরু ভাই, আপনার রক্তাক্ত একাত্তরের প্রান্তরে আমরা নির্ভয়ে, মাথা উঁচু করে আমৃত্যু চলতে চাই। আপনি আমাদের মন ও মননে চিরকাল প্রেরণার অগ্নিমশাল হয়েই বাঁচবেন। আপনাকে বিস্মৃত হতে দেবনা আমরা। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম বীর যোদ্ধার আখ্যান গেয়ে বেড়াব আমরা।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!