1. haornews@gmail.com : admin :
  2. editor@haor24.net : Haor 24 : Haor 24
সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম ::
ট্রাম্পের বিচার নিয়ে বিভক্ত জানিয়েছেন মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট! বান্দরবানের বাকলাইতে পাওয়া গেল দুই ‘কেএনএফ’ সদস্যের মরদেহ সড়ক দুর্ঘটনায় সিলেটে নিহত ৩ ভারতের দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে ৮৮ আসনে ভোটগ্রহণ শুরু প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকবে :প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার দেশের যে যে বিভাগ গুলোতে টানা ৩ দিন ঝড়বৃষ্টি হতে পাড়ে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে ঘুড়তে গিয়ে এক পর্যটকের মৃত্যু রোববার থেকে খোলা হতে পাড়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এ বিষয়ে যা জানাল মন্ত্রণালয় সিলেটের মাঠে ভারতকে হারাতে প্রস্তুত বাঘিনীরা মে মাসের প্রথম সপ্তাহে অতি বৃষ্টিপাতে সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যার শঙ্কা

সোহালা প্রাথমিক বিদ্যালয়: শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষের তীব্র সংকটে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণিতে পাঠদান বিঘ্নিত

  • আপডেট টাইম :: মঙ্গলবার, ৭ আগস্ট, ২০১৮, ১১.৫৬ এএম
  • ৪০৬ বার পড়া হয়েছে

সাজ্জাদ হোসেন শাহ্ : ভারতের মেঘালয় পাহাড় থেকে নেমে আসা যাদুকাট নদী রুপ ও সম্পদের কারণে দেশজুড়ে পরিচিত। ৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নদীটি তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নকে দ্বিখন্ডিত করে উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে প্রবাহিত হয়েছে। এই নদীর পশ্চিমপাড়ে অবস্থিত তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট ইউনিয়নের সোহালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী সংখ্যা ৯ শতাধিক। বিদ্যালয়টি নদী তীরবর্তী কয়েকটি গ্রামের শিশুদের প্রাতিষ্টানিক শিক্ষালাভের সুযোগ প্রসারিত করে দিয়েছে। প্রাক- প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান চালু থাকা বিদ্যালয়টির ফলাফল, শ্রেণিপাঠদান ও সহশিক্ষা কার্যক্রম বিবেচনায় উপজেলার অন্যতম বিদ্যালয় এটি। আর পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পাঠদানের সুযোগ সৃষ্টিকারী এ বিদ্যালয়টি যাদুকাটা তীরের শ্রেষ্ট বিদ্যালয় হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে শিক্ষক, বেঞ্চ ও শ্রেণিকক্ষের তীব্র সংকটে বিদ্যালয়ের পাঠদান চরমভাবে বিঘিœত হচ্ছে। যাদুকাটা নদীর ভাঙ্গনের চরম হুমকিতেও পড়েছে বিদ্যালয় আঙ্গিনা। বিদ্যালয়টির সার্বিক সমস্যা সমাধানে এলাকাবাসী ও শিক্ষানুরাগীরা কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী করেছেন। তাছাড়া প্রাথমিকের বাইওে মাধ্যমিক পর্যায়ের ৬ষ্ট, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণিতে এখন পাঠদানই অসম্ভব হয়ে ওঠছে।
উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় সুত্র জানায়, বিদ্যালয়টির প্রাক- প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদানের জন্য সৃষ্ট পদ রয়েছে ৯টি। বর্তমানে কর্মরত আছেন পাঁচজন। ২০১৩ সালে বিদ্যালয়টিতে ষষ্ঠ শ্রেণি চালু করা হয়। বর্তমানে ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রছাত্রী আছে ২শ জনেরও বেশি। এজন্য ৬জন শিক্ষক দেওয়ার কথা থাকলেও আজ পর্যন্ত একজন শিক্ষকও দেওয়া হয়নি।
বিদ্যালয় থেকে জানা যায়, দুই শিফটে পরিচালিত এই বিদ্যালয়ে প্রতি শিফটে ৯টি ক্লাস চলে। বর্তমানে একজন শিক্ষককে একই সাথে দুইটি শ্রেণিকক্ষে ক্লাস নিতে হচ্ছে। এতে করে পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সোহালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে মাধ্যমিক স্থরের কোন প্রতিষ্টান নেই। এমনকি ৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে কোন প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্টানও নেই। এমন অবস্থায় ওই এলাকার শিশুদের প্রাতিষ্টানিক শিক্ষালাভের ভরসাস্থল এই বিদ্যালয়টি।
অষ্টম শ্রেণির ইশরাত জাহান ইমু, ফারিয়া সুলতানা জিনাত ও রুবিনা আক্তার বলেন, বিদ্যালয়টিতে অষ্টম শ্রেণি না থাকলে আমাদেরকে ছয় কিলোমিটার দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে অন্য বিদ্যালয়ে পড়তে যেতে হয়।
বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী পাশ^বর্তী বিশম্ভরপুর উপজেলার বাসিন্দা রাহিমা আক্তার ও শোভা আক্তার অপি বলেন, যাদুকাটা নদী পাড়ি দিয়ে তৃতীয় শ্রেণি থেকেই এই বিদ্যালযে আমরা পড়তে আসি। তবে শ্রেণি কক্ষ ভাঙ্গা থাকায় বৃষ্টি হলেই ভিজতে হয় আমাদের।
সরেজমিনে মঙ্গলবার সকালে বিদ্যালয়টিতে গিয়ে দেখা যায়, বারান্দাহীন ভাঙ্গা ভেড়ার টিনের চালা ঘরে বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক সাহাবুদ্দিন একই সাথে ষষ্ট ও সপ্তম শ্রেণীর দুইটি ক্লাস নিচ্ছেন। ভবনের বাইরে দুই কক্ষের মাঝে দাঁড়িয়ে ওই দুই শ্রেণির ছাত্রছাত্রীরে পাঠদানের চেষ্টা করছেন। তিনি বলেন, শিক্ষক সংকটের কারণে এর চেয়ে আর ভাল কিছু আর পারছিনা।
এই অবস্থায় বিদ্যালয়টির স্বাভাবিক পাঠদান চালু রাখতে এই মুহুর্তে পাঁচজন শিক্ষক প্রেষণে দেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক। তিনি আরও জানান, ভাঙ্গনের হুমকিতে থাকা বিদ্যালয়টির ভাঙ্গনরোধে এই মুহুর্তে ৫ লাখ টাকার উদ্যোগ নিলেই বিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও গ্রামের একাংশ ভাঙ্গন থেকে সহজেই রক্ষা পাবে।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি হাবিজ উদ্দিন বলেন, বাড়ির নিকটবর্তী বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ গ্রহণের সুযোগ পেয়ে ছাত্রছাত্রী ও আমরা অভিভাবকরা খুব আনন্দিত। কিন্তু শিক্ষক ও অবকাঠামোর তীব্র সংকটের কারণে বিদ্যালয়টির কাছে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি গলার কাঁটা হয়ে ওঠেছে।
সংশ্লিষ্ট বাদাঘাট ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রাখাব উদ্দিন বলেন, বিদ্যালয়টিতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদানের সুযোগ থাকায় ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামের শিশুদের শিক্ষালাভের সুযোগ সুগম হয়েছে। এছাড়া পার্শ^বর্তী বিশম্ভরপুর উপজেলার দুইটি গ্রামের ছাত্রছাত্রীরা যাদুকাটা নদী পারি দিয়ে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষা গ্রহণ করতে আসে। তিনি আরও বলেন, সোহালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি যাদুকাটা তীরের অন্যতম শ্রেষ্ট বিদ্যালয়। কিন্তু শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষ সংকটে এর পাঠদান চরমভাবে বিঘœ ঘটছে। ইউনিয়ন পরিষদ ও এলাকাবাসীর জোর দাবি বিদ্যালয়টির শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষের সংকট দুর করা। আর যাদুকাটা নদীর ভাঙ্গনের হুমকি থেকে বিদ্যালয়টিকে মুক্ত করা।
প্রধান শিক্ষক গোলাম সরোয়ার লিটন বলেন, শিক্ষক সংকট, ছাত্রছাত্রীদের বসার বেঞ্চের অভাব, নতুন একাডেমিক ভবন নির্মাণ ও ভাঙ্গনরোধে দ্রুত উদ্যোগ প্রয়োজন। টিনের ভাঙ্গা ঘরে বসার ব্যবস্থা দিয়েও সবার জন্য আসন ব্যবস্থা করা যাচ্ছেনা। এক শিফট এ ক্লাস চলে ৯টা। শিক্ষক আছেন ৫ জন। খুবই বিপাকে আছি আমরা।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবু সাঈদ বলেন, বিদ্যালয়টিতে ষষ্ট, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি পাঠদান চললেও এজন্য কোন শিক্ষক দেওয়া হয়নি। সম্প্রতি পদোন্নতি জনিত কারণে তিন জন শিক্ষক অন্যত্র চলে যাওয়ায় ও একজন শিক্ষকের বদলীর কারণে বিদ্যালয়টিতে তীব্র শিক্ষক সংকট দেখা দিয়েছে।

তিনি জানান, বিদ্যালয়টিতে দুইজন শিক্ষক প্রেষণে যোগদানের আদেশ হয়েছে। তাদের একজন ইতিমধ্যেই যোগদান করেছেন। এছাড়া আরো দুই জন শিক্ষক প্রেষণে দেয়ার জন্য প্রস্তাব জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাছে পাঠাবেন।
ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অবকাঠামো সংকট যত দ্রুত দুর হবে বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা তত বেশি উপকৃত হবে। ইউনিয়ন পরিষদ সামর্থ্য অনুযায়ী বিদ্যালয়টির জন্য কাজ করবে। নদীর ভাঙ্গন থেকে বিদ্যালয়টি রক্ষায় পানি উন্নয়নবোর্ডের এখনই উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা পঞ্চানন বালা বলেন, বিদ্যালয়টির শিক্ষক সংকটের বিষয়ে আমি জানি। ইতিমধ্যেই দুইজন শিক্ষক প্রেষণে দেয়ার অফিস আদেশ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা শিক্ষা কার্যালয় প্রস্তাব পাঠালে আরো দুইজন শিক্ষক প্রেষণে দেয়ার আদেশ দেওয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর
themesbazarhaor24net
© All rights reserved © 2019-2024 haor24.net
Theme Download From ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!